ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়তে খান প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৪০

একটি ছোট্ট ক্ষতের সংক্রমণের শুরু থেকে ধীরে ধীরে শরীরটাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ক্ষান্ত হয় না। লক্ষ লক্ষ প্রাণ কেড়ে নেয়া এই ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচতে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল অ্যান্টিবায়োটিক। এটি খাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সুস্থ স্বাভাবিক হওয়া যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ব্যাকটেরিয়া প্রবল মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা রাখে। এমনকি অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতিতেও নিজেকে মানিয়ে নেয়। ফলে যে অ্যান্টিবায়োটিক রোগ সারিয়ে দিতো এখন সেটি রোগ তো সারায় না বরং শরীরে রোগের বাসা বাধায়।

বলা হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া এরকম অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগুতে থাকলে বিলীন হয়ে যাবে পৃথিবীর প্রাণ। ফলে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রাকৃতিক উপায়েই সমাধান বের করতে হবে। এর জন্য একেবারেই ওষুধপত্রের উপর ভরসা না করে শরীরে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে বাঁচতে খাবার তালিকায় যোগ করুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকযুক্ত খাবার।

রসুন শত শত বছর ধরে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয় রসুন। এই সুপার ফুডে অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। চূর্ণ রসুনকে হালকা রান্না করা বা কাঁচা ব্যবহার করা যায়। এটিতে থাকা এলিসিন নামক যৌগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

আদা প্রতিদিন খাওয়ার মতো একটা দুর্দান্ত মসলা হলো আদা। দীর্ঘকাল ধরে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে খাদ্যজনিত জীবাণুগুলির বিরুদ্ধে। এছাড়াও এর সক্রিয় উপাদান ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে এবং হজমের সমস্যা দূর করার জন্য প্রমাণিত হয়েছে। তাঈ খাবারের সাথে একটুখানি আদা যোগ করে নিলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে শতগুন।

বাঁধাকপি বাঁধাকপির সালফার যৌগগুলি গ্যাস সৃষ্টি করে এমনকি ক্ষতিকারক কোষগুলি ধ্বংস করার ক্ষেত্রেও দুর্দান্ত। আর কাঁচা বাঁধাকপি খেলে এর কার্যকর ক্ষমতা বহুগুণে বেড়ে যায়। এই খাবার টি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে খুব বেশি কার্যকরী তা না তবে শরীরের জন্য যতটুকু প্রয়োজন তার জন্য ঠিকই লড়ে যাবে।

মসলাদার লালচে মরিচও অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গালের কাজ করে।

নারিকেল তেল ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে একটি অলৌকিক খাবার বা পণ্য নারিকেল তেল। এটি দেহের ভেতর এবং বাহিরকে সুরক্ষিত রাখে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে। এন্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো থাকায় নারকেল তেলের পরিমিত ব্যবহার প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

জলপাই পাতার নির্যাস আঠারো শতকের প্রথম দিকে জ্বর কমানোর জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। পরে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য এর প্রয়োজন হয়েছে। আর সম্প্রতি আবিষ্কার থেকে এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে জলপাইয়ের পাতায় থাকা এ্যালেনলিক অ্যাসিড যা ব্রড স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ফলে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাককে মারতে পারে।

অরিগানোর তেল একটি স্বাদু প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হলো অরিগানোর তেল। এই প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটি বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের জন্য ভালো। তবে এটি জিআই ট্র্যাক্টের সংক্রমণে ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত। তবে এটির কার্যকর ফলাফলের জন্য কমপক্ষে শতকরা ৭০ ভাগ কারভ্যাক্রোল রয়েছে এমন অরিগানোর তেলটি খুঁজে বের করুন। এই পণ্যটিও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল। ফলে ত্বকের সমস্যার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে অন্যতম হলো এচিনেসিয়া। তবে অনেকে সাধারণ ভাইরাসজনিত নিরাময়ে এটি ব্যবহার করেন। তবে গবেষণা বলে এর পরিবর্তে যদি ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ, খোলা ক্ষত বা রক্তের বিষক্রিয়া থাকে তবে এচিনেসিয়া ব্যবহার করাই ভালো। এছাড়াও এটি শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণেও বিশেষভাবে কার্যকর।

জাম্বুরার বীজ জাম্বুরার বীজ ফেলে দেওয়া বন্ধ করুন! অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল সাবানগুলোতে সক্রিয় উপাদানগুলি সেই বীজগুলোতেও রয়েছে। জাম্বুরার বীজ নিষ্কাশন ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণে রোগ প্রতিরোধের জন্য অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগার আপেল সিডার ভিনেগারটি ওজন কমানো থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত প্রতিরোধ করে। আপেল সিডার ভিনেগারে অ্যান্টিবায়োটিক এবং এন্টিসেপটিকের ক্ষমতাও রয়েছে। তাই প্রতিদিনই একটু অ্যাপেল সিডার ভিনেগার খেয়ে নিলে শরীরে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে পাওয়া যাবে রেহাই।

তবে খাবারের তালিকায় এই ১০টি খাবার রাখা মানেই যে ডাক্তারের নির্ধারিত ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হবে না এমন নয় তবে যখন অতি শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ শুরু হবে সেই দিনের জন্য শরীরকে প্রস্তুত রাখবে।

(ঢাকাটাইমস/৩এপ্রিল/টিএটি/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি

ঔষধি গাছ থেকে তিন শতাধিক ওষুধ তৈরি হচ্ছে ইরানে

কণ্ঠের সব চিকিৎসা দেশেই রয়েছে, বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই: বিএসএমএমইউ উপাচার্য 

এপ্রিল থেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জা মৌসুম শুরু, মার্চের মধ্যে টিকা নেওয়ার সুপারিশ গবেষকদের

স্বাস্থ্য খাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভাতা বাড়লো ইন্টার্ন চিকিৎসকদের

বিএসএমএমইউ বহির্বিভাগ ৪ দিন বন্ধ, খোলা থাকবে ইনডোর ও জরুরি বিভাগ

তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিএসএমএমইউতে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে: ভিসি দীন মোহাম্মদ

ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে হাসপাতালগুলোকে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :