চার হরিণ সাবাড়ের পরও রাজশাহী চিড়িয়াখানায় কুকুর

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৬:৩২ | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৭:৫১

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় ক্ষুধার্ত পাঁচটি কুকুর ঢুকে চারটি হরিণ খেয়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে গত শুক্রবার ভোরে। কিন্তু এখনও চিড়িয়াখানার ভেতর কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। হিংস্র এই কুকুরগুলোকে বের করে দেয়নি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

শনিবার সকালে সরেজমিনে চিড়িয়াখানার ভেতর অন্তত সাতটি কুকুর ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী আগমন বন্ধ থাকলেও এখানে-ওখানে বিচরণ করছিল কুকুরগুলো। চিড়িয়াখানায় আগে থেকেই এভাবে কুকুর ঘুরে বেড়ায়। এতে বিড়ম্বনায় পড়েন দর্শনার্থীরা।

চিড়িয়াখানার ভেতর কুকুর থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল বলেন, আমরা কুকুরগুলোকে বের করে দিচ্ছি। দু-একটি যদি থেকেও থাকে- সেগুলোকেও বের করে দেয়া হবে।

এদিকে শেডের ভেতর কুকুরে চারটি হরিণ খেয়ে ফেলার ঘটনায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা হয়েছে।

দুপুরে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিনের কাছে প্রতিবেদনটি দেন চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেন।

এতে অবশ্য তিনি নিজের কাঁধে দায় নেননি। চিড়িয়াখানার নৈশপ্রহরী এবং সুপারভাইজারকেও দায়ি করেননি তিনি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কুকুর খাবার সংকটে পড়েছে। সে জন্য পাঁচটি কুকুর শেডে ঢুকে তিনটি বাচ্চা ও একটি মা হরিণ সাবাড় করেছে।

প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, একটা ঘটনা ঘটেছে, সেটাই স্বীকার করে বর্ণনা দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। এখন কার দোষ, না দোষ সেগুলো জানতে একজন কাউন্সিলর এবং একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করতে দায়িত্ব দেয়া হবে। তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য প্রতিবেদনটি আমি সিটি করপোরেশনের সচিবকে দিয়েছি। তিনি দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে দেবেন। দু’একদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। তখন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় পাঁচজন নৈশপ্রহরী আছেন। তারপরেও শুক্রবার ভোরে পাঁচটি নেড়ি কুকুর হরিণের শেডের গ্রিলের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়। এরপর কুকুরগুলো ৭৫টি হরিণের ভেতর থেকে চারটিকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়।

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সকালেই মৃত হরিণগুলোর দেহের অবশিষ্টাংশ শেডের ভেতরেই মাটিচাপা দেয়া হয়।

বিকালে এ নিয়ে সর্বপ্রথম সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম। এতে ঘটনাটি জানাজানি হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতায় এর আগে ২০১৫ সালের এপ্রিলে এই চিড়িয়াখানা থেকে একটি অজগর সাপ পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/৪এপ্রিল/এলএ)