উপস্থিতি নিশ্চিতে হাসপাতালে অভিযান, ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৩৬ | প্রকাশিত : ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৮:১৩

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সেবা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফেরত পাঠানোর অভিযোগ উঠে বেশ জোরালোভাবে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের উপস্থিতিও ব্যাপকহারে কমে গেছে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শনিবার হাসপাতালগুলোতে অভিযান শুরু করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সকাল থেকে আটটির বেশি নামিদামি বেসরকারি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। তবে তাদের এই খবরদারি ভালোভাবে নিচ্ছেন না চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেকেই এ ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভোক্তা অধিকার বলছে, অভিযানে বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের যথাযথভাবে সেবা প্রদান করা হচ্ছে কি-না এটি তদারকি করা হচ্ছে। সর্দি, জ্বর, কাঁশিতে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে কি-না বা এসব রোগীর সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে কি না- এটা তদারকি করছেন তারা। এছাড়া ডাক্তাররা নিয়মিত হাসপাতাল-ক্লিনিকে আসছেন কি না এসবের খোঁজও তারা নিচ্ছেন।

এর বাইরেও হাসপাতালগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যেসব ডাক্তার নিয়মিত হাসপাতাল-ক্লিনিকে আসছেন না তাদের তালিকা চাওয়া হয়েছে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের পাঁচটি দল বিভক্ত হয়ে হাসপাতাল নজরদারি করছে। রাজধানীর স্কয়ার, ল্যাবএইড, শমরিতা হাসপাতাল, বিআরবি হাসপাতাল, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল, কমফোর্ট হাসপাতাল ও আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে গিয়েছেন তারা।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল। মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা কমফোর্ট হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি আগে যেখানে ১৫ থেকে ১৬ জন ডাক্তার বসতেন আজ সেখানে মাত্র চারজন আছেন। এ অবস্থায় সাধারণ রোগীরা কোথায় যাবেন! মানুষ বিনা চিকিৎসায় কি মারা যাবে!’ হাসপাতালগুলোতে এ চিত্র অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিভাগ ও মন্ত্রণালয়কে জানাবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

শাহরিয়ার বলেন, ‘বেশকিছু হাসপাতালের চিত্র কিছুটা স্বাভাবিক পেয়েছি। তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে যেন তারা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেন। কারণ অসুখ হলে চিকিৎসকরাই রোগীদের চিকিৎসা দেন। এই সময় ভয় পেয়ে পালিয়ে গেলে হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সুরক্ষায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

এদিকে এমন অভিযানে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা। অনেকে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। এমনকি কেউ কেউ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এই দুর্যোগে এটাই দেখার বাকি ছিল। তাদের হাসপাতালেও আসতে হলো। কোন আইনের বলে তারা এলেন? কে পাঠালো তাদের? চিকিৎসকের সম্মান ধূলোয় মিশিয়ে দিয়ে চিকিৎসা আদায় করতে চান? তাহলে করতে থাকেন। প্রতিদিন আপনাদের হাসপাতালে স্বাগতম।’

তিনি অভিযান দলের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘আমার রুমে চা খাওয়ার দাওয়াত দিলাম, আসবেন তো? নাকি কোভিড-১৯ এর ভয়ে আমার রুমে আসা নিষেধ।’

বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সাধারণ রোগে মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না শনিবার সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মানুষ এখন বিপদে আছে, এই বিপদে তারা (প্রাইভেট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহ) যদি চিকিৎসা না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকে তবে সরকারও তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৪এপ্রিল/এসএস/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :