খুনের এক মাস পর প্রেমিকার উঠান খুঁড়ে লাশ উত্তোলন

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২০, ২০:৪১

মাগুরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নিখোঁজের প্রায় একমাস পর মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় পিকুল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১টার দিকে প্রেমিকার বাড়ির উঠানের টিউবওয়েলের পাশের ১২ ফুট মাটি খুঁড়ে গলাকাটা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, উপজেলার মহেশপুর গ্রামের কাজী গোলাম মোস্তফার কাতার প্রবাসী ছেলে মোশারফ হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার (২৮) সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে চৌগাছি গ্রামের উকিল বিশ্বাসের ছেলে পিকুল বিশ্বাসের (৩৫)। প্রায় আট মাস আগে মোশারফ দেশে ফিরে এলেও তার স্ত্রীর সঙ্গে পিকুলের সর্ম্পক থেকে যায়। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার শালিশী বৈঠক হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩ মার্চ রাতে রাজিয়ার স্বামী বাড়িতে নেই বলে সুকৌশলে পিকুলকে তার বাড়িতে আসতে বলে। বাড়িতে আসার পর রাজিয়া স্বামীর কথা মতো পিকুলকে দুধের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে খাওয়ায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পিকুল ঘুমিয়ে পড়লে রাজিয়া তার স্বামীকে ডেকে এনে খাটের উপর ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে উঠানের টিউবওয়েলের পাশে খোঁড়া ১২ ফুট গভীর গর্তে বিছানাপত্র ও তার ব্যবহৃত মোবাইল সেটসহ পিকুলের মরদেহ মাটি চাপা দেয়া হয়।

এ দিকে গত ২ মার্চ পিকুল তার সিঙ্গাপুরগামী এক আত্মীয়কে বিমানে তুলে দিতে ঢাকায় যান। ৩ মার্চ দুপুর পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। এরপর থেকে তার পরিবার তার কোনো খোঁজ না পেয়ে পিকুলের ভায়রা মামুনুর রশীদ গত ৭ মার্চ গাজীপুরের কাশিমপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডির সূত্রধরে পিকুলের মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে পুলিশ রাজিয়া ও তার স্বামী মোশারফকে আটক করে।

আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পিকুলকে হত্যার মূল ঘটনা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক শ্রীপুর থানা পুলিশ শুক্রবার রাত ১টার দিকে ১২ ফুট মাটির নিচ থেকে পিকুলের তুলে আনে। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায়  একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। লাশ তোলার সময় মাগুরা পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজোয়ান, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াছিন কবীর উপস্থিত ছিলেন।

নিহত পিকুলের ভাই দিপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে ঘটনায় জড়িত রাজিয়া ও তার স্বামী মোশারফকে আটক করা হয়। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর পর তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৪এপ্রিল/কেএম)