করোনারোধে একজন মুদি দোকানির সচেতনতার গল্প

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২০, ২২:৫৫

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ-প্রাদুর্ভাব, প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কয়েড়া গ্রামের একজন সচেতন বাসিন্দা বুল বুল স্টোরের মুদি দোকানদার বাবলু হোসেন। নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে তার দোকানের পাশে জনসাধারণদের জন্য বসিয়েছন হাত ধোয়ার বেসিন। সরকার ও প্রশাসনের নির্দেশ মতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেও বিক্রি করছেন বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি।

শনিবার সকালে সরেজমিনে দোকানদার বাবলু হোসেনের সচেতনতার নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের চিত্র দেখা গেছে। বাবলু মিয়া তার দোকানের এক পাশে নীল রঙের একটি ড্রাম স্থাপন করেছেন। এতে রাখা হয়েছে সাবান ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। সাদা কাগজে লিখে রাখছেন, পরিস্কার পরিছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। সাবানও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। এছাড়াও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দোকানের সামনে টাঙানো হয়েছে নির্দেশিকা।  

এ বিষয়ে বাবলু হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। যার প্রতিরোধে কোনো ওষুধ তৈরি হয়নি। এর থেকে বাঁচতে প্রয়োজন সবার সচেতনতা। আমার জানা মতে, অনেক দোকানদার এখনো অসচেতন। কিন্তু আমি সচেতনার জন্য এসব নিয়মকানুন মেনে চলছি। যাতে করে সবাই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে ক্রেতাদের সচেতন করে তোলেন।

তিনি বলেন, আমার দোকানে স্থাপন করা বেসিনে যে কেউ হাত ধুয়ে নিতে পারেন।  দোকানে ক্রেতা এলে তাদের সামাজিক দূরত্ব অবস্থান করতে বলি। কোনো পণ্য নেয়ার আগে হাত ধোয়ার জন্য উৎসাহিত করি।

ক্রেতা সুমন সরকার ও সবুজ মিয়া বলেন, দোকানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাটা ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আমরা তার দোকানে এলেই প্রথমে হাত ধুয়ে নেই। পরে দোকান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিয় কিনে নিয়ে চলে যাই। নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি।  দোকানদার বাবলু হোসেনের সচেতনতা দেখে আমরাও নিয়মিত হাত ধুয়ে আসছি তার দোকানে। তিনিও অন্যদের করোনা প্রতিরোধে সচেতন করে আসছেন।

করোনা প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় মুদি দোকানদার বাবলু হোসেনের ব্যক্তি উদ্যোগের ভূমিকাকে কিভাবে দেখছেন ও অন্যান্যদের জন্য করোনা প্রতিরোধে কী করণীয় এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক আব্দুল মাজেদ মাস্টার বলেন, গ্রাম-অঞ্চলের সাধারণ মানুষগুলো বেশিরভাগই অসচেতন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তেমন কোনো নিয়ম মেনে চলেন না। বিকাল হলেই মধ্যরাত পর্যন্ত লেগেই থাকে মানুষের জনসমাগম। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও গ্রাম-অঞ্চলের মানুষদের মাঝে সচেতনতার জন্য বাবলু মিয়া তার দোকানে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। এ রকম ব্যবস্থা অন্যান্য দোকানে নেই। বাবলু মিয়ার মতো করে অন্যান্য মুদি দোকানিরা যদি নিয়ম-কানুন মানার জন্য প্রদক্ষেপ নিতেন তাহলে করোনা মোকাবিলা করা সহজ হবে।

(ঢাকাটাইমস/৪এপ্রিল/কেএম)