গার্মেন্টসকর্মীরা কী করোনাজয়ী, নাকি নীতি নির্ধারকরা ঘুমে!

শাহাবুদ্দিন শুভ
| আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২০, ১৬:৪২ | প্রকাশিত : ০৫ এপ্রিল ২০২০, ১৬:২০

“গার্মেন্টসকর্মীরা কী করোনাজয়ী?’’ এই প্রশ্নটি আমার মাথায়ও ঘুরপাক খাচ্ছে । কেনইবা এতগুলো লোককে শহর ছেড়ে গ্রামে যেতে দেওয়া হলো। আবার কেনইবা তাদের ১১ তারিখের আগে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তাহলে কি আমরা ধরে নিব সমাজে যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের রক্তের ঘামে উপর ভর করে দাড়িয়ে আছে আমাদের উচ্চবিত্ত সমাজ। দেশের জন্য যারা নীতি বানান, যাদের শ্রমের টাকায় তাদের বেতন হয় সেই সব লোক এসব সাধারণ মানুষদের নিয়ে চিন্তার সময় নেই!

অথচ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে আর সব কিছু ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ, শুধু খুলে যাচ্ছে তৈরি পোশাকের কারখানা৷ আজও দেখলাম আমাদের নীতি নির্ধারকরা আমাদের বলছেন আমরা যেন কাজ ছাড়া বাইরে না যাই, তিন চারদিন আগেই দেখেছি কড়াকড়ি আরোপ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আর সেনাবাহিনী হচ্ছে কঠোর৷ কারণ এই দুই সপ্তাহ নাকি সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার৷ গার্মেন্টস কর্মীদের কী সংক্রমণের ভয় নেই, ওরা কী করোনাজয়ী?

বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেছেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েই যাদের অর্ডার আছে তারা কারখানা খোলা রাখতে পারবেন৷ কী এই যথাযথ ব্যবস্থা? এই যথাযথ ব্যবস্থা আর কোনো ক্ষেত্রে নেওয়া গেল না কেন?

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ আবার কর্মস্থল অভিমুখে ছুটতে শুরু করেছেন। শনিবার সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ও মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে পোশাক শ্রমিকসহ মানুষের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে কেউ তার ধার ধারছেন না।

সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে এ ছুটির মেয়াদ ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। করোনাভাইরাসে ছড়িয়ে পড়া রোধে অন্তত দুই সপ্তাহ সবাইকে বাড়িতে রাখতে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সরকারের এই পদক্ষেপ। এ সময়কালে জনসমাগম তো দূরে কথা, বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরেও যাতে মানুষ বের না হয়, এ জন্য মাঠে নামানো হয়েছে সেনা। চলছে প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বিত সচেতনতা কার্যক্রম ও অভিযান।

দেশে করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য সরকারের এত আয়োজন এত পরিকল্পনা কিন্তু গার্মেন্টস খুলে যাওয়ার ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক যে ভাবে আবার গ্রাম থেকে ঢাকা মুখি হলেন তার ফলে ভাইরাস যে মহামারি আকারে ছড়াবে না তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? নাকি এসব বিষয় গার্মেন্টস মালিকরা মানেন না বা দেশ নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। মরুক না শ্রমিক তাদের কি ? নিজেদের বিত্ত বৈভব বাড়ানোর স্বপ্নে বিভোর তারা ।

শাহাবুদ্দিন শুভ, প্রধান সম্পাদক, সিলেটপিডিয়া

[email protected]

ঢাকাটাইমস/৫এপ্রিল

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :