প্রশ্নবানে জর্জরিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী!

প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০২০, ১৯:২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

করোনা নিয়ে গোটা দেশের মানুষ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির মধ্যে হুট করেই হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরেছেন। অনলাইনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের মতো সংবাদ সম্মেলনে এসে রবিবার গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।

মন্ত্রীর দাবি, গার্মেন্টস খোলার বিষয় নিয়ে তাদের কেউ কিছু জানায়নি বা আলাপ করেননি। তবে সামনে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। এভাবে শ্রমিকরা এসে পড়ায় ঝুঁকি বাড়ছে বলেও মনে করেন তিনি।

করোনা প্রতিরোধে জাতীয় কমিটি করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্ন যদি গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন আলোচনাই না করে তাহলে এই কমিটির কাজ কী? জবাবে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় কমিটির কাজ যেটা দেখছেন সেটা। আমরা চিকিৎসা সেবা, কোয়ারেন্টাইন এগুলো নিশ্চিত করছি। স্বাস্থ্য বিষয়ক যত কাজ হবে সেগুলোই আমরা করছি। লকডাউন করা, পরিবহন বন্ধ করা এগুলো অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কাজ। তারাও এ কমিটিতে আছে।

অনলাইনে তাকে প্রশ্ন করা হয়- ১১ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ করা হলো। পুরো দেশ স্থবির হয়ে আছে। এই অবস্থার ভেতর দিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকায় ঢুকানো হলো। আপনি আশঙ্কা করছেন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এটা আসলে ওই শঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দেয় কি না, আপনি কী মনে করেন?

মন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ এই শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। এই জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএ নির্দেশনা দিয়েছেন। সকল ফ্যাক্টরি এখন বন্ধ রাখবেন এবং শ্রমিকদের বেতন দেবেন। এটা গতকালই জানানো হয়েছে। আগামীতে এ ধরনের পরিস্থিতি আর হবে না। আর এ ধরনের পরিস্থিতি হলে সংক্রমণ অনেক বেড়ে যাবে।’

পরে প্রশ্ন করা হয়, এই দায় কি তারা এড়াতে পারে বা আপনাদের না জানিয়ে এরকম একটা সিদ্ধান্ত তারা নিল? তিনি বলেন, বিজেএমইএ এবং বিকেএমই তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়। তাই তারা আমাদের জানাতে বাধ্য নয়। তবে এ কাজটি করা ঠিক হয়নি এটা আমরা মনে করি।

পরে প্রশ্ন করা হয়- এখন বাংলাদেশ সংক্রামক ব্যাধি আইন কার্যকর করা আছে। এক্ষেত্রে এগুলো দেখার অধিকার কিন্তু আপনাদেরই। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ আপনাদের অধীনে না হলেও সংক্রামক ব্যাধি আইনে আপনারা ব্যবস্থা নিতে পারতেন। আপনারা কোনো ভূমিকা পালন করেন নাই এখন পর্যন্ত?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা জানার পরে আমরা যেখানে বললে কাজ হবে সেখানে জানিয়েছি। আমরা আশা করি লোকগুলো আর ঢাকা আসবে না বা যারা এসেছে তারা ফিরে যাবে।

এখানে কি জাতীয় কমিটি কোনো ভূমিকা রাখেনি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় কমিটি ভূমিকা রাখছে বলেই বন্ধ হয়েছে। এটা আপনারা বলতে পারেন যে খোলার সময় বিষয়টা আমাদের সঙ্গে আলাপ হয়নি। ফ্যাক্টরি খোলা এবং বন্ধ করা এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কিছু করতে পারবে না।

বিএনপির প্রণোদনা প্যাকেজের একদিন পরই সরকারের পক্ষ থেকে প্যাকেজ ঘোষণা করা হলো। সেই প্রস্তাব নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সমন্বয় করেই কাজ করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার জায়গা থেকে আজকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। ৭২ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন এতে আমরা সকলেই খুশি। আমরা বলেছিলাম জনগণের যে বিভিন্ন ধরনের কষ্ট হচ্ছে যেমন: মানুষকে খাদ্য দেয়া, স্বাস্থ্যে বিষয় সেই বিষয়ে তো বিএনপির কোনো ভূমিকা আমরা দেখতে পাইনি। এই বিষয়টাই আমি আপনাদেরকে বলার চেষ্টা করেছি।

সামনে আবার ছুটি শেষ হলে লোকজন ফিরে আসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে কী ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেব যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৫এপ্রিল/বিইউ/জেবি)