‘জুমে’ হ্যাকারদের হানা

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২০, ১০:৩০

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মার্কিন সংস্থা জুম ভিডিও কমিউনিকেশনস ইনকর্পোরেশনের ‘জুম ক্লাউড মিটিংস’-হাই ডেফিনিশন মিটিং অ্যাপ দিয়ে দূরের ঘরবন্দি পৃথিবী চলে এসেছে একেবারে ঘরের ভিতরে। কথার সঙ্গে ভিডিও কলের বাড়তি সুবিধা তো আগেও পেতেন হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল ডুয়ো, স্কাইপ-সহ একাধিক জনপ্রিয় অ্যাপে।

জুমের বিশেষত্ব হচ্ছে, এর মাধ্যমে একসঙ্গে ১০০ জনকে যুক্ত করে একই সঙ্গে চলতে পারে ‘ভার্চুয়াল ওয়েব ভিডিও কনফারেন্স’। যার ফলে, সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং এড়িয়ে কর্পোরেট অফিসের জরুরি মিটিং, এসব কিছুই না হলে নেহাতই পরিবারের ঘরবন্দি সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ-দেখাসাক্ষাৎ করার সুবিধাটা মুঠোর মধ্যে এনে দিয়েছেন জুম কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু সুবিধার সঙ্গেই লেজুড় হিসেবে আসে বেশকিছু বাড়তি অসুবিধা। অ্যাপের মাধ্যমে এই গণ-ভিডিও কল করতে গিয়েই কনফারেন্সে অবাঞ্ছিত হ্যাকার হানা থেকে মোবাইলের মেমোরিতে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য-ছবি, সবই ফাঁস হয়ে যাচ্ছে, অভিযোগ উঠেছে বিশ্বজুড়ে। 

এমনকি জুম-মিটিং বা কনফারেন্স কলের মধ্যে ঢুকে পড়ে হ্যাকাররা তাতে বিঘ্ন ঘটাতে ছড়িয়ে দিচ্ছে পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্ট। 
জুমের নিরাপত্তায় ছিদ্র থাকার যে অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন স্বয়ং জুম সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার এরিক এস ইউয়ান।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, সিকিওরিটি ফিচার পুরোপুরি সুরক্ষিত করে অ্যাপটি তারা তুলে দিতে পারেননি গ্রাহকদের হাতে।

পাশাপাশি সান হোসের সদর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক ই-মেল বার্তায় নিক চং (হেড, গ্লোবাল সার্ভিস) গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিক ভাবে হ্যাকারদের জুমবম্বিং-এর ধাক্কা সামলাতে পারেনি জুম। ৩ মাস আগে গড়ে যেখানে রোজ ১ কোটি গ্রাহক এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতেন, সেখানে এখন তা বেড়ে দৈনিক ২০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এই জনপ্রিয়তায় বিঘ্ন ঘটাতে কিছু অবাঞ্ছিত ব্যক্তিরও এখানে অনুপ্রবেশ ঘটছে। পাশাপাশি অ্যাপে থাকা অনেক সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যের ঠিকঠাক প্রয়োগও করেননি অনেক ব্যবহারকারী। যেমন, পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত ওয়েবমিনারের ব্যবহার। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আগামী ৯০ দিন কোনও নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করা বা তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার চিন্তাভাবনা বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ শুধুই নিরাপত্তার ফাঁকফোকর বন্ধ করতে সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করবেন।’

একই সঙ্গে চং-এর দাবি, ‘শুরুতে তাঁরা প্রধানত প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের কথা ভেবে অ্যাপটি বাজারে এনেছিলেন। যেখানে ব্যবহারকারীদের সাহায্য করার জন্য প্রশিক্ষিত আইটি পেশাদার দল থাকে। কিন্তু বর্তমানে হঠাৎ করে অগণিত ব্যক্তিগত গ্রাহক প্ল্যাটফর্মে এসে পড়েছেন, যারা সব সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারছেন না। তাতেই সমস্য বেড়েছে। যে বিষয়টি এখন ঠিক করাই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য।’

মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ইতিমধ্যেই এই অ্যাপ ব্যবহারে সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে দিয়েছে। পৃথক ভাবে এর সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন মুলুকের ২৭টি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/এজেড)