পর্যটন খাতেও বিশেষ প্রণোদনা চায় বিটিইএ

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২০, ১৫:৫৪

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

করোনা পরিস্থিতির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ১৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিইএ)।

একই সঙ্গে প্রণোদনার টাকা সম্মত নীতিমালার আওতায় এককালীন অনুদান, রিফাইন্যান্স ঋণ ও রেয়াতি সুদহারে ঋণ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোখলেছুর রহমান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর।

পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত প্রণোদনায় পর্যটনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অগ্রাধিকার নিশ্চিতের দাবিও জানান তারা।

 বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তা বিশেষভাবে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই ঘোষণা থেকে এ কথা পরিষ্কার হয়েছে যে, তিনি বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য-অর্থনীতি নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন এবং তা থেকে উদ্ধার করার জন্য সদাসচেষ্ট। প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে রক্ষায় তার পদক্ষেপ চাই। আমরা আশা করি, এ ক্ষেত্রেও তিনি বিলম্ব করবেন না।

সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পও অত্যন্ত নাজুক অবস্থার শিকার হয়েছে বলে জানিয়ে তারা বলেন, একে ঘুরে দাঁড় করাতে হলে জুন ২০২১ পর্যন্ত যে কোন উপায়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কেননা, এই শিল্প প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ কর্মীর কর্মপ্রচেষ্টায় আমাদের জিডিপিতে ২০১৯ সালে ৭৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার অবদান রেখেছে এবং পর্যটন রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে হোটেল ও বিমান মিলে ১০ শতাংশ ব্যবসায়ী কর্পোরেট শ্রেণির, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ৮০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ প্রান্তিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। ফলে পর্যটন খাতের ৯০ শতাংশ পেশাজীবী ও কর্মী অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পতিত হয়েছেন, যা অন্য যে কোন উৎপাদনধর্মী এবং সেবাধর্মী শিল্পের চাইতে আলাদা। এই শিল্প দেশে প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ এবং আবেশিত এই ৩ (তিন) উপায়ে অবদান রাখে। তাই পর্যটন শিল্প ভেঙে পড়লে অর্থনীতি ও সমাজ ভেঙে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন পর্যটন শিল্পের দুই সংগঠনের নেতারা।

এ অবস্থায় এই শিল্পকে রক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে আগামী জুন ২০২১ পর্যন্ত প্রণোদনা ঘোষণা করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে থেকে ৫টি উপায় তুলে ধরেন তারা।

এগুলো হচ্ছে—বাংলাদেশের জিডিপিতে পর্যটনের অবদানের অন্যূন ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করতে হবে। এই প্রণোদনার টাকা সম্মত নীতিমালার আওতায় এককালীন অনুদান, রিফান্যান্স ঋণ ও রেয়াতি সুদহারে ঋণ দিতে হবে।

অনুদান ও ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রান্তিক শ্রেণির ব্যবসায়ী, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কর্পোরেট ব্যবসায়ী এই ধারাক্রম মেনে চলতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের রক্ষার জন্য এপ্রিল ২০২০ মাসের মধ্যে অনুদানের অর্থ পর্যটন ব্যবসায়ীদের হাতে জরুরিভিত্তিতে পৌঁছাতে হবে।

বিতরণকৃত সকল ঋণ সরল সুদে প্রদান ও দীর্ঘমেয়াদী পরিশোধ কিস্তি নির্ধারণ এবং ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ করবর্ষে পর্যটনের সকল উপখাতে ১০ শতাংশ হারে কর কমানো।

ঢাকা টাইমস/০৬এপ্রিল/আরএ/ডিএম