গাজীপুরে পোশাক কারখানায় মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২০, ১৭:৪৪

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানা বিজিএমইএর নির্দেশনায় বন্ধ থাকলেও কাজ চলছে বেশ কিছু কারখানায়। রাতদিন খোলা এসব কারখানায় কাজ করছেন হাজার হাজার শ্রমিক। একই ফ্লোরে পাশাপাশি থেকে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। মহামারী করোনা ভাইরাস সুরক্ষায় নেই তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম। এ অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মরত এসব শ্রমিকরা। এছাড়া বন্ধ ঘোষিত কারখানার অনেকগুলোতে দেয়া হয়নি মার্চ মাসের বেতন। বেতন ভাতা ও ভবিষ্যত  নিয়ে উদ্বেগ, উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন অনেক শ্রমিক।

কাশিমপুর এলাকার ডিবিএল কারখানার এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশেষজ্ঞরা যেখানে বলছেন তিন ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার, সেখানে প্রতিটি ফ্লোরে এক ফুট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার সুযোগ নেই। হাজার হাজার শ্রমিক শরীরের সঙ্গে শরীর, কাঁধের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি। আমরা কিভাবে নিরাপদ থাকব। আমাদের হাতমোজা নেই, শুধুমাত্র টয়লেটে হাত ধোয়ার জন্য হ্যান্ড ওয়াশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিজেরা মাস্ক ব্যবহার করলেই কী করোনা থেকে মুক্ত থাকা যাবে।

সোয়ান নিট কম্পোজিট কারখানার শ্রমিক আসলাম বলেন, সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অধিকাংশ কারখানা বন্ধ রয়েছে। তবে আমাদের কারখানায় জোর করে কাজ আদায় করতে চেয়েছিল, আমরা আন্দোলন করেছি। এখন বেতন ভাতা না দিয়ে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বেতন ভাতা কবে দিবে সে ব্যাপারে মালিক পক্ষ কিছুই বলছে না। একই অবস্থা টার্গেট ফ্যাশনসহ নাওজোড়, কোনাবাড়ি এলাকার অনেক খোলা কারখানার।

করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শ্রমিকদের শুধুমাত্র হাত ধোয়া ও সচেতনতায় প্রচারণার ব্যবস্থা নিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতসহ শ্রমিকদের সুরক্ষায় মালিকপক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কারখানার কর্মপরিবেশ এবং খোলা রাখার ব্যাপারে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ সুপার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গাজীপুরে বর্তমানে ২৮৩টি কারখানা খোলা রেখেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এসব কারখানার মধ্যে বিজিএমইএর ৮৩টি, বিকেএমইএর ১৩টি, বিটিএমইএর ২৭টি এবং সাব কন্টাকের ১৯টি এবং অন্যান্য ১৪১টি কারখানা রয়েছে।  কারখানার নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও শ্রমিকদের সুরক্ষায় মালিকপক্ষকে আরো সচেতন করার লক্ষে শিল্প পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

করোনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন বলছে, যারা কারখানা বন্ধের পর বাড়ি গেছেন এবং পুনরায় কর্মস্থলে ফিরে এসেছেন তাদের মধ্যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত কী না তা বুঝা অত্যন্ত কঠিন। তাই এই ভাইরাস সংক্রমণরোধে মালিকপক্ষ, শ্রমিকসহ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে এসময়ে খোলা কারখানাগুলোতে কী পরিমাণ শ্রমিক কাজ করছে তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও তবে শুধুমাত্র সিটি করপোরেশন এলাকায় গড়ে ওঠা শিল্প কারখানায় কাজ করেন অন্তত ২২ লাখ শ্রমিক। তাদের সুরক্ষা না দিতে পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহতার আশঙ্কা করছেন শ্রমিকরা।

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/কেএম)