মেসিদের চাঙ্গা রাখতে মনোবিদদের মন্ত্র

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৬:০৮

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত স্পেন। লিওনেল মেসি থেকে অ্যান্তোনি গ্রিজম্যান- সবাই এখন গৃহবন্দি। অভূতপূর্ব এই পরিস্থিতিতে ফুটবলাররা যাতে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত না হন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ।

লা লিগা ক্লাবগুলোর সঙ্গে জড়িত মনোবিদরা পরামর্শ দিয়েছেন ফুটবলারদের। কীভাবে এই রকম একটা ভয়ঙ্কর এবং অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে তা বলে দিয়েছেন। লা লিগা ক্লাবগুলোর সঙ্গে জড়িত মনোবিদরা ফুটবলারদের যেসব পরামর্শ দিয়েছেন তা নিচে তুলে ধরা হলো।

নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলো: মনোবিদদের মতে, ফুটবলাররা যন্ত্রের মতো রুটিন মেনে চলেন। বিশেষ করে যখন সেই রুটিন তৈরি করে দেন ক্লাবের কোচ, ট্রেনাররা। সেই রুটিন কোনও কারণে ভেঙে গেলে মানসিক সমস্যায় পড়তে পারেন ফুটবলাররা। সেভিয়া এফসি অ্যাকাডেমির সাইকোলজি বিভাগের কো-অর্ডিনেটর, হুয়ান ম্যানুয়েল গামিতো ই-মেল মারফত বলেছেন, ‘একজন অ্যাথলেট কিন্তু সবার আগে একজন মানুষ। তাই সাধারণ লোক এই পরিস্থিতিতে যেরকম সমস্যায় পড়বেন, একজন ক্রীড়াবিদের ক্ষেত্রেও তাই ঘটবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে বলব, ওদের জীবনটা পুরো একটা রুটিনের ছন্দে বাঁধা। ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট ছক থাকে। এই রুটিনটা ভেঙে গেলে মানসিক সমস্যা আসতে বাধ্য।’ যে কারণে এই ‘রুটিন মেনে চলো’র পরামর্শ মনোবিদের। কী বলেছেন তিনি ফুটবলারদের? গামিতোর পরামর্শ: নির্দিষ্ট ‘টাইম স্লট’-এ দিনটাকে ভাঙো। কখন ট্রেনিং করবে, কখন খাবে, কখন ঘুমোবে— এ সব যেন ঠিক করা থাকে। তা হলে ফুটবলাররা একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যের মধ্যে জীবনকে বাঁধতে পারবেন।

মস্তিষ্কের ব্যায়াম: ক্লাবে ট্রেনিংয়ের সময় মানসিক শক্তি বাড়ানোর উপরেও নজর দেওয়া হয়। কিন্তু লকডাউনে মস্তিষ্কের ব্যায়ামও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ফুটবলারদের সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন মনোবিদরা। তেমনই একজন মনোবিদ হুয়ান মিগেল বার্নাত বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে যদি এই ‘মেন্টাল এক্সারসাইজ’ বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে কিন্তু ঘুম নষ্টের মতো নানা সমস্যায় পড়বে ফুটবলাররা। যে কারণে মানসিকভাবে ফুটবলারদের চাঙ্গা রাখাটা খুবই প্রয়োজন।’ কী করে এটা করা যেতে পারে? মনোবিদদের পরামর্শ হল, ‘কগনেটিভ ওয়ার্কআউট’ চালু রাখতে। যা মস্তিষ্কের সেই অংশটাকে সক্রিয় রাখবে, যা বরাবর চ্যালেঞ্জ সামলে এসেছে। কী সেই ওয়ার্কআউট? প্রত্যেক ফুটবলারকে তাঁদের খেলার বিশ্লেষণ তুলে দিয়ে বলা হচ্ছে, কোথায়, কোথায় উন্নতির জায়গা খুঁজে বার করতে। বিপক্ষ ফুটবলারদের খেলার ভিডিয়ো দিয়ে বলা হচ্ছে, তাঁদের দুর্বলতা খুঁজে বার করতে হবে। লক্ষ্য, চ্যালেঞ্জের একটা পরিবেশ তৈরি করা।

ডিজিটাল ট্রেনিং: ফুটবলারদের সঙ্গে ইন্টারনেট মারফত যোগাযোগ রাখা। তঁদের মানসিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া। কোনও, কোনও ক্লাব ইতিমধ্যেই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শুধু ফুটবলারদের নয়, তাঁদের পরিবারকেও চাপ কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দিচ্ছে।       

দল হিসেবে লড়তে হবে: যেকোনও দলগত খেলাতেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার ব্যাপারটা থাকে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ফুটবলাররা যে একা নন, সেটাই মনোবিদরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শুধু লা লিগার সিনিয়র ফুটবলারদের জন্যই নয়, ভাইরাসের বিরুদ্ধে দলগত লড়াইয়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে জুনিয়র দলকেও। বোঝানো হয়েছে, এই লড়াইয়ে কেউ একা নন।

(ঢাকাটাইমস/৭ এপ্রিল/এসইউএল)