১৪ দিনেও খাদ্য সহায়তা পৌছেনি যে গ্রামে

সাইমুম সাব্বির শোভন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৭:৪০

সরকারের সাধারণ ছুটির পর লকডাউনের কবলে পড়ায় বিপাকে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ছবিলাপুর ও আশপাশের গ্রামের হাজারও নিম্নআয়ের মানুষ। গত দুই সপ্তাহেও কোনো ত্রাণসামগ্রী না পাওয়া এবং লকডাউনে ঘরবন্দি হয়ে পড়ায় খাবার সংকটে পড়েছেন তারা।

২৬ মার্চ সরকারি ছুটি, দোকান-পাট ও গণপরিবহণ বন্ধ হওয়ার পর থেকে কর্মহীন হয়ে ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ছবিলাপুর, ছবিলাপু, কায়েতপাড়াসহ চরাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামের হাজারও দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষ। তাদের অভিযোগ সরকারি ছুটির পাশপাশি এই ইউনিয়নে করোনাভাইরাস এক ব্যাক্তি সনাক্ত হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে রবিবার পুরো ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। এলাকার দোকান-পাট, হাট-বাজারের কাজ বন্ধ হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েন তারা। কর্মহীন সময়ে সরকারি ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় খাবার সংকট তৈরি হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি খাদ্য সহায়তার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী এসব মানুষ।

সোমবার সকালে সেই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়-সকলেই যার যার ঘরে অবস্থান করছে এবং যান চলাচল বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে গাছের গুড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। কিছুক্ষণ পরপর নভেল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতায় মাইকিং করছে স্বেচ্ছাসেবক কয়েকজন যুবক। তাদের জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহেও ঘোষেরপাড়া গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায়নি।

এমন সময় ঘোষেরপাড়া গ্রামের একজন ভিক্ষুক মর্জিনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, না খেয়ে থাকি, আল্লাহ করোনা দিছে। ভাইও নাই, বাবাও নাই, আমাদের দুর্দশা হইছে। আমাদের কপালে এই দশা। সারাদিন না খেয়ে এমনেই থাকি। ভিক্ষা পাই না। এখন করোনার ভয়ে কেউ ভিক্ষাও দেয়না।

সেই গ্রামের আরেকজন ভুক্তভোগী রফিক বলেন, রবিবার থেকে আমাদের এলাকায় লকডাউন চলতাছে। আমাদের কোনো খাবার দাবার নাই। পরিস্থিতি খুব খারাপ। কোনো বাজার ঘাট করা যাইতাছে না। রাস্তাঘাট সব বন্ধ। বাড়ি থেকে আমরা বের হতেই পারতাছি না। এখন সরকার যদি আমাদের কোনো অনুদান দেই তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো।

ঘোষেরপাড়ার পাশের গ্রাম পূর্ব ছবিলাপুর এলাকার মিন্টু হোসেন জানান, পুরো ইউনিয়ন লকডাউনের জন্য বাইরে বের হতে পারছে না তারা। সরকার যদি কিছু খাদ্যসামগ্রী তাদের কাছে পৌঁছে দেই। তাহলে তাদের জন্য ভালো হতো।

এ সময় একই গ্রামের বাসিন্দা কালু মিয়া বলেন, এই এলাকার নিম্ন আয়ের লোকগুলো খুব দুঃখে আছে। এরা খুব অভাবী। খালি শুনতাছি সরকারি অনুদান আইতাছে। এই জায়গায় আসলে কিচ্ছু আসে নাই। কিচ্ছু পায় নাই। কেউ কিচ্ছু পায় নাই।

এ বিষয়ে ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের মোধ ওবায়দুর রহমান বলেন, যে পরিমাণ সরকারি খাদ্য সহায়তা পাওয়া গেছে তা বিতরণ করা হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তির খাদ্যের প্রয়োজন হয় তাকে জানানো হলে তা দেয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।

এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামিম আল ইয়ামিন বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। দুয়েকদিনের মধ্যে সেই গ্রামে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/৭এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :