ঘরবন্দি মানুষ, কমেছে পৃথিবীর কাঁপুনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৯:২৯

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে শত শত কোটি মানুষ এখন কাজকর্ম ছেড়ে ঘরে বসে আছে। এর ফলে এই পৃথিবীর গতিবিধিও বদলে গেছে। কারণ, মানুষ বাইরে যাচ্ছেনা বলে গাড়ি-ট্রেন চলছে খুবই কম, লাখ লাখ ভারি শিল্প-কারখানা এখন বন্ধ।

আর এর ফলে, ভূ-পৃষ্টের ওপর চাপ কমে গেছে অনেক। ফলে পৃথিবী কাঁপছে কম। পৃথিবীর ওজন ছয় বিলিয়ন ট্রিলিয়ন টন। সেই বিবেচনায় এই পরিবর্তন বিস্ময়কর।

পৃথিবীর কাঁপুনি যে কমে গেছে তা প্রথম লক্ষ্য করেন বেলজিয়ামের রয়্যাল অবজারভেটরির বিজ্ঞানীরা। তারা বলেন - 'লকডাউনের আগের তুলনায় ১-২০ হার্টস ফ্রিকোয়েন্সিতে (বড় একটি অর্গানের আওয়াজের যে ফ্রিকোয়েন্সি) ভূ-পৃষ্ঠের দুলুনি এখন অনেক কম।'

শুধু বেলজিয়াম নয়, পৃথিবী পৃষ্ঠেরই পরিবর্তন সারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ভূকম্পন কমার বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নেপালের ভূকম্প-বিদরা একই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন। প্যারিস ইন্সটিটিউট অব আর্থ ফিজিক্সের একজন গবেষক বলেছেন, ফ্রান্সের রাজধানীতে ভূকম্পন 'নাটকীয় মাত্রায়' কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস শহরে কাঁপুনি কমে যাওয়ার মাত্রা দেখে বিস্মিত হয়েছেন ক্যাল টেক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।

লকডাউনে যে ভূকম্পন কমেছে তাই নয়, প্রকৃতিও বদলে গেছে। স্যাটেলাইটের চিত্রে দেখা গেছে, পরিবেশ দূষণের পেছনে যার বড় ভূমিকা রয়েছে সেই নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাস এখন বাতাসে অনেক কম। কারণ বাস-ট্রাক-গাড়ি, কারখানার ধোঁয়া এখন অনেক কম। পৃথিবীতে শব্দও এখন অনেক কম। যে বিজ্ঞানীরা শব্দদূষণ মাপেন বা মহাসাগরের শব্দ নিয়ে গবেষণা করেন, তারা একবাক্যে বলছেন পৃথিবীতে আওয়াজ এখন অনেক কম।

পৃথিবীর কম্পন কমলেও একদম যে স্থির হয়ে গেছে তা বলা যাবেনা। তবে গতিবিধির এই পরিবর্তনে উৎসাহিত হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের নানা গতিবিধির কারণে এত শব্দ তৈরি হয় যে পৃথিবী ও প্রকৃতির স্বাভাবিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণ তাদের জন্য কষ্টকর।

ওয়াশিংটনে ইনকর্পোরেটেড রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর সিসমোলজির বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডি ফ্রাসেটো জানান, 'এখন আপনি এমন সিগন্যাল পাচ্ছেন যাতে কোলাহল অনেক কম। ফলে ওই সব সিগন্যালের ডেটা বিশ্লেষণ এখন সহজতর হচ্ছে।'

কিছু বিজ্ঞানী সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পেয়েছেন যে কেন একটি এলাকায় ভূকম্পন কমেছে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের স্টিভেন হিক্স বলছেন লন্ডন এবং ওয়েলসের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান মহাসড়ক এম-ফোরের ওপর গাড়ি চলাচল কমে যাওয়ায় ঐ মহাসড়কের দুই ধারের এলাকাগুলোতে ভূকম্পন অনেক কমে গেছে।

তবে শব্দ এবং ভূকম্পনের ওঠা-নামা একদম নতুন কিছু নয়। বছরের একেক সময়, দিনের একেক সময় মানুষের গতিবিধি বাড়ে-কমে। উৎসব চলাকালীন বা ছুটি চলাকালীন শব্দ বা ভূ-পৃষ্ঠের দুলুনি কমে যায়। তেমনি দিনের চেয়ে রাতের বেলা এগুলো কমে যায়।

তবে এখন যেটা হচ্ছে তা হলো সারা পৃথিবীব্যাপী কয়েক সপ্তাহ বা কোথাও কোথাও মাস জুড়ে মানুষের গতিবিধি অনেকটা কম। আর তাতে পৃথিবীর ওপর যে চাপ কমেছে তার নজির বিরল। সূত্র: বিবিসি

ঢাকা টাইমস/০৭এপ্রিল/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

রাফাহতে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী: নেতানিয়াহু

নির্বাচন করার জন্য অর্থ নেই, সরে দাড়ালেন ভারতীয় অর্থমন্ত্রী

সিরিয়ার আলেপ্পোতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৮

দ. আফ্রিকায় বাস খাদে পড়ে নিহত ৪৫, অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল শিশু

দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর বালিচাপা দিলো ইসরায়েলি সেনারা 

গাজায় যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আইসিসির প্রতি আহ্বান

কলকাতা বিমানবন্দরে চলল গুলি, নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে হুমকি পেলেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ

মস্কোতে কনসার্টে হামলা: এখনো প্রায় ১০০ জন নিখোঁজ 

বাবা কোটিপতি, ২০ বছর ধরে জানতই না ছেলে!

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :