বগুড়ায় অসহায়দের পাশে দুই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ২১:৪৫

করোনাভাইরাসের প্রভাবে স্থবির হয়ে গেছে জনজীবন। জনসমাগম এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসন ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে জনগণও সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার এবং অপরিচিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে। এরকম অবস্থায় দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে মাত্রাতিরিক্ত অসহায় হয়ে পড়েছে ভাসমান ভিক্ষুক, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো। নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে বগুড়ার ফুটপাত এবং রেলস্টেশনে বসবাস করা এ মানুষদের। ভিক্ষাবৃত্তি করে যাদের জীবন কাটতো, রাস্তায় মানুষজনের অভাবে ক্ষুধার জ্বালায় তাদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। এমন অবস্থায় এসব মানুষের জন্য এগিয়ে এসেছে ‘ভিন্নদৃষ্টি’ এবং ‘আলোর দিশারী’ নামে বগুড়ার দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা প্রতিদিন দুপুরে এসব মানুষদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে।

বগুড়া শহরে অনেকেই ফুটপাতে বসবাস করেন। তাদের অসহায়ত্বের চিত্র অন্যরকম। এমন কথা চিন্তা করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এক বেলার খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেয়। যেটার বাস্তবায়ন ঘটায় তারা গত ২৭ মার্চ থেকে। প্রতিদিন দুপুর ২টার পর বগুড়া শহরের সাতমাথা থেকে রেলওয়ে ষ্টেশন এবং সেউজগাড়ী আমতলা থেকে পৌরপার্ক রোড এলাকায় সংগঠনগুলোর স্বেচ্ছাসেবীরা ফুটপাতের এসব অনাহারী মানুষদের জন্য ব্যাগ ভর্তি রান্না করা খাবার নিয়ে হাজির হয়। তারপর এক এক করে শহরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব অসহায় ভাসমান মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করে।

রেলস্টেশনে বসবাসকারী ষাটোর্ধ্ব হালিমা বিবি জানালেন, তার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরবে। গ্রামে তার কোন জায়গা জমি নেই। বগুড়া শহরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে শহরে লোকজন কম। বাসাবাড়িতেও যেতে পারছেন না। কেউ তাদের খাবার দিয়ে গেলে খেতে পারছেন। না দিয়ে গেলে খেতে পারছেন না। তবে প্রতিদিন এই সংগঠনটি থেকে খাবার দিয়ে যাওয়ার কারণে দুপুরের খাবার নিয়ে তাকে চিন্তা করতে হচ্ছে না।

তবে তিনি জানান, রাতেও মাঝে মধ্যে কেউ কেউ গাড়ি নিয়ে এসে তাদের খাবার দিয়ে যায়।

রিপন নামে অপর ব্যক্তি জানালেন, তার বাড়ি ফরিদপুরে। তিনি রেলস্টেশনে থেকেই দিনমজুরের কাজ করতেন। কিন্তু এখন কাজ নেই। তাই খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। গত মঙ্গলবার রাতে ক্ষুধার জ্বালা নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এখন খাবার পেলেন। রাতের খাবারের কি হবে তিনি জানেন না।

ভিন্নদৃষ্টির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রিংকু রায় অর্ক ঢাকাটাইমসকে বলেন, করোনা সংকট সৃষ্টির পর বিভিন্ন সংগঠন এবং সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিরা যে যার মতো মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আমরাও চেষ্টা করছি, অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর। মাত্র ৩৭ জন সদস্য নিয়ে আমাদের সংগঠন। আমরা সংগঠনের এই সদস্যরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে চেষ্টা করছি প্রতিদিন দুপুরে রান্না করে খাবার বিতরণের। দেশের এই পরিস্থিতিতে সাতমাথা এবং রেলস্টেশনে ভিক্ষক এবং মানসিক ভারসাম্যহীন মিলে ৮০ থেকে ৯০ জনের মতো ব্যক্তি আছে যেটা আমরা গত কয়েকদিনে দেখেছি। তবে আমরা ৫০ ব্যক্তিকে আমরা প্রতিদিন খাবার বিতরণ করে আসছি। কোন দিন ভাত, ডাল এবং সবজি, আবার কোন দিন খিঁচুড়ী রান্না করে বিতরণ করা হয়। আমাদের ইচ্ছা আছে এই ক্রান্তিকাল কেটে না যাওয়া পর্যন্ত এভাবে এসব মানুষের পাশে দাঁড়াবার। তবে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি আমাদের সহযোগিতা করতেন, আমরা এসব মানুষের কষ্ট কমাতে আরো কিছু করতে পারতাম।

আলোর দিশারী’র সাধারণ সম্পাদক আদিত্য কুমার ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমাদের এই কার্যক্রমের প্রথম দিকে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার টাকা দিয়ে পরিচালনা করলেও আমাদের কাজ দেখে অনেকেই আমাদের সহযোগিতা করছেন।

কেউ কেউ রান্না করে আমাদের জানাচ্ছেন। আমরা সেগুলো বিতরণ করছি। আমরা প্রতিদিন ৮০ জন ব্যক্তির মাঝে খাবার বিতরণ করছি।

(ঢাকাটাইমস/৮এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :