করোনায় গর্ভবতী মায়ের সুরক্ষা

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০৯:১২

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে গোটা বিশ্ব কাঁপছে । এই অবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের নিয়েও দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কীভাবে নিজের ও গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা যায় ?
কোভিড-১৯ নিয়ে এখনও খুব বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ মেলেনি। কবে এর প্রতিষেধক আসবে তা ও জানা নেই।  তবু এখনও পর্যন্ত যেটুকু জানা গিয়েছে, তাতে  গর্ভবতীদের শরীরে এই ভাইরাসের প্রভাব নিয়ে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে। যেমন:

আর পাঁচটা মানুষের মতোই এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে গর্ভবতীদেরও জ্বর, হাঁচি, কাশি, গলা ব্যথা, নিউমোনিয়া তাঁদেরও হতে পারে।

মায়ের শরীর থেকে  গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ (ভার্টিক্যাল ট্রান্সমিশন)হয় কি না তা এখনও ঠিক ভাবে জানা যায়নি। অন্তত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তাই‌ বলছে।
বুকের দুধের মধ্যে দিয়ে এই ভাইরাস সন্তানের শরীরে যেতে পারে না।

গর্ভাবস্থায় করোনার প্রভাব   
‘‘খুব ভরসাযোগ্য বৈজ্ঞানিক তথ্যের অভাব থাকলেও কিছু কিছু মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, অনেক সময়ই প্রত্যাশিত দিনের আগেই ডেলিভারি হয়ে যেতে পারে এই রোগের সংক্রমণে। তা ছাড়াও গর্ভপাত, গর্ভস্থ সন্তানের নড়াচড়া কমে যাওয়া, মায়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।’’ বললেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় বিশ্বাস।
শরীরের পাশাপাশি ভাবী মায়ের মনকেও এই ভাইরাস ছেড়ে কথা বলে না। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তীর কথায়, অত্যাধিক মানসিক চাপ,হতাশা,বা মৃত্যু ভয় থেকে গর্ভপাতের শঙ্কাও অমূলক নয়।

কী কী মানতে হবেঃ
আর পাঁচ জনের মতোই হ্যান্ড হাইজিন বা কাফ এটিকেট খুব ভাল করে মানতে হবে।
হাঁচি, কাশি, জ্বর হয়েছে এমন মানুষের থেকে দূরে থাকাও বাধ্যতামূলক।
পুষ্টিকর খাবার, যেমন শাকসব্জি, প্রোটিন বেশি করে পাতে রাখুন।
দিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমনো ভীষণ দরকারি।
অযথা দুশ্চিন্তা না করে পছন্দের কাজে সময় দিন।
হালকা ঘরের কাজ অবশ্যই করবেন। উবু হয়ে বসে করতে হয় এমন কাজ এড়িয়ে চলাই ভাল।

কী কী করণীয়
এই লকডাউনের ফলে যাঁরা নতুন মা হলেন, তাঁরা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে যেতে পারছেন না। এমন এক পরিস্থিতিতে মূল সাবধানতাগুলো মেনে চলুন।
সবে সবে যাঁরা গর্ভবতী হলেন, তাঁরা আগে চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে খুব দরকার পড়লে তবেই ক্লিনিকে যান।

গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ দেখা খুব জরুরি। সে ক্ষেত্রে নিজেরাই ডিজিটাল মেশিনের সাহায্যে দেখে পর্য়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারেন। ইউএসজি স্ক্যান আর কিছু রক্তপরীক্ষা করে নিতে তো হবেই। সেটা একটু ফাঁকায় ফাঁকায় গিয়ে করাই ভাল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ আছে এমন মহিলাদের নর্মাল ডেলিভারিতে খুব কিছু অসুবিধা নেই।

করোনা সংক্রমিত কোনো রোগীর যদি কোনও কারণে সিজারিয়ান সেকশান করতেই হয় তবে সে ক্ষেত্রে স্পাইনাল  অ্যানেস্থেসিয়াতেই করা উচিত। কারণ জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়ার ফলে অনেক ড্রপলেট তৈরি হয় যা পুরো অপারেশন থিয়েটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

করোনায় আক্রান্ত মা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর যদি বুকের দুধ খাওয়ানোর অবস্থায় থাকেন, তা হলে সাবধানতা নিয়ে তা খাওয়াতেই পারেন। কিন্তু বেশি অসুস্থ থাকলে, দুর্বল থাকার কারণে বুকের দুধ এক্সপ্রেস করেও অন্য কাউকে দিয়েও শিশুটিকে খাওয়াতে পারেন। ফর্মুলা ফিড দেওয়ার চেয়ে এটাই ভাল। এটি শিশুর শরীরে ইমিউনিটি বাড়িয়ে করোনা প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/এসকেএস/এজেড