সানির ক্রোধের শিকার যে পাঁচ তারকা

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ১২:০১ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৪৮

বিনোদন ডেস্ক

আশির দশক থেকে শুরু করে টা্না ৩০ বছর বলিউড শাসন করেছেন তারকা সুপারস্টার ধর্মেন্দ্রর বড় ছেলে সানি দেওল। প্রথম সারির নায়কদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। নিজের আগের এবং পরের প্রজন্ম, এই দুই সময়ের নায়কদের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন। এত সাফল্য ও জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ধর্মেন্দ্র-পুত্র খুবই বিনয়ী।

তারকাদের মধ্যে বিনয়ী হিসেবে সানি দেওলের খ্যাতির তারিফ করেন তার সহকর্মীরাও। কিন্তু তার পরেও ইন্ডাস্ট্রির কয়েক জনের সঙ্গে তার সম্পর্কের তিক্ততা কোনোদিন দূর হয়নি। সানি দেওলের অনস্ক্রিন রাগী ভাবমূর্তি তো দর্শকদের মধ্যে সুপরিচিত। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির পাঁচ জন এমন তারকা আছেন, যারা পর্দার বাইরেও সানির ক্রোধের শিকার হয়েছেন।

সানি দেওল আর অনিল কাপুরের মধ্যে টানাপড়েন শুরু ‘জোশিলে’ ছবির সময় থেকেই। সে সময় সানি এবং অনিল দুজনেই ইন্ডাস্ট্রির প্রতিশ্রুতিমান তারকা। কিন্তু ছবির ক্রেডিট কার্ডে সানির আগে দেখানো হয় অনিলের নাম। এতে খুবই রুষ্ট হন ধর্মেন্দ্র-পুত্র।

তবে এ কথা বেশি দিন মনে রাখেননি সানি। তিনি আবার ‘রাম অবতার’ ছবিতে অনিল কাপুরের সঙ্গে অভিনয় করেন। কিন্তু ছবির একটি ফাইট সিকোয়েন্স শুটিংয়ের সময় দুজনের মধ্যে সত্যি সত্যি হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা এমনও বলেন, অনিলের ঘাড় ধরেছিলেন সানি দেওল।

শাহরুখ খানের সঙ্গে সানি দেওলের সম্পর্কের অবনতি হয় নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ‘ডর’ সিনেমার শুটিংয়ে। সে সময় শাহরুখ ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগত। সানি ইতিমধ্যেই তারকা। ফলে যশ চোপড়া প্রথমে সানি দেওলকেই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কোন ভূমিকায় অভিনয় করতে চান, নায়ক না খলনায়ক? সানি বেছে নেন নায়কের ভূমিকা। নবাগত শাহরুখ অভিনয় করেন নেগেটিভ রোলে। তার আগে অনেকেই এই অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

কিন্তু শুটিংয়ের সময়েই ক্ষোভ বাড়তে থাকে সানির। নায়কের মনে হয়েছিল, ছবিতে তার তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে নবাগত শাহরুখের ভিলেনের ভূমিকা। কিন্তু সানির ক্ষোভকে গুরুত্ব দেননি পরিচালক যশ চোপড়া। পরে সানি নিজেই বলেছিলেন, শুটিংয়ের সেটে তাকে অনেক কষ্টে রাগ প্রশমিত করতে হয়েছিল।

ছবি মুক্তির পর সানির রাগ আরও তীব্র হয়। কারণ সব আলো কেড়ে নেন খলনায়ক শাহরুখ খান। তিনিই কার্যত হয়ে ওঠেন ছবির আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দ্র। এই ঘটনা আজও মনে রেখেছেন সানি।

‘শোলে’র জুটি অমিতাভ-ধর্মেন্দ্র পর্দার বাইরেও খুব ভালো বন্ধু। কিন্তু অমিতাভের সঙ্গে সানি দেওলের সম্পর্ক ভালো নয় বলেই বলেন বলিউডের একটা বড় অংশ। কারণ অবশ্য তার বাবার ক্ষোভ।

অনেক সাক্ষাৎকারে ধর্মেন্দ্র বলেছেন, অমিতাভের জন্য তিনি প্রচারের আলো এবং জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন অনেক বার। কিন্তু তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন খোলা মনে। এই ক্ষোভ তার সঙ্গে অমিতাভের সম্পর্কে ছায়া ফেলেনি। কিন্তু অমিতাভের সঙ্গে ধর্মেন্দ্রর ছেলে সানির সম্পর্ক এর পর থেকে নাকি আর কোনো দিনই ভালো হয়নি।

২০০১ সালে সানির অপছন্দের তালিকায় যোগ হয় আমির খানের নাম। সে বছর তাদের দুটি ছবি ‘গাদ্দার’ ও ‘লগান’ মু্ক্তি পেয়েছিল একই দিনে। সানি এবং ‘গাদ্দার’-এর নির্মাতারা অনেক চেষ্টা করেছিলেন, বড় বাজেটের এই ছবি যেন সোলো রিলিজ পায়।

অন্যদিকে আমির খানের প্রোডাকশনের প্রথম ছবি ছিল ‘লগান’। তিনিও চেয়েছিলেন তার ছবির সঙ্গে একই দিনে অন্য ছবি যেন মুক্তি না পায়। কিন্তু সানি বা আমির কেউই নিজেদের অবস্থান থেকে সরলেন না। ফলে ‘লগান’ ও ‘গাদ্দার’ মুক্তি পেল একই দিনে, ২০০১ সালের ১৫ জুন।

দুটি ছবিই তুমুল সফল হয়। বক্স অফিসে বেশি সফল হয়েছিল সানির ‘গাদ্দার’। কিন্তু আমিরের ‘লগান’ হয়ে ওঠে হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম মাইলফলক। অস্কারের মঞ্চেও সাফল্যের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করেছিল এই ছবিটি। এই সাফল্য ভালো ভাবে নাকি মেনে নেননি সানি দেওল। পরবর্তীতে তাই আমিরের সঙ্গে তার সম্পর্কও তিক্ত হয়ে যায়।

অজয় দেবগণের সঙ্গে সানি দেওলের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় ‘লেজেন্ড অব ভগত সিংহ’ ছবির সময় থেকে। ছবির পরিচালক ছিলেন রাজকুমার সন্তোষী। তিনি আর সানি দেওল খুব ভালো বন্ধু।

সানি চেয়েছিলেন, ভগত সিংহের চরিত্রে তার ছোট ভাই ববি দেওলকে সুযোগ দিন রাজকুমার সন্তোষী। কিন্তু রাজকুমার রাজি হননি। তিনি অনড় ছিলেন তার পছন্দ অজয় দেবগণকে নিয়ে। অজয়ই অভিনয় করেন ভগত সিংহের চরিত্রে। ফলে তার প্রতি সানির মনোভাব বিরূপ হয়ে যায়।

সে বছরই ভগত সিংহকে নিয়ে ছবি বানান সানি দেওলও। ছবির নাম ছিল ‘২৩ মার্চ ১৯৩১: শহিদ’। ভগত সিংহের ভূমিকায় ছিলেন সানির ছোট ভাই ববি দেওল। সানি অভিনয় করেছিলেন চন্দ্রশেখর আজাদের চরিত্রে।

কিন্তু সাফল্যের নিরিখে অনেক বেশি এগিয়ে ছিল রাজকুমার সন্তোষীর ছবি। ভগত সিংহের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পান অজয় দেবগণ। এর ফলে তিনিও সানি দেওলের রোষের মুখে পড়েন।

ঢাকাটাইমস/০৯এপ্রিল/এএইচ