করোনায় শিশুরা কম আক্রান্ত হলেও ঝুঁকি বেশি
প্রথমে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, করোনায় শিশুরা আক্রান্ত হয় না। কিন্তু চীনে প্রথম যে শিশুর সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তার বয়স ১৭। সর্বকনিষ্ঠ যে শিশুর শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে, তার বয়স ছিল ৩৬ ঘণ্টা। তাই একথা নিশ্চিত করে বলা যায় না যে, করোনায় শিশুরা আক্রান্ত হয় না। বরং চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, বড়দের চেয়ে শিশুদের ঝুঁকি বেশি। চীনে ১৮ অনূর্ধ্ব নাবালকদের ২.৪ শতাংশ এই গবেষণা প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত রোগাক্রান্ত হয়েছে।
চীন থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি। সে দেশে নাগরিকদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া শুরু হয়েছে। সেখানকার গবেষণা বাকি পৃথিবীর কাছে কাছে এই মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধের হাতিয়ার।
২০২০ সালের ৩১ মার্চ সিচুয়ান প্রদেশের সাউথওয়েস্ট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড বার্থ ডিফেক্টস ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় কোভিড ১৯ রোগের শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের চারিত্রিক লক্ষণ বর্ণনা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে শিশুরা কম আক্রান্ত কেন
এই রোগের প্রাদুর্ভাবের প্রথম পর্যায়ে, কোভিড ১৯ প্রাথমিক ভাবে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যাচ্ছিল। গবেষকরা দেখেছেন শিশুদের রোগাক্রান্ত হবার বিষয়টি নির্ণয় করা দুঃসাধ্য কারণ তারা নিজেদের শারীরিক অবস্থা বা সংস্রবের ইতিহাস বলতে পারে না। গবেষকরা বলছেন, এর ফলে শিশুদের রক্ষা করে, রোগ নির্ণয় করা ও চিকিৎসা করা বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।২০০২-০৩-এ সার্সের প্রকোপের সময়ে ৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যে সারা বিশ্বে আক্রান্তের হার ছিল ০.০২ শতাংশ। তাদের মধ্যে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। মোট আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৭.৯ শতাংশের সংক্রমণ ছিল মারাত্মক।
অন্যদিকে মার্সের প্রকোপের সময়ে ১৬০০-র বেশি রোগীর মধ্যে ১৯ বছরের কম বয়সীদের সংখ্যা ছিল ২.২ শতাংশের কম।
মহামারি সংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে গবেষকরা বলছেন, ৫৬ শতাংশ শিশু পারিবারিক জমায়েত থেকে সংক্রমিত হয়েছে এবং ৪৩ শতাংশ চীনের মহামারিপ্রবণ এলাকায় উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। চীনে প্রথম যে শিশুর সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তার বয়স ১৭। সর্বকনিষ্ঠ যে শিশুর শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে, তার বয়স ছিল ৩৬ ঘণ্টা। সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছিল তার।
গবেষকরা দেখাচ্ছেন শিশুদের ইনকিউবেশনের সময়সীমা প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে বেশি। শিশুদের ক্ষেত্রে এই সময় ৬.৫ দিন ও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সময় ৫.৪ দিন।
ভাইরাসে সংক্রমিত শিশুদের মধ্যে উপসর্গ কম দেখা যায়, তাদের রোগ সারে দ্রুত, এবং তাদের আরোগ্যসম্ভাবনাও তুলনামূলক ভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে বেশি বলে দেখেছেন গবেষকরা।
তবে শিশুদের প্রতিরোধক্ষমতা কম বলে তারা যাতে সম্ভাব্য সংক্রামকদের কাছে না আসতে পারে সে বিষয়ে ধ্যান দিতে বলা হয়েছে গবেষণায়।
এদের বিশেষ গোষ্ঠীভুক্ত রোগী বলে চিহ্নিত করে গবেষকরা বলেছেন – যদিও শিশুদের মধ্যে জটিল রোগাক্রান্তের সংখ্যা কম, বর্তমান ঘটনাসমূহ শিশুচিকিৎসকদের সাবধানতা অলম্বনের পক্ষে যথেষ্ট।
(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/এজেড)