ফেস শিল্ড ও সেফটি গগলস তৈরি করলো ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল ২০২০, ১৯:৩৬

মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা সরঞ্জাম ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস। পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই)-এর সম্পূর্ণতার জন্য এগুলো অত্যাবশকীয়। চিকিৎসকদের মতে, মানসম্পন্ন ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস ছাড়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেয়া নিরাপদ নয়। অথচ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে রপ্তানিকারক দেশগুলো এসব সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে দেশেই ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস তৈরি করলো ওয়ালটন। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের এগুলো বিনামূল্যে সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

দেশের জরুরি প্রয়োজনে রেকর্ড স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নিজস্ব কারখানায় মোল্ড ও ডিজাইন করে চূড়ান্ত উৎপাদনে যাওয়ায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে। করোনা সংক্রান্ত জটিলতার শুরু থেকেই দ্রুততম সময়ে কিভাবে প্রাণঘাতি এ ভাইরাস মোকাবেলায় কাজ করা যায়, সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন ওয়ালটনের প্রকৌশলীরা। ফলে ভেন্টিলেটরসহ চিকিৎসা এবং সুরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে গবেষণা শুরু করেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্বমানের ফেস প্রোটেকটিভ শিল্ড এবং সেফটি গগলস উৎপাদন শুরু করলো ওয়ালটন। এতে করে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।

ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাথমিকভাবে দৈনিক এক হাজার গগলস এবং ১৫ শ’ ফেস শিল্ড তৈরি করছে তারা। তবে চাহিদা অনুযায়ী এর তিনগুণ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ওয়ালটনের। ওয়ালটনের তৈরি ফেস শিল্ড এবং গগলস ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন পেয়েছে।

শনিবার সারা দেশের চিকিৎসকদের মাঝে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে (ডিজিএইচএস) আনুষ্ঠানিকভাবে ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস হস্তান্তর করে ওয়ালটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিজিএইচএস-এর অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার (নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) ডা. রিজওয়ানুল করিম, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মোহাম্মদ মারুফুর রহমান, ওয়ালটনের ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস উৎপাদন প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর প্রকৌশলী আপেল মাহমুদ প্রমুখ।

ডা. মোহাম্মদ মারুফুর রহমান বলেন, করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় ওয়ালটন এগিয়ে এসেছে। চিকিৎসকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা সরঞ্জাম ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস নিজেরাই তৈরি এবং সরবরাহ করেছে। তারা ভেন্টিলেটরসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের কাজ করছে। ইতোমধ্যেই ওয়ালটন বিপুল পরিমাণ পিপিই সরবরাহ করেছে। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, এতো কম সময়ের মধ্যে মোল্ড তৈরি করে ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস তৈরি করেছে ওয়ালটন, যা একটি রেকর্ড বলা চলে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কারখানাসহ অফিস ছুটি থাকলেও দেশের জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় ওয়ালটনের প্রকৌশলীরা দিন-রাত কাজ করছেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রাথমিকভাবে উৎপাদনে গেলেও ফেস শিল্ড এবং গগলসের মান উন্নয়ণের কাজ চলমান রয়েছে। খুব শিগগিরই এন্টি-ফগ প্রযুক্তির গগলস তৈরি হবে। পাশাপাশি ভেন্টিলেটর, পিএপিআর (পাওয়ার এয়ার পিউরিফায়ার রেসপিরেটর), ইউভি ডিসইনফেকট্যান্ট, রেসপিরেটরি মাস্ক ইত্যাদি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরিতে পূর্ণদ্যমে কাজ চলছে।

তিনি জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর খুবই জরুরি। ভেন্টিলেটর তৈরিতে বিশ্বখ্যাত মেডিকেল যন্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিকের ডিজাইন নিয়ে ওয়ালটন কারখানায় কাজ চলছে। আর এতে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়।

ওয়ালটনের আরেক নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম বলেন, দেশে আগে থেকেই প্রোটেকটিভ স্যুট, মাস্ক, গ্লাভস, স্যু কভার, হেড ক্যাপ ইত্যাদি গার্মেন্টস আইটেম তৈরি হচ্ছিল। এবারই প্রথম ব্যাপক আকারে ফেস শিল্ড এবং গগলসের মতো পণ্য তৈরি শুরু করলো ওয়ালটন। এর ফলে করোনাভাইরাসসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগীদের চিকিৎসাকাজে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পিপিই’র দেশীয় উৎপাদন পূর্ণতা পেলো। পরিস্থিতি বুঝে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এসব মেডিকেল পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালটনের উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের চরম এ ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় এই মুহূর্তে চিকিৎসকদের বিনামূল্যে এসব সুরক্ষা সরঞ্জাম দিচ্ছে ওয়ালটন। খুব শিগগিরই আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় খুবই স্বল্পমূল্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

ঢাবির কেমিস্ট্রি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক কামরুল, সম্পাদক আফতাব আলী

বিডিবিএল-সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রথম প্রান্তিক ব্যবসায়িক সম্মেলন

তিন উৎসবে রঙিন এনআরবিসি ব্যাংক

নারীর অধিকার আদায়ে ইসলামী ব্যাংকের মুদারাবা মোহর সঞ্চয়ী হিসাব

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা

ব্যাংক এশিয়া কিনে নিচ্ছে পাকিস্তানি আলফালাহ ব্যাংক

এনসিসি ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মধ্যে চুক্তি

এক্সিম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন মইদুল ইসলাম

ডিএমডি হলেন অগ্রণী ব্যাংকের শামিম উদ্দিন আহমেদ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :