করোনায় স্বপ্ন ভাঙছে ফরিদপুরের ফুল চাষিদের

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল ২০২০, ২৩:৫৮

সারাদেশের যখন করোনাভাইরাসে প্রভাবে কাঁপছে, ঠিক তখন স্বপ্ন ভাঙছে ফরিদপুরের ফুল চাষিদের। যখন অনেকেই কোন কর্মসংস্থানে সুযোগ পাইনি, তখন অনেক যুবক ফুল চাষের দিকে এগিয়ে আসে। স্থানীয় পর্যায়ে ধারদেনা করে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল চাষে। আর এতে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এ অঞ্চলের যুবকেরা। এই চাষে দুই/তিন বছর পেরুতে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে অনেকে। কেউ অধিক আয় করে চাষের পরিধি বৃদ্ধি করে।

সম্প্রতি করোনাভাইরাসে সারা দেশের সাথে ফরিদপুরের যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে এই ফুল চাষিরা। একের পর বন্ধ হয় জাতীয় দিবসগুলো, বন্ধ হয়ে যায় পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান। আর এতে ক্রেতার সংকটে বিক্রয় করতে পারছে না তাদের বাগানে উৎপাদিত ফুল। অনেকটা বাধ্য হয়ে বাগানের ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে তাদের।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ হেক্টরের বেশি জমিতে জনপ্রিয় ফুল জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্র মল্লিকা, গোল্ডেল স্টিক, রজনী গন্ধা, গোলাপসহ বিভিন্ন প্রকার ফুলের চাষ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, চাষিরা বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে ফুল চাষ করে থাকে। তবে সারা বছরই ফুলের চাহিদা থাকে। আর মধ্যে মার্চ ও এপ্রিল মাসে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। ফুল চাষ করে জেলার অনেক চাষিরা স্ববলম্বী হয়ে উঠেছে। কিন্তু করোনার প্রভাবে ক্ষতির মুখে চাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত এসব ফুল চাষিদের সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলার আলীয়াবাদ এলাকার কয়েকটি ফুল বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে কারণে বিভিন্ন জাতীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় চাষিদের ফুল বিক্রয় বা বাজারজাত করতে না পারায় গাছের ফুল গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু বাগানের ফুল ছিঁড়ে ফেলে দিতে হচ্ছে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে ফরিদপুরের ফুল চাষিরা।

ফরিদপুরের গদারধর ডাঙ্গা এলাকার জারবেরা ফুলে চাষি আনোয়ার হোসেন জানান জানান, ফুলকে কেন্দ্র করেই আমাদের সবকিছু। করোনার প্রভাবে আমরা ফুল বিক্রয় করতে পারছি না। অনেক ফুল গাছে শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক ফুল গাছ বাঁচিয়ে রাখতে ফুল ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছি। লেবারের টাকাও দিতে পারছি না। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আমরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারব না।

জেলার আলীয়াবাদ এলাকার আরেক ফুল চাষি লিয়াকত হোসেন জানালেন, পড়ালেখা শেষ করে যখন কোনো চাকরি যোগাড় করতে পারিনি, তখন অনেকের পরামর্শে ফুল চাষে এগিয়ে আসি। ২/৩ পর বেশ ভাল আয়ও হয়েছে। চলতি মৌসুমে ঋণ করে আরো কয়েক প্রকার ফুলের আবাদ করেছি। কিন্ত সর্বনাশা এই করোনা এখন আমার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। জানি না কিভাবে লোনের টাকা শোধ করব। এভাবে চলতে থাকলে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে যাব।

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :