সড়কে বাঁশ-খুঁটি গেড়ে ফরিদপুরে চলছে এলাকাভিত্তিক লকডাউন

প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০২০, ১৫:৫৮

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে লকডাউন। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলা ছাড়াও নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের বাইরে এলাকাবাসীর উদ্যোগেও লকডাউন হচ্ছে। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার নির্দেশনার পর এভাবে বিভিন্ন এলাকাকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয় বিভিন্নস্থানে।

ফরিদপুরের জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়ামহল্লা ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গ্রামেও এভাবে মূল সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী পকেট সড়কগুলোতে এভাবে বাঁশের খুঁটি কিংবা গাছের গুড়ি দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। এতে ওই এলাকার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।

শহরের ওয়ারলেসপাড়া মহল্লার বাসিন্দা পৌর কমিশনার সাবুল চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দিন যতোই যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ততোই বাড়ছে। ইতিমধ্যে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে অনেকে এসেছেন যারা এসব করোনা ভাইরাস বহন করছেন বলে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে। তাই আমরা কোনোরকম ঝুঁকি নিতে রাজি নই। আমাদের মহল্লায় প্রবেশ পথে কেউ গাড়ি বা অন্য যানবাহনে চড়ে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । এছাড়া অপিরিচতদেরও গন্তব্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

শহরের হরিসভা মহল্লার স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার মামুনুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ওয়ার্ড ও ইউনিয়নভিত্তিক কমিটি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে এলাকাভিত্তিক গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাইরে থেকে আগতদের নিয়েই আমরা বেশি উদ্বিগ্ন রয়েছি। যেহেতু এলাকায় কেউ সংক্রমিত হয়নি তাই সতর্কতামূলক আমাদের এই লকডাউনের উদ্যোগ।  

সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের সিএন্ডবি ঘাটস্থ বিহারী কলোনীর বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন মিয়া বলেন, এখানাকার অনেকে ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জে চাকরি করেন। অনেকের আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন সেখানে।  এই সময়ে তাদের কেউ যাতে আত্মীয় বাড়ি বা নিজ বাড়িতেও না আসেন সেজন্য আমাদের এ ব্যবস্থা।

শহরের গোয়ালচামট মোল্যা বাড়ি সড়কের মিজানুর রহমান মিঠু বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার বিনা প্রয়োজনে কাউকে রাস্তায় নামতে নিষেধ করেছেন। এমনকি এক এলাকা থেকে  আরেক এলাকায় চলাচলেও বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় অন্য এলাকার মানুষ যেনো সহজেই এখানে ঢুকে পড়তে না পরেন সেজন্যই এলাকার সড়কের প্রবেশপথে এভাবে আটকে দেয়া হয়েছে।

ফরিদপুর শহর ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামেও এখন এভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে সাধারণ চলাচলের জন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও অ্যাম্বুলেন্স কিংবা পুলিশের টহল ছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে এসব তুলে নিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা আছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি শহর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি করা হয়েছে। মানুষকে ঘরে রাখার জন্য করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে যদি এমন উদ্যোগ নেয়া হয়, তবে সেটিকে সাধুবাদ জানাই। এক্ষেত্রে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মনীতি ও সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/কেএম)