আগুনে জ্বালিয়ে মারার হুমকিতে পালিয়ে এলেন করোনা রোগী

প্রকাশ | ১৯ এপ্রিল ২০২০, ১৭:০৭

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হবে বাড়ির মালিকের হুমকি ও চাপে লক্ষ্মীপুর থেকে পালিয়ে কুমিল্লায় এসেছেন কার্তিক দাস (৩৫) নামে করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তি। তিনি কক্সবাজারে ব্যাগের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে চাকরি করতেন। আক্রান্ত ব্যক্তি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া গ্রামের স্বহদেব দাসের ছেলে। লকডাউন হওয়ার পর চলে আসেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের ভাড়া বাসায়। করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার চাপ দেন বাড়ির মালিক। নিরুপায় হয়ে ঘর ছাড়েন তিনি। চলে আসেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট রেলওয়ে স্টেশনে।

বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে তাকে উদ্ধার করে আইসোলেশন সেন্টারে পাঠায় স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার রাত ১২টার দিকে তাকে জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নে পাঠিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

জানা যায়, কক্সবাজার জেলা সদরের কলাতলী এলাকায় একটি কোম্পানিতে শ্রমিক পদে চাকরি করতেন কার্তিক। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কক্সবাজার জেলাকে লকডাউন ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে যায় কারখানা। এরপর তিনি গত ১২ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ আঙ্গারপাড়া দাসবাড়িতে ভাড়া বাসায় স্ত্রী-সন্তানদের কাছে চলে আসেন। এমন অবস্থায় তার করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। পরদিন স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠায়। গত ১৬ এপ্রিল তার ফলাফল পজিটিভ এলে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন বাড়িটি লকডাউন করে দেয়।

কার্তিক দাস জানায়- এরপর বাড়ি ছাড়ার জন্য তাকে চাপ দেয় বাড়ির মালিক। অন্যথায় তাকে বাইরে দিয়ে তালা দিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এতে নিরুপায় হয়ে শনিবার বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি চালের ট্রাক যোগে কুমিল্লার লাকসামে চলে আসে। পরে লাকসাম রেললাইন হয়ে হেঁটে নাঙ্গলকোট রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি অবগত হয়ে কার্তিকের নাম্বারে আমি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করি। তার দ্বারা যেন সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, এজন্য তাকে দ্রুত উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসককে অবহিত করি এবং নাঙ্গলকোট থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করি।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি বখতিয়ার জানান, পুলিশ সুপারের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লামিয়া সাইফুল ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ আমরা রেলস্টেশনে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লামিয়া সাইফুল জানান, করোনা আক্রান্ত এ রোগীকে গোহারুয়া ২০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন সেন্টারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/এলএ)