নড়াইলে টিসিবির তেলের খালি বোতলের রহস্য কী?
নড়াইল শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র রূপগঞ্জ এলাকায় চিত্রা নদীতে টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) সায়াবিন তেলের বেশ কিছু খালি বোতল পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রশাসন কোনো কূলকিনারা উদঘাটন করতে পারেনি। এলাকাবাসীর মধ্যে এ নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকজন মাঝিসহ এলাকাবাসী জানান, টিসিবির সিলযুক্ত সায়াবিন তেলের শতাধিক খালি বোতল গত শনিবার সন্ধ্যার পর নড়াইলের রূপগঞ্জ এলাকায় চিত্রা নদীতে ভাসতে দেখা যায়। এ অবস্থায় রূপগঞ্জ-পংকবিলা খেয়াঘাটের কয়েকজন মাঝি বেশ কিছু খালি বোতল উদ্ধার করে নৌকায় উঠান। এর মধ্যে দুই ও পাঁচ লিটারের বোতল রয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, অবৈধ সুবিধা নিতে এসব বোতল থেকে তেল ঢেলে রেখে খালি বোতলগুলো পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।
নড়াইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) জাহিদ হাসান বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। তবে কে বা কারা, কোন এলাকা থেকে এ ধরনের কাজ করেছে তা এ মুহূর্তে শনাক্ত করা বেশ কঠিন। আমরা পর্যবেক্ষণে আছি।
এদিকে নড়াইলের রূপগঞ্জে সায়াবিন তেল অবৈধভাবে বিক্রি করার অপরাধে গত ১৬ এপ্রিল দুপুরে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে টিসিবির ডিলার পরিতোষ কুন্ডুও রয়েছেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় চার দোকানির কাছ থেকে টিসিবির ৬৭ লিটার সায়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। এ তেল তারা টিসিবির ডিলার পরিতোষ কুন্ডুর কাছ থেকে কেনেন। এ ঘটনায় ডিলার পরিতোষ কুন্ডুকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা এবং খুচরা পর্যায়ের চার দোকানিকে আড়াই হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরিতোষ কুন্ডু কারাগারে থাকায় তার ছেলে আকাশ কুন্ডু জরিমানার ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।
এর আগে ১৪ এপ্রিল দুপুরে ডিলার পরিতোষ কুন্ডুসহ এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। টিসিবির ১৮ বস্তা চিনি (বস্তাপ্রতি ৫০ কেজি) এবং ২৪ বস্তা ছোলা (বস্তাপ্রতি ২৫ কেজি) অবৈধভাবে বেচাকেনা ও মজুদ রাখার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর দুই দিনের ব্যবধানে সায়াবিন তেল অবৈধভাবে বেচাকেনার ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত পৃথক অভিযানে কালোবাজারে বিক্রি হওয়া ৮৭ লিটার টিসিবির তেল এবং ৫০ কেজি চিনিসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কালিয়া উপজেলার সাতবাড়িয়া বাজারের রুবেল ফরাজির দোকান থেকে ৮০ লিটার এবং পাটেশ্বরী বাজারের আকরামুল শেখের দোকান থেকে সাত লিটার টিসিবির সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। এ সময় রুবেল ও আকরামুলকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া কালিয়ার জামরিলডাঙ্গা বাজারের তৌহিদ ইসলামের দোকান থেকে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা চিনি উদ্ধারসহ তৌহিদকে আটক করা হয়। এরপর টিসিবি পণ্য বিক্রেতা পেড়লি বাজারের সুভাষ সাহাকে আটক করে পুলিশ।
সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়া সার্কেল) রিপন চন্দ্র সরকার বলেন, টিসিবি পণ্য কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/কেএম)