তাড়িয়ে দেয়া পরিবারের ঘর ভাড়া দিলেন ওসি

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
| আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২০, ১১:৩৮ | প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০২০, ১১:৩৬

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে স্তব্ধ গোটা দেশ। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সব শ্রেণিপেশার মানুষ অবস্থান নিয়েছেন নিজ নিজ ঘরে। শহরের যে সড়কগুলোতে প্রতিদিন দাঁপিয়ে বেড়াতো শত শত গাড়ি করোনায় সেসব সড়কে বিরাজ করছে পিনপতন নীরবতা। গোটা দেশ এক ধরনের লকডাউনের মধ্যে থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলোর দিন কিভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তিত তারা। আর যাদের বাসা ভাড়া দিয়ে থাকতে হয় তাদের তো চিন্তার পরিধিটা আরও বেশি।

তেমনি কর্মহীন হয়ে পড়ে একটি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকা থানার ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন। বাসা ভাড়া দিতে না পারায় বাড়ির মালিক যখন তাদের বাসা থেকে বের করে দেন তখন পথে অবস্থান করা পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়ান ওসি মাইন। বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত। পরিশোধ করেন তাদের ঘর ভাড়া। ওসির এমন মহানুভবনতা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারটির সদস্যরা। প্রাণভরে দোয়া করেন ওসির জন্য।

ঘটনাটি গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকের। ওই সময়ে নিয়মিত টহল দিতে গাড়িতে চেপে যাচ্ছিলেন ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন। ভালুকা পৌর এলাকায় খাঁনবাড়ির মোড়ে মানবশূন্য সড়কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ওসির কানে ভেসে আসে কয়েকজনের কান্নার আওয়াজ। মানবশূন্য সড়কের পাশে আওয়াজ শুনে থেমে যায় ওসির গাড়ি। দেখতে পান সড়কের পাশে বসে এক বৃদ্ধ নারী, তার ছেলে, পুত্রবধূ ও দুই শিশু সন্তানকে কাঁদতে।

তখন গাড়ি থেকে নেমে কান্নার কারণ জানতে চান ওসি। তখন তারা ভাড়া দিতে না পারায় তাদের বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার কথা ওসিকে অবহিত করেন। কোথায় যাওয়ার জায়গা না পেয়ে তারা এখানে বসে কাঁদছিলেন।

অসহায় পরিবারটি জানায়, লকডাউনের জন্য সব বন্ধ। কোনো কাজকর্ম নেই। বৃদ্ধার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। তারা ভালুকায় থেকে অটোরিকশা চালাতো। বর্তমানে সবই বন্ধ। ঘরে খাবার নাই। কিভাবে পরিশোধ করবে বাড়ি ভাড়া। এমন অবস্থায় বাসার মালিক বাসা থেকে বের করে দেয়ায় তারা সড়কের পাশে অবস্থান নেন।

এসব কথা শোনার পর সড়কের পাশের বাড়ির মালিক আজিজুল হককে ডেকে আনেন ওসি মাইন উদ্দিন। ভাড়া পরিশোধ করে অসহায় পরিবারটিকে তুলে দিয়ে আসেন ঘরে।

জানতে চাইলে ওসি মাইন উদ্দিন জানান, ‘অসহায় একটি পরিবারকে ঘরে তুলে দিতে পেরে ভাল লাগছে। তাছাড়া তাদের কোনো সমস্যা হলে আমার সঙ্গে পরিবারটিকে যোগাযোগ করতে বলেছি।’

ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :