প্রাণীবাচক গালি, কোন অধিকারে?

স্বকৃত নোমান
 | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২০, ১৪:১০

ক্ষেত্র বিশেষ গালির একটা উপযোগিতা আছে। বিক্ষুব্ধ মানুষটির ভেতরে ঘুরতে থাকা ক্ষোভ কখনো কখনো গালি হয়ে বেরিয়ে যায়। গালিটা দিতে না পারলে ক্ষোভটা ভেতরে থেকে যেত, যা তার শরীর ও মনের জন্য ক্ষতির কারণ হতো। বাঙালিদের মধ্যে গালির যে বৈচিত্র্য তা পৃথিবীর অন্য কোনো জাতির মধ্যে আছে কিনা জানি না। থাকতে পারে। তবু মনে হয়ে গালিবৈচিত্র্য বাঙালিদের মধ্যেই বেশি। গালির কত যে রঙ, কত যে রূপ, কত যে বাহার! গালি কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী, তা জানতে আবদুল মান্নান স্বপন সম্পদিত ‘গালি অভিধান’ বইটা পড়া যেতে পারে।

আমার বাড়ি ফেনীর সীমান্তবর্তী এলাকায়। বাড়ি থেকে কয়েক মিনিট হাঁটলেই ত্রিপুরা বর্ডার। র‌্যাডক্লিপ মানচিত্র আঁকার সময় পেন্সিলটা একটু হেলিয়ে দিলেই আমাদের বাড়িটা ত্রিপুরায় পড়ে যেত। আমাদের মধ্যে যত না নোয়াখালীর সংস্কৃতি, তার চেয়ে বেশি ত্রিপুরার সংস্কৃতি। আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সব ত্রিপুরা কেন্দ্রিক। আমাদের অঞ্চলে গালির এমন ব্যবহার যে, শহরবাসী কোনো ‘ভদ্রলোক’ শুনলে তার কানে তালা লেগে যেতে পারে। যেসব ছেলেপিলে গালাগালি করত, ছোটবেলা তাদের কাছ থেকে আমাদের দূরে রাখা হতো, যাতে আমরা সেসব গালি শিখতে না পারি। কিন্তু যতই দূরে রাখা হোক না কেন, ঠিকই আমরা শিখে গেছি।

আমাদের এলাকায় গালিকে বলা হয় ‘বো’, ‘বো গাওয়া’ বা ‘কবি গাওয়া’। কবি গাওয়া মানে বুঝেছি। আগেকার দিনে কবিগানের আসরে গ্রামীণ কবিরা যে ধরনের খিস্তি-খেউড় রতেন সম্ভবত সেখান থেকে ‘কবি গাওয়া’ এসেছে। কিন্তু ‘বো’-এর মানে আমি এখনো আবিষ্কার করতে পারিনি। যেমন পারিনি আমার আব্বার দেওয়া একটা গালির অর্থ। তিনি রেগে গেলে আমাকে বা তাঁর ছাত্রদের গালি দিতেন : বেয়াদব, বেত্তমিজ, নাফারমান, নালায়েক, নাখান্দা, বোচোড়া। এগুলো ছিল তার কমন গালি। সব কটির অর্থ বুঝেছি, বুঝিনি কেবল ‘বোচোড়া’র অর্থ। অনেক ঘেঁটেঘুটেও এর অর্থ উদ্ধার করতে পারিনি।

যাই হোক, গালির ফিরিস্তি দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে বাঙালি মানুষের প্রাণীবাচক কিছু গালি নিয়ে কয়েকটি কথা বলা। প্রাণীবাচক গালিগুলো হচ্ছে―গরু, দামড়া, বলদ, কুকুর, কুত্তা, কুত্তার বাচ্চা, গাধা, শূকর, শুয়র, শুয়োরের বাচ্চা। আরো থাকতে পারে। আপাদত এ ক’টিই মনে পড়ছে।

প্রাচীনকাল থেকে গরু মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী। মানুষ যখন ভূমি কর্ষণ শিখল তখন থেকেই গরুকে কাজে লাগল। শুধু কর্ষণ নয়, শস্য মাড়াই, আখ মাড়াই, শস্য ভাঙানির কাজেও গরুকে কাজে লাগায়। চাকা আবিষ্কারের পর গরুর পেছনে জুড়ে দেওয়া হলো গাড়ি। পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু পানীয় দুধ দেয় গরু। মানুষ গরুর মাংস খায়, চামড়া দিয়ে জুতা বানায়, হাড় ও শিঙ দিয়ে বোতাম, শোপিস বানায়। অথচ মানুষ এই উপকারী প্রাণীটিকে গালি হিসেবে ব্যবহার করে। গরু ও মহিষ কাছাকাছি গোত্রের হলেও গরুই কিন্তু সবচেয়ে উপকারী। মানুষ কিন্তু মহিষকে গালি হিসেবে ব্যবহার করে না। যত দোষ মানুষের সবচেয়ে উপকারী বন্ধু গরুর। অকৃতজ্ঞতা আর কাহাকে বলে!

মানুষের দ্বিতীয় উপকারী প্রাণীটির নাম কুকুর। মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী। কখনো সে বিশ্বাস ভাঙে না। এই প্রাণীটি শিকারে সহায়তাকারী, ফসলের রক্ষণকারী, ঘরবাড়ি, দোকান ও অফিস পাহারা দেয়, বাড়িতে বা গ্রামে বিষধর সাপ দেখলে, চোর-ডাকাত বা অচেনা লোক দেখলে ডাকতে শুরু করে। বিপদের সংকেত দেয়। অপরাধের উৎস সন্ধান ও অপরাধীকে শনাক্ত করে কুকুর। ডগ স্কোয়াড নামে কুকুরের বাহিনিও রয়েছে এখন। তবু মানুষ কুকুরকে ঘৃণা করে। অপরকে কুকুর, কুকুরের বাচ্চা, কুত্তা, কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয়।

কুকুরের প্রতি মানুষের এই ঘৃণার কিছুটা এসেছে ধর্মশাস্ত্র থেকে। ইসলাম, খ্রিষ্ট, ইহুদি, হিন্দু ধর্মে কুকুরের মাংস অবৈধ। হিন্দু-মুসলমান দুই ধর্মেই কুকুর অস্পৃশ্য প্রাণী। আবার একই সঙ্গে কিন্তু কুকুরে মাহাত্ম্যকীর্তনও হয়েছে এই দুই ধর্মে। মুসা নবির সাতজন যুবক অনুসারী, যাদেরকে বলা হয় আসহাবে কাহাফ, বিপক্ষদলের ভয়ে একটা কুকুরকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল পাহাড়ে। আশ্রয় নিয়েছিল একটা গুহায়। ঘুমিয়ে পড়েছিল সেখানে। এক ঘুমে কেটে গিয়েছিল তিন শ বছর। তাদের সঙ্গে ছিল একটি কুকুর। সেই কুকুরটিও নাকি বেহেশতে যাবে।

আমার বাবা ছিলেন খুব গল্পবাজ মানুষ। আমাদের কোনো অন্যায় দেখলে দাঁড় করিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প শোনাতেন। সেসব গল্পের ভাঁজে ভাঁজে গুঁজে দিতেন উপদেশ। ছোটবেলায় তার কাছে একটি গল্প শুনেছিলাম। এক বেশ্যা একবার এক মরুপথ দিয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে দেখল একটি কুকুর জিব বের করে হাঁফাচ্ছে। খুব পীপাসার্ত। পানি না পেলে মরে যাবে। সেই বেশ্যা তার ওড়নাটি পেঁচিয়ে কুয়ায় ফেলল। সেই ভেজা ওড়নাটি চিপে পানি বের করে কুকুরকে খাওয়াল। এই পুণ্য কাজটির জন্য সেই বেশ্যার জীবনের সমস্ত পাপ নাকি মাফ হয়ে গিয়েছিল। এই ধরনের গল্প ইসলামি ধর্মশাস্ত্রের কোথাও আছে কিনা জানি না। সম্ভবত গল্পটি পারস্য থেকে আসা সর্বপ্রাণবাদী সুফিদের মাধ্যমে ভারতবর্ষে এসেছে।

অপরদিকে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধশেষে মহারাজ যুধিষ্ঠির যখন সপরিবারে পূর্বদিকে চললেন তখন তার পিছু নিয়েছিল একটা কুকুর। মহারাজের যখন স্বর্গযাত্রার সময় হলো, আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তখন দেবতা ইন্দ্র নামলেন। রথে উঠতে বললেন মহারাজকে। মহারাজ বললেন, এই কুকুর আমার ভক্ত। আমার ইচ্ছা, সেও আমার সাথে স্বর্গে যাবে। ইন্দ্র বললেন, মহারাজ, তুমি স্বর্গসুখের মালিক হয়েছ, এই কুকুরকে ছাড়ো। মহারাজ বললেন, আমি আর্য হয়ে অনার্যের আচরণ করতে পারব না। এই কুকুর ছাড়া আমি স্বর্গসুখ চাই না। ইন্দ্র বললেন, যার কুকুর থাকে সে স্বর্গে যেতে পারে না। শেষ পর্যন্ত কী হলো জানেন? কুকুর তার আসল রূপে ফিরে এল। কুকুরটা ছিল আসলে ধর্ম। কুকুরের রূপ ধরে মহারাজকে পরীক্ষা করছিল।

এবার আসি গাধা প্রসঙ্গে। গাধা একটি নিরীহ, কর্মঠ, বুদ্ধিমান এবং মানুষের অত্যন্ত অনুগত প্রাণী। গাধাকে ঘোড়ার ছোট সংস্করণ বলা যেতে পারে। কিন্তু একটি গাধা একই আকারের একটি ঘোড়া থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী প্রাণী। গাধার স্মৃতিশক্তি অবিশ্বাস্য। পঁচিশ বছর আগের এলাকা এবং অন্য গাধাদের তারা চিনতে পারে। প্রচণ্ড জেদি ও আত্মরক্ষা করার প্রবল ক্ষমতা আছে তার। গাধাকে ভয় দেখিয়ে বা জোর করে কোনো কাজ করিয়ে নেওয়া খুব কঠিন। কোনো কারণে গাধা সহজে চমকে ওঠে না। তারা প্রখর কৌতূহলী। গাধার চিন্তাধারা ঘোড়া থেকে স্বাধীন। নিজের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একটি গাধা মরু পরিবেশে ষাট মাইল দূরে থেকে অন্য গাধার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে। ঘোড়ার চেয়ে তাদের আছে অনেক বড় কান, যা তাদের শীতল রাখতে সহায়তা করে। গাধা একা থাকতে পছন্দ করে না, সঙ্গী হিসেবে অন্য প্রাণী তাদের পছন্দ। পশুপালকদের কাছে গাধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। একজন দক্ষ পশুপালক পশুদের নেতা হিসেবে শক্তিশালী গাধাকে বেছে নেয়। কারণ খামারে পালন করা পশুরা অন্য হিং¯্র পশু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গাধা নেকড়ে বাঘ বা অন্য শিকারীর হাত থেকে সবাইকে রক্ষা করতে পারে সংকেত জানিয়ে।

বিশ্ব সভ্যতার ঐতিহ্য গড়তেও গাধাদের ভূমিকা কম নয়। ভারি ভারি সব উপকরণ বহন করতে ব্যবহার করা হয়েছে গাধাকে। মিশরীয় ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর অধিকাংশ ধাতু বহন করা হয়েছিল গাধার মাধ্যমে। গ্রিসে সংকীর্ণ পথের ওপর কাজ করার জন্যও গাধাকে ব্যবহার করা হয়েছিল। রোমান আর্মির গাধাকে কৃশিপালিত ও পণ্য বহনকারী প্রাণী হিসেবে ব্যবহার করত। ভারতের মরু অঞ্চল রাজস্থান ও জয়পুরে অন্যতম বাহন গাধা। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মালামাল নিয়ে এরা সহজে চলাফেরা করতে পারে। গাধারা বিশ্বের বহু অঞ্চলে জল, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, জমি চাষের কাজে ব্যবহৃত হতো।

গাধারা মাঠ থেকে খুব ভাল তাজা সবুজ ঘাস খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে এবং সেটা সারাটা দিনও হতে পারে। গাধারা তাদের বাচ্চাদের খুব ভালোবাসে। অন্য প্রাণীদের মতো তারা লাথি মারে না। তারা তাদের বাচ্চাদের বুদ্ধিমান প্রাণীদের মতো আগলে রাখে। নিজের বাচ্চা ছাড়াও তাদেরকে অন্য প্রাণীর দায়িত্ব নিতে দেখা যায়। এমন কি প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে তাদের সঙ্গ দেওয়ার কথাও জানা যায়। প্রতিবন্ধীরা গাধাদের সঙ্গে সময় কাটালে মানসিকভাবে অনেক সুস্থবোধ করে। অসুস্থ ঘোড়াদের সঙ্গীও কিন্তু গাধা। কোনো আহত বা অসুস্থ ঘোড়াকে রাখা হয় গাধার সঙ্গে। একটা ঘোড়া থেকে একটি গাধা খুব বেশি পরিছন্ন প্রাণী। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া খুবই সহজ। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে তারা খুবই কম সময় নেয়।

বাকি রইল শূকর। খুবই ঘৃণার সঙ্গে উচ্চারণ করে মানুষ। কেন? শূকর নাকি ইতর প্রাণী। অপবিত্র। ইসলামে এর মাংস খাওয়া হারাম। কারণ আরো আছে। ময়লা-আবর্জনায় গড়াগড়ি খায় শূকর। অথচ প্রাণীবিজ্ঞান বলছে অন্য কথা। শরীরে ঘর্মগ্রন্থি না থাকায় গরমের হাত থেকে বাঁচার জন্য শূকর ঠান্ডা কাদামাটিতে গিয়ে শরীর ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত গড়াগড়ি খায়। শূকরকে যদি ঠান্ডা জায়গায় রাখা হয়, তাহলে কিন্তু শূকর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবন বেছে নেবে। শূকরকে যদি ঠান্ডা এলাকায় রেখে গোসলের সময় যদি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করিয়ে একটি পরিষ্কার খামার ঘরে থাকতে দেওয়া হয়, খেতে দেওয়া হয়, তাহলে শূকর নিজের ঘরকে পরিষ্কার রাখতে খুবই ভালোবাসে। সে যেখানে ঘুমাবে এবং খাওয়া-দাওয়া করবে, কোনোভাবেই সেই জায়গাটাকে সে নোংরা হতে দেবে না। এ ব্যাপারে সে খুবই সতর্ক। প্রাণীবিজ্ঞানীদের মতে, শূকরকে বলা হয় পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে পরিচ্ছন্ন জীবন-যাপন পছন্দকারী প্রাণী। শুধু তাই নয়। পশুবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে শূকর অন্যান্য পোষা প্রাণীর থেকে আসলে অনেক বেশী বুদ্ধিমান। তারা দাবি করেছেন যে, ঠিকমতো শূকরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে সেটি বুদ্ধিমত্তায় কুকুর ও বিড়ালকে অনেক পেছনে ফেলে দেবে।

প্রত্যেকটি প্রাণীই আসলে প্রকৃতির একেকটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। প্রকৃতিগতভাবেই তারা নিজেদের দেহের সাথে মানানসই জীবনযাপনের পদ্ধতি বেছে নেয়। তাদেরকে কিংবা তাদের জীবনযাপনের পদ্ধতিকে ঘৃণা করা কি যৌক্তিক? মানুষ কোন অধিকারে ঘৃণা করে? ধরে নিলাম শূকর নোংরা প্রাণী? কিন্তু মানুষ তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে শূকরের চেয়েও নোংরা। শূকর তো পারমাণবিক অস্ত্র বানিয়ে অন্য শূকরকে হত্যা করে না। শূকর তো দা-বটি-টেঁটা-বল্লম নিয়ে অন্য শূকরকে খুন করে না। মানুষ কাউকে গরু, দামড়া, বলদ, কুকুর, কুত্তা, কুত্তার বাচ্চা, গাধা, শুয়র, শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ার কি অধিকার রাখে? রাখে না। তবু মানুষ অনধিকার চর্চা করে। কারণ সে অকৃতজ্ঞ। গরু, কুকুর, গাধা, শুয়রের চেয়েও সে অকৃতজ্ঞ। বাগে পেলে বাঘে মানুষ খায়, সাপে দংশন করে। কিন্তু মানুষ সাপকে গালি হিসেবে ব্যবহার করে না। বাঘকেও না। উল্টো বরং প্রশংসা করে, ‘সাবাশ! বাঘের বাচ্চা।’ অথচ গালি হিসেবে ব্যবহার করে গরু, কুকুর, গাধা, শূকরের মতো উপকারী ও নিরীহ প্রাণীকে। কতটা অকৃতজ্ঞ মানুষ! তার অকৃজ্ঞতার কোনো শুমার নেই।

লেখক : কথাসাহিত্যিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :