পাকা ধান কাটার শ্রমিক নেই চিতলমারীতে

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২০, ১৬:৪৪

চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কৃষিনির্ভর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমের ধান পাকতে শুরু করেছে। সবুজ সোনালী রঙে ভরে উঠেছে মাঠের পরে মাঠ। কোনো ঝড়বৃষ্টি না হওয়া বিগত বছরের তুলনায় এবছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবুও হাসি নেই এখানকার কৃষকের মুখে। কিভাবে মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। করোনাভাইরাস আতঙ্কে মিলছেনা ধান কাটার শ্রমিক। অন্যদিকে রয়েছে কালবৈশাখীর ভয়। সবকিছু মিলে যেন দিশেহারা এ অঞ্চলের ধান চাষীরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলছেন, এ উপজেলায় ১৮ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে, যার অধিকাংশ চাষি দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন। এ বছর মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। অনান্য বছর থেকে এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমরা আশা করছি এ মৌশুমে ৭৭ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিকটন ধান কৃষকের ঘরে উঠবে।

ধান কাটার শ্রমিক সংকটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে মিটিং করেছি। বাগেরহাট ও খুলনার শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের আনার চেষ্টা করছি। এছাড়াও কৃষি অফিস থেকে ৩০টি ধান কাটার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রতি মন ধানের দাম ৯০০ টাকা পেলে কৃষক লাভবান হবে।

এ উপজেলার খড়মখালী গ্রামের কংকন মজুমদার, মনিমহোন হীরা, অসীম বিশ্বাস, কৃষ্ণ রানা, বড়বাড়ীয়া গ্রামের মিল্টন শেখ, ডুমুরিয়ার হরেন্দ্রনাথ মন্ডলসহ কয়েকজন চাষি  জানান, লকডাউনের যে খবর শুনছি তাতে মনে হয় এবছর মাঠের পাকা ধান ঘরে আসবে না। প্রতিবছর খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা থেকে ধান কাটার শ্রমিকরা আসতো। করোনা ভাইরাসের ভয়ে তারা আসতে পারছেনা। এখন কী দিয়ে কী করবো মাথায় আসছেনা। স্থানীয় যে শ্রমিক আছে তাতে সামাল দেয়া সম্ভব নয়। এর মধ্যে যদি শীলাবৃষ্টি ও কাল বৈশাখীঝড় হয় তাহলে বাঁচার উপায় থাকবেনা। আবার শুনেছি নতুন ধানের বাজার ভালো না। ধান চাষ করতে আমাদের একর প্রতি খরচ আছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। খুব ভালো ফলন হলে প্রতি একর জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মন ধান উৎপাদন হয়। হাজার টাকার কমে ধানের মন বিক্রি করলে চালান বাঁচবে না।

বাগেরহাট জেলা কৃষক সমিতির নেতা কমরেড পংকজ রায় বলেন, এই মুহূর্তে আমরা কঠিন সময় পার করছি। নোবেল করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর থাবায় আমরা ক্লান্ত। আমাদের এখনই উচিৎ দলমত নির্বিশেষে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কৃষকের পাশে দাঁড়ানো। তাদের ঘাম ঝরানো সোনার ফসল ঘরে তুলে দেয়া। পাশাপাশি সরকারিভাবে ধানের দাম ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা হওয়া দরকার এবং কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা প্রয়োজন।

(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/কেএম)