হোম কোয়ারেন্টাইনে ৩০ চিকিৎসক: জামালপুরে স্বাস্থ্যসেবা ‘ব্যাহত’
করোনায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ছয় স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৩০ জন চিকিৎসকসহ ৪৫ স্বাস্থ্য কর্মী হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এতে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত জেলার হাজারও মানুষ।
তবে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. উত্তম কুমার সরকার বলেছেন, অন্যান্য চিকিৎসকদের সহায়তায় জরুরি চিকিৎসা সেবাসহ স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
লকডাউন জামালপুরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত কয়েক দিনে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও), চারজন স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন বাবুর্চি করোনায় আক্রান্ত হন। হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালের সহকারী পরিচালকসহ ৩০ চিকিৎসক, ১০ জন নার্স, পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্মী-ক্লিনিয়ার হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যান। এতে চিকিৎসক সংকটে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক সংকটে প্রতিদিন শত শত মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গুরুতর আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে আসার পরও বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে হয়। আবার জরুরি বিভাগে গিয়েও তেমন কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। অনেক সময় জরুরি বিভাগ গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ভর্তি করলেও চিকিৎসক না থাকায় এবং চিকিৎসাসেবা না পেয়ে চলে যেতে হয় অনেক রোগীকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের আশপাশে থাকা ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানান, এই হাসপাতালে বহির্বিভাগে প্রতিদিন হাজারও মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন ৪০০-৫০০ রোগী। করোনার কারণে এখন প্রায় রোগী শূন্য অবস্থায় রয়েছে হাসপাতালটি। গুরুতর আহত বা গুরুতর অসুস্থ কিছু রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসলেও অনেকেই চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা নেই বললেই চলে।
তবে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. উত্তম কুমার সরকার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। বলেন, গত কয়েক দিনে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সংস্পর্শে থাকায় সহকারী পরিচালকসহ ৩০ জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স ও পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্মীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের এই সংকট কাটিয়ে উঠতে অন্যান্য হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক এনে জেনারেল হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। অপর দিকে হোম কোয়ারেন্টাইকে থাকা চিকিৎসকসহ অন্যান্যদের নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল পাওয়া গেলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা চিকিৎসকরা আবার চিকিৎসাসেবায় যোগ দেবেন বলে আশা করছেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এলএ)