সম্প্রীতির বন্ধন দেখাল মাইজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:১৭

করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় খেঁটেখাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রামের আর্থিক সচ্ছল ব্যক্তিরা। তারা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মতো সংগ্রহ কর রমজানের শুরুতেই গ্রামের ১১৫টি পরিবারকে উপহারসামগ্রী হিসেবে খাদ্য সহায়তা দেয়। এর পুরো অর্থ সহায়তা করেছেন গ্রামের সচ্ছল বাসিন্দারা। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মাইজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দারা এ সম্প্রীতির বন্ধন দেখিয়েছেন। নিয়েছেন ব্যতিক্রমী এমন উদ্যোগ ।

উপহার হিসেবে প্রতি পরিবারকে ১৫ কেজি চাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি আলু ও ১ কেজি ছোলা দেওয়া হয়েছে। আর তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে। ফলে সহায়তার জন্যে তাদের দাঁড়াতে হয়নি কোন লাইনে। এমনকি যাদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে তোলা হয়নি তাদের কোন ছবিও।

এ বিষয়ে মাইজবাড়ী গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা এসএম ওয়াহিদুর রহমান বাদল বলেন, অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহায়তা করতে গ্রামের সবাই এগিয়ে এসেছেন। বাইরে যারা থাকে, চাকরি ও ব্যবসা করেন; তারা গ্রামের মুরব্বিদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ উদ্যোগ নেয়। যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে তাতে অনেক পরিবারের হয়তো ১৫ দিনের সমস্যা লাঘব হবে। অন্যান্য গ্রামের বাসিন্দারাও এমন উদ্যোগ নেবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

গ্রামের আরেক বাসিন্দা শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামে শুধু চাকুরিজীবী নয়, সমাজে প্রতিষ্ঠিত অনেক ব্যক্তি রয়েছেন। সবাই এই উদ্যোগে অংশ নিয়েছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম এগিয়ে আসায় আমরা উচ্ছ্বাসিত। ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ গ্রামে অব্যাহত থাকবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

তরুণ শিক্ষক আতাউর রহমান দিদার বলেন, ‘শ্রমজীবী যারা আছেন, দিন আনে দিন খায়, করোনার কারণে তাদের কষ্ট হচ্ছিল। সরকারের যথেষ্ট সহায়তার পরও গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আমরা এ উদ্যোগ নিই। আমাদের এই সম্মিলিত প্রয়াস তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও কমাবে বলে বিশ্বাস করি। দেশের অন্যান্য গ্রামের বাসিন্দারাও যদি এভাবে এগিয়ে আসেন, নিজ গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ান; তাহলে করেনার প্রভাব মোকাবিলা কিছুটা হলেও সহজতর হবে।

মাইজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মী এমদাদুল হক তুহিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের গ্রামের বাসিন্দারা বিপদের সময় এক অপরের পাশে দাঁড়ান। সমাজে প্রতিষ্ঠিত গ্রামের ধনী ব্যক্তিরা সব সময় এগিয়ে আসেন। গ্রামের একজন প্রয়াত শিল্পপতি থাকতেন এর সর্বাগ্রে। এছাড়া অন্যান্য ধনী ব্যক্তিদের অবস্থানও একই রকম ছিল। গ্রামের মুরব্বি ও ধনীদের পাশাপাশি ঈদ ও পার্বনে এলাকার তরুণরা তাদের সাধ্যমত প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারের সম্মিলিত এই উদ্যোগটি গ্রামের মুরব্বিরা নিয়েছেন। তরুণসহ সব বয়সী মানুষ এতে অংশ নেয়। দেশের প্রতিটি এলাকায় যদি একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে সরকারের পক্ষে করোনা মোকাবিলা যেমন সহজতর হবে, তেমনি অসচ্ছলদের কষ্টটাও কিছুটা দূর হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/জেআর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :