‘করোনাকালে রোজায় সতর্কতার পাশাপাশি আমলও করতে হবে’

প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২০, ১৮:১৮ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০, ১৯:০৫

তানিয়া আক্তার, ঢাকাটাইমস

চলছে মহিমান্বিত মাস রমজান। মুসলিম উম্মাহর কাঙ্ক্ষিত এই মাসটিতে এবার করোনার ভয়াল আগ্রাসনে সবাই ঘরবন্দি। এই অবস্থায় রোজাদারের জন্য কী করণীয় এবং রোজার প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় নিয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও বায়তুল মোকাররমের বিকল্প ইমাম মুফতি ওয়ালিউর রহমান খান আযহারী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তানিয়া আক্তার

করোনায় রোজা রাখায় কী করণীয়?

করোনা ভাইরাসে যিনি আক্রান্ত হবেন অথবা লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করবেন তিনি রোজা রাখবেন না। তবে রোজা না রাখলেও করোনার যে স্বাস্থ্যবিধিগুলো রয়েছে সেগুলো মেনে চলবেন। তার যে রোজাগুলো অসুস্থ হওয়ার কারণে ভাঙা পড়েছে সেই রোজাগুলো পরে রাখতে হবে। সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি আমলও করতে হবে। তারাবি পড়তে হবে, শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে হবে।

ঘরবন্দি সময়ে রোজায় নারী এবং পুরুষের ইবাদত কেমন হবে?

সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের ওপর। এছাড়া সুন্নত এবং নফল রোজাগুলো আদায় করা। এরপর দীর্ঘ সময় জায়নামাজে বসে দরুদ পড়া কিংবা সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ জিকির করা। করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি লাভের জন্য দোয়া করা যেতে পারে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা। তবে কিছুই না করতে পারলে শুধুই আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তে হবে। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফে আছে- যদি কেউ বেশি বেশি অর্থাৎ হাজার কিংবা লক্ষাধিক বার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ে তাহলে তার কাছে আজাব আসে না। কুরআনে আরও উল্লেখ আছে, যে কেউ যদি নবীজি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনীগ্রন্থ পাঠ করে বা আলোচনা করে আজাব আসবে না।

সেহরিতে কিছু না খেলেও কি রোজা হবে?

সেহরি খাওয়া সুন্নাত। ফলে কেউ আগে খেলে কিংবা শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখলেও রোজা হবে। তবে রোজা হলো ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত না খেয়ে থাকা। তাই কেউ যদি সেহরিতে না খেতে পারে তারপরও রোজা হবে।

রোজা রেখে চোখে বা কানে ড্রপ নেয়া কিংবা ইঞ্জেকশন ইনসুলিন নেয়া যাবে কি?

রোজা রেখে অবশ্যই ড্রপ, ইনজেকশন, ইনসুলিন নেয়া যাবে। তবে সেগুলো গড়িয়ে কণ্ঠনালীতে পৌঁছালে রোজা ভেঙে যাবে।

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে পারবে কি?

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে পারবে। তবে ডাক্তার যদি বলেন রোজা রাখায় তারা অসুবিধায় পড়তে পারেন তাহলে সেই রোজাগুলো পরে রাখবেন। বেশি অসুস্থ হলে রাখবেন না।

কোন ভুলগুলো রোজা ভেঙে দিতে পারে?

খাদ্যনালীতে পানীয় বা খাবার পৌঁছালেই রোজা ভেঙে যায়। আর অন্য ভুলগুলো যেমন খারাপ আচরণ করলে, মিথ্যে কথা বললে রোজা হালকা হবে তবে ভেঙে যাবে না অর্থাৎ রোজার মান কমে যাবে।

যাদের জন্য রোজা অসম্ভব হয়ে পড়ে তারা কী করবেন?

বয়োবৃদ্ধ যারা আছেন বা আর সুস্থ হবেন না তারা রোজা না রাখতে অক্ষম হলে আরেকজন গরিব মানুষকে কমপক্ষে ৭০ টাকা করে দিতে হবে বা খাবার দিয়ে দেবে।

রোজা রাখা আবশ্যক নয় কার জন্য?

শিশুর ক্ষেত্রে রোজা রাখা আবশ্যক নয়। আর যারা খুবই অসুস্থ আছেন তাদের জন্য রোজা আবশ্যক নয়, তবে যখনই সুস্থ হবেন সেই রোজাগুলো রাখতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮এপ্রিল/টিএটি/জেবি)