চিকিৎসক যখন ইয়াবা কারবারি

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১৫:৪০

রাজধানীতে ইয়াবা পাচারকালে ১৭ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন রেজাউল হক (৪৫) নামে এক চিকিৎসক। বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার দাউদকান্দি টোল প্লাজায় একটি প্রাইভেটকার তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাসহ ওই চিকিৎসক ও গাড়িচালক ধলু ফরাজীকে আটক করে। এসব ইয়াবা চট্টগ্রাম থেকে রাজধানাধীতে নেয়া হচ্ছিল। তিনি রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন।

ডা. রেজাউল জেলার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের স্কুল শিক্ষক সামছুল হকের পুত্র।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

তিনি জানান, একটি প্রাইভেটকারযোগে চট্টগ্রামের লোহাগড়া এলাকা থেকে ঢাকায় ইয়াবা পাচার হচ্ছে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম দাউদকান্দি টোল প্লাজায় অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে (ঢাকা মেট্রো-গ-২৩-৩৭১৯) প্রাইভেটকারটি সেখানে পৌঁছলে তা আটক করা হয়। পরে এতে তল্লাশি চালিয়ে ১৭ হাজার ইয়াবাসহ চিকিৎসক রেজাউল হক এবং চালক ধলু মিয়া ফরাজী (৩৬) আটক করা হয়। চালক ধলু মিয়া শরীয়তপুর জেলার ঘোষাইহাট উপজেলার বড়কাছনা গ্রামের মৃত ওমর আলীর পুত্র।

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন, আজিম উল আহসান, তানভীর সালেহীন ইমন, নাজমুল হাসান রাফি, ডিআইও-১ মাঈনুদ্দিন ও ডিবির ওসি আনোয়ারুল আজিম, অভিযানে অংশ নেয়া ডিবির এলআইসি টিমের প্রধান পুলিশ পরিদর্শক ইকতিয়ার উদ্দিন, পুলিশের উপপরিদর্শক পরিমল চন্দ্র দাস ও এসআই নজরুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার ওই চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানান, সে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকার শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে। পরে সে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকরি নেয়।

ইয়াবা ব্যবসার বিষয়ে রেজাউল জানান, ‘ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে যাওয়ার পেছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে, আগের ঘটনায় তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়, তবে এবারের ইয়াবা চালানটি সে জিদ করে ঢাকায় নিতে চেয়েছিল।’

বর্তমানে তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে এফসিপিএস ৩য় পার্টে অধ্যয়ন করছে। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার উত্তরা এলাকায় বসবাস করছে বলেও পুলিশকে জানিয়েছে।

অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া ডিবির এলআইসি টিমের প্রধান পুলিশ পরিদর্শক ইকতিয়ার উদ্দিন ও পুলিশের উপ-পরিদর্শক পরিমল চন্দ্র দাস জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ওই চিকিৎসক জানিয়েছে, ‘মাঝে মধ্যে সে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে নিজেই, কখনো লোক পাঠিয়ে এসব ইয়াবা ঢাকায় নিয়ে একাধিক সিন্ডিকেটের নিকট বিক্রি করত। গাড়িতে ডাক্তারের স্টিকার থাকত বলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ এড়িয়ে সে খুব সহজেই মাদক নির্ধারিত স্থানে আনা নেয়ার কাজ করতে পারত। এর আগেও সে পুলিশের হাতে মাদক নিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিল, ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় মাদক মামলা রয়েছে। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় রাতে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। উদ্ধার ইয়াবার মূল্য প্রায় ৫১ লাখ টাকা।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার সূত্র ধরে ওই চিকিৎসকের মাদক-কেনা বেচার সাথে জড়িত অন্যান্য সহযোগীদের বিষয়েও তদন্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :