হ্যাঁ, আমি আওয়ামী লীগের কবি

প্রকাশ | ০১ মে ২০২০, ১৭:১৭

কবি নির্মলেন্দু গুণ
কবি নির্মলেন্দু গুণ


একটা জিনিস স্পষ্ট হওয়া দরকার। যদিও আমি সরাসরি আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করি না-- কিন্তু আমি মূলত আওয়ামী লীগেরই কবি। আবার আমি মনে করি একইসঙ্গে আমি জনগণেরও কবি।
১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু যখন বাঙালির বাঁচার দাবি ৬ দফা ঘোষণা করলেন, তার পর থেকে আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পক্ষে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েই কবিতা লিখিতে শুরু করেছিলাম।
১৯৬৬-২০২০, মানে গত ৫৬ বছর ধরে আমার কবিতা ও গদ্য রচনার ঐ ধারাটি অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে।
মাঝে-মাঝে, অনেক সময় আমি প্রেমের কবিতা, কামের কবিতা, প্রকৃতির কবিতা এবং সাম্যবাদী ধারার কবিতাও লিখেছি।
তবে রাজনৈতিক সংকটকালে আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর তৈরি করা দল আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে এসেছি।
১৯৯১ এর সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আমাকে নমিনেশন দেয়নি। তাতে কী?
আমি শেখ হাসিনাকে ত্যাগ করিনি। সম্ভবত শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগও আমাকে ত্যাগ করেনি। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে মূলত আমার কবিতাই পাঠ করা হয়। শেখ হাসিনার কণ্ঠে আমার কবিতা আবৃত্তি শুনে আমি খুব খুশি হই। সম্মানিত বোধ করি।
এই বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমি যে মাঝে মাঝে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সমালোচনা করি- তাতে যারা খুশি হন, তারা কেন খুশি হন আমি তা জানি। বুঝি। তাদের প্রসংশায় পথভ্রষ্ট হওয়ার মতো কবি আমি নই, হে বন্ধুগণ। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের জনগণ দুই শিবিরে বিভক্ত নয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষেই আছেন বলে আমার বিশ্বাস।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই তো আমি একটা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। আওয়ামী লীগ তো জনগণেরই প্রতিনিধিত্ব করে। আমিও তেমনি আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ জাতির জনকের দলকে সমর্থন করি। আমার কাছ থেকে নিরপেক্ষ অবস্থান যারা আশা করে, তারা মতলববাজ। আমাকে আওয়ামী লীগের কবি বলে যারা খুশি হতে চান, আমাকে কোণঠাসা করা গেলো বা যাবে বলে দিবাস্বপ্ন দেখেন-তাদের স্বপ্বভঙ্গ করার জন্য আমি না থাকলেও আমার বহু বহু কবিতাই বেঁচে থাকবে।
লেখক: কবি