নরসিংদীতে তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তার

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ মে ২০২০, ২০:৪৪

নরসিংদীতে পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় স্থানীয় তিন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে নরসিংদী শহর, মাধবদী ও মনোহরদীতে পুলিশের তিনটি পৃথক অভিযানে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে পলাশের ঘোড়াশাল ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল আলম বাদী হয়ে পলাশ থানায় ওই তিন সাংবাদিককে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা না বলেই তার বরাত দিয়ে ভুল বক্তব্য প্রকাশ করা ও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করার অভিযোগে মামলাটি করেন তিনি।

গ্রেপ্তার তিন সাংবাদিক হলেন, স্থানীয় দৈনিক গ্রামীণ দর্পণ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রমজান আলী প্রামাণিক (৪৫), একই পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শান্ত বণিক (৩৫) ও অনলাইন পোর্টাল নরসিংদী প্রতিদিনের প্রকাশক ও সম্পাদক খন্দকার শাহিন (৩২)। রমজান আলী প্রামাণিকের বাড়ি নরসিংদী শহরে, শান্ত বণিকের বাড়ি মনোহরদীতে আর খন্দকার শাহিনের বাড়ি মাধবদীতে।

পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, দৈনিক গ্রামীণ দর্পণ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘ঘোড়াশালে চুরির অপবাদে যুবককে পিটিয়ে হত্যা পুলিশের’ এবং নরসিংদী প্রতিদিন নামে একটি অনলাইনে ‘ঘোড়াশাল ফাঁড়িতে নেওয়ার পর মৃত্যু, অভিযোগ পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন দুটোতে ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল আলমের বরাত দিয়ে একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়। অথচ জহিরুল আলমের ভাষ্য, এমন কোন বক্তব্য তিনি দেননি এবং মুঠোফোনে বা সরাসরি ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে তার কোন প্রকার যোগাযোগই হয়নি। তার বরাত দিয়ে এমন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ায় তার ওপর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হন। তাই নিজের সম্মান বাঁচাতে ওই তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনি মামলাটি করেন।

গত ২৯ এপ্রিল বুধবার বিকালে নরসিংদীর পলাশের ঘোড়াশালে পুলিশের হেফাজত থেকে ফিরে যাওয়ার পর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মান্নান (৪০) নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের মৃত্যু হয়।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, চলমান লকডাউনের সময় সিএনজি নিয়ে সড়কে বের হওয়ায় মান্নানকে চুরির অপবাদ দিয়ে ঘোড়াশাল ফাঁড়ির পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে। এতে ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে নিহতের স্বজন ও স্থানীয় অটোরিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এই ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য ছিল, মান্নান হার্টের রোগী ছিলেন, তাকে সড়কে আটক করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি ওই সিএনজি চালিয়ে পার্শ্ববর্তী গাজীপুরের কালীগঞ্জের দক্ষিণ খলাপাড়া এলাকায় গিয়ে অসুস্থ হন। পরে সন্ধ্যার দিকে আমরা তার মৃত্যুর খবর পাই।

মামলার বাদী ও ঘোড়াশাল ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল আলমের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পলাশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল আলমের সঙ্গে কথা না বলেই ভুল বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার করায় তিনি বাদী হয়ে তিনজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। মামলার প্রাথমিক তদন্তে ও উদ্ধারকৃত আলামতেরভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :