‘করোনার পরবর্তী সময়ে চাকরি পাওয়া কঠিন হবে’

প্রকাশ | ০৬ মে ২০২০, ১৬:১০ | আপডেট: ০৬ মে ২০২০, ১৬:১৩

সাবিনা ইয়াসমিন

আমি সাবিনা ইয়াসমিন। সমাজকর্মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর করেছি। এরপর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে চাকরি খুঁজছি। এছাড়াও বাসায় বসে টিউশনি করাই। এতে আমার হাত খরচ হয়ে যায়। পাশাপাশি চাকরির পরীক্ষার আবেদন খরচও উঠে আসে। এভাবেই দিন চলছিল। 

করোনার কারণে গত দুই মাস ধরে সরকারি ও বেসরকারি চাকরির কোনো বিজ্ঞপ্তি নেই। এদিক চাকরির বয়সও শেষ হয়ে আসছে। অন্যদিকে করোনার কারণে অনেক লোক সম্প্রতি বেকার হয়েছে। এতে করোনার পরবর্তী সময়ে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। কেননা, আমাদের মতো যারা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি খুঁজছে তাদের সঙ্গে যোগ হবে করোনায় চাকরির হারোনোরা। ফলে আগামী দিনগুলো চাকরিপ্রার্থীদের জন্য মোটেও ভালো সময় নয়। 

আমার মতো যারা সদ্য পড়াশোনা শেষ করে ঘরে বেকার বসে আছে, তাদের বেকার বসে না থেকে হাতের কাজ, ঘরের কাজ কিংবা সমাজ উন্নয়নে অংশ নেয়া উচিত। 

মেয়েদেরকে বলবো লকডাউনের দিনগুলোতে ঘরে অলস বসে না থেকে সেলাই, বুটিক্স-এর মতো হ্যান্ডিক্রাফটসের কাজ শিখতে। এতে করে ঘরে বসেই স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। এছাড়াও ছেলেরা তাদের বাসা-বাড়ির ছাদে কিংবা ঘরের আঙ্গিনায় সবজি চাষ করতে পারেন।

শহরের বাসিন্দারা বাড়ি ছাদে, ব্যালকনি, ফুলের টবে, কৌটা কিংবা প্লাস্টিকের বোতলে মাটি ও সার দিয়ে সবজি চাষ করতে পারেন। এতে করে পরিবারের প্রয়োজনীয় সবজির চাহিদা পূরণ হবে। সবজি কিনতে বাজারে যেতে হচ্ছে না, তাই করোনার সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে। 

যদি মাটি ও সার না পাওয়া যায় তবে, একটা বড় কৌটা বা ড্রামে ঘরের প্রতিদিনের সবজির উচ্ছিষ্ট জমা করে সেগুলো পচিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করে নেয়া যেতে পারে।  

গ্রামে যারা আছেন তারা হাস-মুরগি, কবুতর লালন-পালন করতে পারেন। এতে সময়টাও ব্যস্ততায় কাটবে। কিছু আয়ও হবে। আর কয়েকদিন পরেই বর্ষাকাল শুরু হবে। বর্ষায় মাস চাষের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। গ্রামের তরুণ ভাইদেরকে বলবে লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে অন্তত কিছু একটা করুন। মাছ চাষ হোক, কৃষি কাজ হোক কিছু একটা করতে হবে। এই সময়ে যেহেতু আপনি চাকরিতে ঢুকতে পারছেন না, তাই সময়টাকে হেলাফেলা না করে অর্থকরী কিছু করুন। 

হোম কোয়ারেন্টিনে থাকাকালে সময় নষ্ট না করে চাকরির পরীক্ষা জন্য প্রস্তুতি নেয়া উচিত। আমিও টেলিভিশন, অনলাইনে চলমান ক্লাশগুলোয় অংশ নেই। তাতে নিজেকে আপডেট রাখা যাচ্ছে। এখন যেহেতু সব কিছু বন্ধ তাই, চাকরির বিজ্ঞাপনের পত্রিকা, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স জাতীয় বইগুলো কেনার সুযোগ নেই বললেই চলে। তাই, ইন্টারনেটের মধ্যে চাকরির বাজারে খোঁজ খবর নিতে হবে। 

দেশের শিক্ষিত তরুণ সমাজকে আমি আহ্বান জানাবো, তারা যেনো করোনার এই মহামারিকালে তার আশেপাশের মানুষকে সচেতন করে। তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দেয়। নিজেও ঘরে থাকুন অন্যদেরকেও ঘরে থাকতে পরামর্শ দিন। এই সময়ে পরিবারের বয়স্ক ও শিশুদের দেখভাল, যত্নআত্তির ব্যাপারে তরুণদের ভূমিকা রাখা উচিত।  

লেখক-চাকরিপ্রার্থী

অনুলিখন: আসাদুজ্জামান

(ঢাকাটাইমস/৬মে/এজেড)