মাছ ধরার উৎসব…

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ মে ২০২০, ১৩:০২ | প্রকাশিত : ০৮ মে ২০২০, ১২:৫৯

এক সময় ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ শব্দটি অতিপরিচিত ছিল। ‘গোয়ালভরা গরু গোলাভরা ধান’ এ শব্দটিও শোনা যেত বেশ। এখন যেন এগুলোর ব্যবহার একেবারেই কম।

মানুষের চাহিদার তুলনায় যোগানের স্বল্পতা। এমন বাস্তবতায় হারিয়ে গেছে বাঙ্গালি জাতির অনেক ঐতিহ্য। নেই পর্যাপ্ত পরিমানে খাল বিল নদী নালাসহ বিভিন্ন ধরনের ডোবা। মানুষের বসবাস ও শিল্পকারখানা স্থাপন করায় সবই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে মাছে ভাতে বাঙালি নামের অতিপরিচিত শব্দটি।

তবে কিছু কিছু গ্রাম অঞ্চলের অনেক জায়গায় এমন কিছু চিত্র দেখা যায় যা বাঙালির ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়। নদীর পাড়ে গ্রামবাসি এক হয়ে মাছ ধরার চিত্র অনেক আনন্দ দেয়।

বড়শি, খেপজাল, ঠেলাজাল, কারেন্টজাল, খরাজাল এসব উপাদান ব্যবহার করে মাছ ধরার চিত্র এখনও কিছুটা ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। যদিও কারেন্টজাল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

সব জায়গায় না দেখা গেলেও কোনো কোনো অঞ্চলে এখনও রয়েছে বাউথনামা। বাউথ নেমে মাছ ধরে নারী পুরুষ ছোট বড় সবাই। বাউথনামা হলো ছোট নদী, ডোবা, নালা, পুকুর ইত্যাদি জায়গায় পানি সেচে হাত দিয়ে মাছ ধরা।

মাছ ধরার সময় সবাই নামবে এক সঙ্গে। মাছ ধরবে। মাছগুলো রাখা হবে বিভিন্ন পাত্রে। পরে সবাই ভাগ করে নিবে। সম্প্রতি এমন আনন্দের চিত্র দেখা যায় সিরাজগঞ্জের যমুনার একটি শাখা নদীতে।

মাছ মারার আগে সবাই দলবেঁধে নদীতে বাঁধ দেয়। পানি সেচে নেয় শ্যালো মেশিন দিয়ে। টানা একদিন এক রাত শ্যালো মেশিন চালিয়ে পানি শুকানো হয়। মাছ মারতে নামতে না নামতেই বাঁধের এক জায়গায় ভেঙে যায়। পানি দিয়ে পূর্ণ হয়ে যায় আবার। পরিশ্রম যেন পণ্ড।

আবার বাঁধ দেয়া হয় সবাই মিলে। পুনরায় পানি সেচ দেওয়া হয়। আবার পানি সেচতে দিন-রাত পরিশ্রম শুরু করে তারা। ছোট বড় ৭০ জন মিলে এ উদ্দ্যোগে শামিল হয়। যমুনার একটি শাখা নদীর অর্ধেক বাঁধ দিয়ে মাছ ধরে।

ছোট বড় মাঝারি অনেক ধরণের মাছ ধরে তারা। টেংরা শিং বোয়াল পুঁটি চিংড়ি চান্দা বাইম গোচই টাকিসহ অনেক ধরণের মাছ মারতে দেখা যায় তাদের। মাছ ধরতে কেউ আসে বালতি, কেউ বড় পাতিল কেউবা আবার আসে বিভিন্ন ধরনের পাত্র নিয়ে।

কেউ কেউ মাছ ধরে কোমরে গুজে রাখে। ভোরবেলা থেকে শুরু করে তারা মাছ ধরে বিকেল পর্যন্ত। বাচ্চারা মাছ ধরে পলিথিন বা ছোট ব্যাগে রাখে। এ যেন এক আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশ।

ঢাকা টাইমস/৮মে/ এআইএম/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :