কবিতা
বর্জিত ভাবনা
প্রকাশ | ১০ মে ২০২০, ২০:৪৮ | আপডেট: ১১ মে ২০২০, ১০:৩৬
শীঘ্র প্রতিষেধক পাবার আশা যে নেই বিলকুলই,
এখন তোমার ভাবনাটা কী,কওতো খানিক দিলখুলি?
এখন তুমি করবেটা কী, কেমন করে কূল পাবে,
হাত-পা বাঁধা অবস্থাতে কেমন করে সাঁতরাবে?
কামান গোলার মুরোদ কিছু দেখাও তবে কোভিড কে,
বুঝবে তখন বিশ্ব বেকুব ‘রিয়েল ফাকিং স্টুপিড’কে?
সারে সারে বোমা বরুদ বাড়ান কেবল দিনকে দিন,
আপনারা সব এক গোয়ালের; দোষ কেনো আর চীনকে দিন?
মহাকাশের খবর নিতে ঘুরলে গ্রহ-গ্রহান্তর,
মানুষ মারার কল বানাতে কাটিয়ে দিলে যুগান্তর।
প্রাণ বাঁচাবার গবেষনায় ফাটা তোমার টেস্টটিউব,
খানিক সফল হলেই বলো, যা হয়েছে বহুত খুব।
বালাই ব্যাধির নিদান খোঁজার গবেষণায় থাকলে মন,
অণুজীবের থাবাতে কি জীবন দিতে বিসর্জন?
হাঙ্গর দেখে পালায় যেমন ডোবার রাজা দাড়কানা,
মারির কাছে তেমনি বোমার বিষ্টা বোঝাই কারখানা।
প্রতিষেধক, রোগ নিবারক থাকলে তোমার আয়ত্তে,
থাকতে না আর এমন হীন নেংটি রোগের দাসত্বে।
পড়তে না এই মহামারির লাগামহারা দুর্যোগে,
ভুগতে না হায় ঘোর অসহায় দাওয়াইবিহীন দুর্ভোগ।
আর কতো দিন বন্দি হয়ে থাকবে বসে ঘরকুনো,
মারির সঙ্গে সন্ধি করেই তৈরি করো শর-ধনু।
ল্যাবরেটরির ঘড়ির কাঁটার গতি ভারি বাড়ন্ত,
তোমার জারি-জুরির সকল জোয়ানকি ভাব পড়ন্ত।
বেচাকেনা, লেনাদেনা, ব্যবসাপাতির কাম সাড়া,
মজুতদারের বুজরকিতে নিত্যপণ্য দাম বাড়া।
দিনআনা দিনখাওয়া মানুষ বেকার হয়ে মাথায় হাত,
অভিশাপের খড়্গে তোদের নিত্য করে মুন্ডুপাত।
এককোষী এক জৈব কণাই ঘুচালো তোর মর্দানি,
এক ঘায়েতে নামিয়ে দিলো আড়াই লাখের গর্দানই।
মানবতার বিপর্যয় আর বিপন্নতার এত্তো শোক,
কেমন করে সইবে বলো মাতৃরূপি এই ভূলোক!
অণুজীবের বিরুদ্ধে তোর ঘোর জেহাদি কলকাঠি,
অসার হয়ে পড়ছে লুটে; কার্যত সব ফল মাটি।
অপেক্ষা আর অপেক্ষাই, অপেক্ষাই সার কথা,
ভেকসিন এলে তবেই যাবে বিশ্ববাসির ঘাড় ব্যথা।
এবার যদি পাড় পেয়ে যাস যাসনে আবার বেল তলায়,
শিক্ষা যেনো হয় রে মানুষ করোনা’র এই কান মলায়!
হাতিয়ারের হাত ছেড়ে তুই হাড় হাভাতের ধরবি হাত,
সেই আশিসের ঢাল ঠেকাবে বিনা মেঘে বজ্রপাত।
ঝড় সুনামি বন্যা খরা জোয়ার ভাটা রোগ বালাই,
বিঘ্ন বিপদ বিপত্তিতে ভাইয়ের পাশেই থাকবে ভাই।
ভাবনাতে তোর আনবি বদল,দৃষ্টি হবে ভিন্নরূপ,
দেখবি আরেক নতুন জগত; পুরানো সব ধ্বংসস্তুপ।
বদলে যাবি, বদলে দিবি; বদলে যাবে নলচে খোল,
নতুন দিনের নতুন গানে তুলবি ধুয়া— ‘জোরসে বোল’।
মারবে কারা, মরবে কারা; মারীই সবার কাড়লে প্রাণ!
অস্ত্র ঠোকাঠুকির মাঝেই অস্ত্রধারির শেষ প্রয়াণ।
বিদ্যার এতো বহর দিয়ে কী হয়েছে লভ্য আর?
অশ্রু দিয়ে অস্ত্র কিনে করছো বড়াই সভ্যতার।
ইমেইল: [email protected]