কাঁধে করে মরদেহ নিয়ে সৎকার করলেন ইউএনও

নড়াইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ মে ২০২০, ২১:২৬ | প্রকাশিত : ১০ মে ২০২০, ২১:২২

করোনা উপসর্গে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর (৫০) মৃত্যু হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে মারা যান তিনি। তার পাশে ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। ঘরে তার মৃতদেহ রেখে আত্মগোপনে যান স্ত্রী ও ছেলে।

এ পরিস্থিতিতে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুদা নিজেই ঘর থেকে বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর লাশ বের করেন, চিতায় উঠান এবং সৎকারের ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, কোথায় গেল পারিবারিক বন্ধন!

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী বলছে, কালিয়ার বড়দিয়া গ্রামের নির্মল রায় চৌধুরীর ছেলে বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন। ঢাকা থেকে কাশিসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দু’দিন আগে বাড়িতে আসেন। এরপর আলাদা রাখা হয় বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীকে। শনিবার রাতে তিনি মারা যান। রবিবার সকালে বাড়ির লোকজন তার মৃত্যুর বিষয়টি টের পেলে কেউ কাছে যায়নি।

এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক কালিয়া প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ফসিয়ার রহমান জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই (বিশ্বজিৎ) বাড়িতে পৌঁছান তিনি। এ সময় কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তারা জানতে পারেন বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর মৃতদেহ ঘরেই পড়ে আছে। পরিবারের লোকজন কেউ কাছে যাচ্ছেন না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার স্ত্রী ও সন্তানের দেখা পাননি তারা। একপর্যায়ে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুদা মৃত ব্যক্তির ঘরে প্রবেশ করেন। সঙ্গে ছিলেন কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কাজল মল্লিকসহ সাংবাদিক ফসিয়ার রহমান। এ সময় মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর কাঁধে করে বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর মরদেহ ঘর থেকে বের করেন ইউএনও নাজমুল হুদাসহ ওই সাংবাদিক। এ কাজে সহযোগিতা করেন মৃত বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর দূরসম্পর্কের এক নাতি ও সৎকারের জন্য ইউএনও’র উদ্যোগে আসা কালিয়ার মন্টু বৈরাগী। ভ্যানযোগে শ্মশানে আনার পর মৃতব্যক্তিকে চিতায়ও তোলেন ইউএনও।

সাংবাদিক ফসিয়ার রহমান বলেন, আত্মগোপনে থাকার অনেক পরে মৃত বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর ছেলে এগিয়ে আসেন। তার বাবাকে দাহ করার সময় ছেলেটি উপস্থিত থাকলেও কোনো আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছিলেন না। তার স্ত্রী ও অন্য সন্তানেরও (মেয়ে) দেখা পাওয়া যায়নি। রবিবার দুপুরে চোরখালি শ্মশানে বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীকে দাহ করা হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, পরিবারের কেউ এগিয়ে না আসায় নিজে কাঁধে করে মৃত বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর সৎকারের ব্যবস্থা করেছি। এ কাজে সাংবাদিক ফসিয়ার রহমানসহ আরো তিনজন সহযোগিতা করেন। এছাড়া বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরীর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১০মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :