ঘর থেকে ডেকে পিটিয়ে ইয়াবা দিয়ে থানায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ মে ২০২০, ২১:৫২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে এম এস কে মাহাবুব (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের অভিযোগ তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রচন্ড মারধরের পর ইয়াবা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরপর থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে দ্বিতীয় দফা তাকে বেদম মারধর করে প্রতিপক্ষের কয়েকজন। এর মধ্যে থানার এক এসআইও রয়েছেন। শনিবার এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার শিকার মাহবুব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখিতে সোচ্চার ছিলেন। সম্প্রতি নবীনগরের শহরের পূর্ব পাড়ার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী লিটন দেব ও তার স্ত্রী মনি দেবকে মাহবুবের লেখালেখির কারণে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয় পুলিশ। সেকারনে লিটনের গডফাদাররা মাহবুবের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। সর্বশেষ মেহেদী হাসান নামে স্থানীয় এক মাওলানার সঙ্গে তার বিরোধ হয়। ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি লেখালেখি চলে এ দুজনের। মেহেদীর বিরুদ্ধে হত্যা এবং অপপ্রচারের অভিযোগ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা সেলে অভিযোগ দেন মাহবুব । এরপরই শনিবার তাকে ধরে মারধোর করে ইয়াবা দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।

গত শুক্রবার মোবাইল ফোনে মাহবুবকে হত্যারও হুমকি দেয়া হয়।

মাহাবুবের ছোট বোন স্কুল শিক্ষিকা উম্মে কুলসুম মিলি বলেন, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে একজন ছেলে আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই দেখি তাকে কয়েকজন প্রচন্ডভাবে মারতে মারতে একটি অটো রিকশায় উঠিয়েছে। তাদের মধ্যে মাওলানা মেহেদীও ছিলেন। পরে থানায় গিয়ে জানতে পারি, মেহেদী ও তার লোকজন আমার ভাইকে সাতটি ইয়াবাসহ পুলিশে দিয়েছে। তারা থানার ভেতরে পুলিশের ডিউটি অফিসারের কক্ষেও আমার ভাইকে প্রচন্ড মারধর করে।

মাহবুবের মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সালেহা খাতুন জানান, তার ছেলে নবীনগরের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সোচ্চার ছিল। এতে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি মাহাবুবের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

মাওলানা মেহেদী থানার ওসি রনজিৎত রায়ের ঘনিষ্ট বলে এলাকাবাসী জানান। তবে ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মাওলানা মেহেদী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নূরুল ইসলাম নামের এক ছেলের কাছে মাহাবুব মাদক বিক্রি করার সময় তাকে স্থানীয় জনতা গণধোলাই দেয়। আমি বরং তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে থানায় নিরাপদে পৌঁছে দেই। ঘটনাস্থলে কিংবা থানায় তাকে আমার মারধর করার প্রশ্নই ওঠে না।

নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব শংকর দাস বলেন, থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে মাহাবুবকে মারধর করার ঘটনাটি আমি শুনেছি। এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, মাহাবুব যদি মাদক বিক্রেতা হয় তাহলে আমরাও তার শাস্তি দাবি করি। কিন্তু তাকে থানার ভেতরেও পুলিশের সামনে মারধর করা, কোন আইনে আছে?

নবীনগর থানার ওসি রনোজিত রায় বলেন, সাতটি ইয়াবাসহ ২০/২৫ জন মানুষ মাহাবুবকে থানায় ধরে নিয়ে আসে। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। ডিউটি অফিসারের রুমতো থানার গেইটের সামনে। সেখানে নয়, বাইরে তাকে প্রচন্ড মারধোর করেছে। অনেকে তা দেখছে। অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করবো। থানায় আসার পর আমরা তার মেডিকেল করিয়েছি।

নবীনগর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল জানান, ঘটনাটি তাকে জানানো হয়েছে। ছেলেটি মেধাবী। ভালো লেখে জানিয়ে বলেন বিষয়টি আমি দেখছি।

(ঢাকাটাইমস/১০মে/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :