জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবিরাম ছুটে চলছেন ইউএনও তামান্না

ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
 | প্রকাশিত : ১১ মে ২০২০, ০০:১৩

করোনা ভাইরাসের ভয়ে সব মানুষ যখন গৃহবন্দি, তখন উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবিরাম ছুটে চলেছেন মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ। এ উপজেলার আনাচে-কানাচে এমন কোন স্থান নেই, যেখানে তার পদচারণ হয়নি। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলাবাসীকে সহযোগিতা করতে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে চলেছেন তিনি।

উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। মূলত উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতার কারণেই জেলার অন্য যেকোনো উপজেলার চেয়ে সার্বিক পরিস্থিতি এখানে অনেক ভালো।

করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সরকরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিতে ছুটেছেন দুর্গম পাহাড়ের এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামের সাধারণ মানুষের দোড়গোরায়। আবার কখনও এক বাজার থেকে অন্য বাজারে ছুটে চলেছেন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে। কখনও-কখনও পরিচালনা করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বর্তমানে মানবিক সহায়তা কার্ড প্রস্তুত করার কাজে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের যাচাই-বাছাইয়ের কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তামান্না মাহমুদ।

১নং মানিকছড়ি ইউনিয়নের ফাতেমা বেগম, তিনটহরী ইউনিয়নের করিম আলীসহ অনেকেই জানান, করোনাভাইরাসের কারণে গৃহবন্দি হয়ে খাদ্য সংকটে পড়েন। বিষয়টি ইউএনও তামান্না মাহমুদকে জানালে তিনি তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেন। উপজেলার এমন অনেক পরিবার আছে যাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন। এমনকি ইউপি চেয়ারম্যানসহ অনেকের কাছে গিয়ে ত্রাণ না পাওয়া মানুষগুলো ইউএনও কাছে দ্বারস্থ হলে কাউকেই তিনি খালি হতে ফেরত দেননি। ফলে উপজেলাবাসীর একমাত্র ভরসাস্থল ইউএনও তামান্না মাহমুদ।

মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের ইউএনও তামান্না মাহমুদ উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে সকল কার্যক্রম খুব ভালোভাবেই পরিচালনা করছেন এবং তার কাজে উপজেলার মানুষ খুবই সন্তুষ্ট।

ইউএনও তামান্না মাহমুদ জানান, উপজেলায় বহিরাগত ঠেকাতে নয়াবাজার চেকপোস্ট এলাকায় কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও পাশের জেলা থেকে আসা মানুষকে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখা হচ্ছে এবং তাদের হোম কোয়ারান্টাইন স্ব-স্ব ইউপি চেয়ারম্যান-ইউপি সদস্যরা নিশ্চিত করছেন। যাদের হোম কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থা নেই- তাদের জন্য উপজেলা সদর রাজবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও মানবিক দায়িত্ব থেকেই আমি কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি যে কোন সহায়তা অসহায়-হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মানতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১১মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :