‘টিউশনির টাকায় ঈদ উপহার দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা’

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ মে ২০২০, ১৭:৪৭

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। এদিকে, সামনে ঈদ। মুখে হাসি নেই কর্মহীন ও দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলোর। এসব হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে টিউশনির ও শপিং করার জমানো টাকায় টাঙ্গাইলের কালিহাতী আরএস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী রেদোয়ান মাসুদ ও ড. মো. সৈকত হাসান ও অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঈদ উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন। এছাড়াও তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় বিত্তবানরা।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১ হাজার পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মধ্যে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের মাঝে এই ঈদসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবার, অটোরিকশা-ভ্যানচালক, দিনমজুর ও ভিক্ষুকসহ নিম্ন আয়ের নানা শ্রেণি পেশার পরিবার।

ঈদ উপহারের মধ্য রয়েছে- সেমাই, চিনি, গুঁড়ো দুধ প্যাকেট, আতব চাল ও নগদ টাকা। এর আগে করোনা শুরু থেকেই অসহায়দের মাঝে চাল, ডাল, তেল ও সাবান ইত্যাদি সামগ্রীও বিতরণ করেন এই মানবিক শিক্ষার্থীরা।

ঈদ উপহার পেয়ে রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকদিন পরেই আসছে ঈদ। করোনার কারণে পরিবার নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছি। দিনমজুরের কাজকামও বন্ধ। হাতে তেমন টাকায় ছিল না। এ অবস্থায় কয়েজন তরুণ শিক্ষার্থীরা বাড়িতে এসে ঈদ উপহার ও নগদ আর্থিক সহায়তাও দিয়েছেন। এতে এবার ঈদ খাদ্যসামগ্রী কিনতে হবে না। শিক্ষার্থীদের এমন মানবিকতায় সাহায্য পেয়ে আমি খুব খুশি।’

রোকেয়া বেগম বলেন, ‘করোনার কারণে অন্যের বাড়িতে সাহায্যের জন্য যাইতে পারি না। বাসা-বাড়ির গেট বন্ধ রাখে। অপরদিকে, করোনার ঝুঁকি ও আতঙ্ক। গেল কয়েক সপ্তাহ আগে ১০ কেজি চাল, আলু ও ডাল পেয়েছিলাম। এতে কিছুদিন পর শেষ হয়ে যায়। পর খেয়ে না খেয়ে মানবতের জীবনযাপন করে আসছি। এমন অভাবের সময়ে ছাত্ররা বাড়িতে এসে ঈদ উপলক্ষে ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা প্রদান করেছে। তাদের মঙ্গল কামনা করছি।’

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও আরএস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১১ শিক্ষাবর্ষের এস.এস.সি ব্যাচের শিক্ষার্থী রেদোয়ান মাসুদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীরা টিউশনি ও ঈদে শপিং না করে সেই টাকায় করোনার কারণে কর্মহীন এ উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে সাধ্যমতো ঈদ উপহার নিয়ে পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করে আসছি। ১ম ধাপে ৫০০ পরিবারের বিতরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণ করেছি।’

ড. মো. সৈকত হাসান বলেন, ‘করোনায় নিম্ন আয়ের মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে। তাদের এমন কষ্ট দেখে নিজেদের টিউশনির জমানো টাকা ও ঈদ শপিং না করার টাকায় অসহায়, হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে হাসি ফুটানোর জন্য ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি আমরা শিক্ষার্থীরা। সুষ্ঠুভাবে সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হয়েছে। ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :