দৌলতপুরের ইউপি সদস্যদের স্ত্রীর নামে ভিজিডি কার্ড!
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১৪ নম্বর আড়িয়া ইউনিয়নে দুস্থ পরিবারদের সহায়তার ভিজিডি কার্ডের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুস্থ ও অসচ্ছল পরিবার বাদে সচ্ছল পরিবার, স্বজনপ্রীতিসহ একই ইউপি সদস্যের স্ত্রীদের নাম একাধিকবার ওই তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য ১৪ নম্বর আড়িয়া ইউনিয়নে ৯২টি দুস্থ পরিবারের জন্য ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দকৃত প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল/গম পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে ভিজিডি কার্ডের নিদের্শীকায় বলা হয়েছে দুঃস্থ পরিবার, পরিবারের প্রধান নারী, ভূমিহীন, বসতবাড়ির অবস্থা খারাপ দিনমজুরী করে কোনো রকম সংসার চালায় এমন পরিবারকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি কমিটি যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে তালিকা তৈরি করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দেবার পর তালিকা চুড়ান্ত হয়ে ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য দেয়া হয়।
ইতোমধ্যে এই ইউনিয়নে চুড়ান্ত তালিকার ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় যে, এই ইউনিয়নের নতুন ৯২ জন ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রাশিদুল ইসলাম তার নিজ ওয়ার্ডে এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তার স্ত্রী পারভীন ইয়াছমিনের নাম অন্তর্ভুক্ত করাসহ ভাতিজি, ভাইয়ের স্ত্রী, আপন মামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
একই ওয়ার্ডের ৩ নম্বর ক্রমিকের হাজেরা খাতুনের নাম তালিকাভুক্ত থাকলেও আজ পর্যন্ত কোনো চাল পায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। এছাড়া প্রায় সাত বছর আগে দৌলতপুর উপজেলার বাইরে বিয়ে হয়ে যাওয়া এক নারী ক্রমিক নম্বর ৫ লাখি খাতুনের নামেও ভিজিডি তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খোশরুল ইসলাম ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তার স্ত্রী ছাবিনা খাতুনের নাম ২২ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এদিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলীমও ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তার স্ত্রী আলেয়া খাতুনের নাম ক্রমিক নম্বর ৭০ এ অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এছাড়া ক্রমিক নম্বর ৬৮ রানী খাতুন, স্বামী ফয়েজ সরদার, ক্রমিক নম্বর ৭২ তাছলিমা খাতুন, স্বামী হাফিজুল এবং ক্রমিক নম্বর ৮৩ হামেদা খাতুন, স্বামী রেফেজ্জেল সরদার অভিযোগ করে বলেন আজ পর্যন্ত কার্ড হয়েছে কিনা আমরা জানিনা
ভিজিডি কার্ডের তালিকায় ইউনিট সদস্যের স্ত্রীর নাম এক বা একাধিকবার থাকা এবং তালিকা তৈরিতে স্বজনপ্রীতির ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাঈদ আনসারী বিল্পবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের স্ত্রীদের নামে কার্ড হওয়া ঠিক না। একজন ওয়ার্ড সদস্যের স্ত্রীর নাম একাধিকবার থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা কম্পিউটারে মিসটেক হয়েছে যা আমার জানা ছিলনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইশরাৎ জাহান বলেন, এ ধরনের অনিয়ম হলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৮মে/কেএম)