নিরাশ হয়ো না

প্রকাশ | ১৯ মে ২০২০, ১১:৪৪

ড.নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া

অনেকতো হলো, এবার একটু থামুনতো !
সফলতার ঐ মহাচূড়া থেকে এবার একটু নামুনতো!
পরের হানির মতলব ভুলে
ইমারত ছেড়ে বসে তৃণমূলে
সহমর্মের বাতায়ন খুলে
এবার একটু ভাবুনতো!

আধুনিকতার যতো অর্জন
আসলে কতোটা ছিল প্রয়োজন
কতোটা করেছে জীবন নিধন;
জীবন বাঁচাতে কতোটা?
এখনো কতোটা হয়েছে পূরণ
মানব সেবার ব্রতটা?

এখনো কতো যে আছে অনটন?
দেশে দেশে আজো কতো অনশন
কতো যে বসন, কতো আবাসন
জোটেনি সুষম হারে?
সে হিসেব কষে হই বেকারার
বাড়ন্ত দেখি প্রাণ সংহার
বিদ্বেষ বিষ রোষ হিংসার
পরিধি নিত্য বাড়ে।
শিক্ষা-সুযোগ সবার জন্যে নেই সম অধিকারে।
স্বাস্হ্য সেবায়ও বিশাল খামতি বিপন্ন উদ্ধারে।
শিক্ষা স্বাস্হ্য আবাসন খাতে
বরাদ্দ কমে নানা অপঘাতে
বিধি বিধানের ঝুটা অজুহাতে জটিলতা বিভ্রাট,
বোমা বারুদের বিশাল বাজেটে হয়নাতো কাটছাঁট,
সেবার চেয়েও কর্তাগিরিতে নিবিষ্ট রাজপাট।

অনেকতো হলো, এবার একটু থামুনতো !
সফলতার ঐ মহাচূড়া থেকে এবার একটু নামুনতো!
মনের টেলিস্কোপটা এখন এদিকটা তে ঘোরান তো,
পরতে পরতে সঞ্চিত কালি চিত্ত চিতায় পোড়ান তো।
যুদ্ধ এবং শান্তির মাঝে
যেই ব্যবধান বিবেকে বিরাজে
স্বর্গীয় সেই আত্মার আওয়াজে শান্তি পতাকা উড়ান তো,
কান পেতে নয়; প্রাণ পেতে আজ শুনুন তো
বিশ্ব বিবেক কী দাবি তুলছে চূড়ান্ত!
সেই দাবি মতে যুদ্ধের জ্বালা জুড়ান তো
‘শান্তি শান্তি শান্তি’ বলে শান্তির হাতটা বাড়ান তো।

বিদ্বেষ বীজ উপ্ত করাই যুদ্ধ
মমতা মহিমা লুপ্ত করাই যুদ্ধ।

বোনের মাথার সিঁদুর মোছে এ যুদ্ধ
ভায়ের রাখির বাঁধন কাটে এ যুদ্ধ
প্রীতমের প্রতি অবহেলা এই যুদ্ধ
জীবনের প্রতি জীবনের ঘৃনা যুদ্ধ
রক্ত রেণুর হোলিখেলা এই যুদ্ধ
জীবশ্রেষ্ঠের ল্জ্জা, ল্জ্জা যুদ্ধ
মানবতা বোধের শেষ শয্যা এ যুদ্ধ।

যুদ্ধ কেবলি রক্ত ঝরায় ভায়ের বুকের,
যুদ্ধ কেবলি অশ্রু  ঝরায় মায়ের চোখের।
যুদ্ধ কেবলি যুদ্ধে জড়ায় আরেক মাঠে,
যুদ্ধ কেবলি ইন্ধন হয় চিতার কাঠে।
যুদ্ধ কেবলি গর্বে জড়ায় গোরের মাটি,
যুদ্ধ মানেই বারুদে বিলীন বিরান ভিটি।
যুদ্ধ মানেই বিদ্বেষ  আর বিচ্ছেদ
যুদ্ধ মানেই উদ্বেগ আর উচ্ছেদ।
যুদ্ধ মানেই বিরহ বিলাপ খেদ
যুদ্ধ মানেই শিকার ও শিকারি ভেদ।
যুদ্ধ মানেই মিলনের মুখে অগ্নি
যুদ্ধ মানেই রক্ত ঋণের লগ্নি।
যুদ্ধ মানেই  বোমা ও বারুদে কথা,
যুদ্ধ মানেই শংকিত সভ্যতা।

অনেকতো হলো, এবার একটু থামুনতো !
সফলতার ঐ মহাচূড়া থেকে এবার একটু নামুনতো!
চর্ম চক্ষু মুদে একবার খানিক গভীরে ভাবুন তো;
বাস্তবে দেখুন সবি অকারণ
যতোটুকু হলো জীবনযাপন
আসলে কেবলি আয়ুর পীড়ন
এক কোষি এক জীবানুর কাছে জ্ঞানের পরিধি পরাস্ত,
তার মানে তবে জ্ঞানের  উৎসের হতেই হবে দ্বারস্থ।
বিলম্ব বলে কিছু নেই সেই ঘাটে,
আকুতির অভ্যর্থনায় সেই মহিমের
বিনিদ্র ক্ষণ কাটে।
সৃষ্টিতে তাঁর করুণার রঙ মেখে
তিনি দিয়েছেন অমৃত বাণী এঁকে;
‘লা তাকনাতু মির রাহমাতিল্লাহ’-
নিরাশ হয়ো না আল্লাহ্’র দয়া থেকে।