ভেজা চোখে সন্তানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা সিংড়ার মেয়রের

প্রকাশ | ২০ মে ২০২০, ১৬:৩৫ | আপডেট: ২০ মে ২০২০, ১৬:৩৮

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চোখের জলে নিরাপদ দূরত্বে থেকে সন্তানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন সিংড়ার মেয়র। মঙ্গলবার সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৗসের ছয় বছরের ছেলে অরিন ফেরদৌসের জন্মদিন ছিল। অরিন ফেরদৌস তার মায়ের কাছে জন্মদিনে একটিই উপহার চেয়েছিল, তা হলো ‘বাবাকে এনে দাও’। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের  কারণে দেড় মাস ধরে পৌরসভার একটি কক্ষে অবস্থান নিয়ে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন মেয়র ফেরদৌস।

মঙ্গলবার ইফতারের আগ মুহূর্তে বাড়ির নিচ থেকেই চোখের জলে শিশু সন্তানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। পরে রাতে ফেইসবুকে শুভেচ্ছা জানানো সেই ছবি ভাইরাল হয়। ফেইসবুকে সিংড়ার মেয়র ফেরদৌসকে একজন মানবিক ও যোগ্য নগর পিতা বলে আখ্যায়িত করেন।

সিংড়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, পৌরবাসীর খাদ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা ও সহযোগিতায় করোনা যুদ্ধে পৌরবাসীর টানে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন সিংড়ার মেয়র। পৌরবাসীকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে পরিবেশবান্ধব ই-রিকশা ‘চলো’পরিবহন ও দুইটি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী ও ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। নিজ কণ্ঠে মাইকিংয়ের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পৌরসভার অসহায় ও কর্মহীন পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন। রাতে গোপনে মধ্যবিত্তদের দরজায়ও কড়া নাড়ছেন। আর এই দুর্যোগে তার সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের শতাধিক নেতাকর্মী।

মেয়র ফেরদৌসের সহধর্মিনী আসমাউল হুসনা নিপা মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, ছেলে অরিন তার কাছে জন্মদিনে একটাই উপহার চেয়েছিল। ‘মা একটু বাবাকে এনে দাও। অনেকদিন বাবা’র কোলে উঠি না’।

মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে একটাই ওষুধ, তা হলো ‘ঘরে থাকা’। এই দুর্যোগে পৌর শহরের মানুষকে সচেতন ও মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেয়াই তার মূল লক্ষ্য। আর এর জন্য তিনি বাড়ি ছেড়ে পৌরসভার একটি কক্ষে অবস্থান করে অসহায়দের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।

(ঢাকাটাইমস/২০মে/কেএম)