মনোজাগতিক পরিবর্তনে মানুষ আরো বেশি মানুষ হয়ে উঠবে

প্রকাশ | ২০ মে ২০২০, ১৭:১১

সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন

দুঃসময়'টা বোধহয় বেশ আট-ঘাট বেঁধেই নেমেছে। এই করোনার মধ্যে আবার আম্ফান। অসুবিধা নাই, দেখি এই যুদ্ধে কে জেতে? তবে মাঠ ছাড়ছি না। ঝড় সামলেই তো বাঙালি এতোদূর এসেছে, এবারো ঠিক সামলে নেব। আর করোনার বিষয়ে আরেকটু যদি জানা-শোনা'টা বাড়াই, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি শক্তভাবে মেনে চলি, কমপক্ষে একে একে অপরের কাছ থেকে ৩/৪ হাত দূরত্ব মেনে চলি।

আর যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালান তারা যদি নিজ নিজ মানুষদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নিয়ম বেঁধে দেন, তাহলেই কিন্তু হয়ে গেল। আতংকগ্রস্ত হয়ে কিন্তু লাভ হবে না, একেবারেই লাভ হবে না। আদতে না জেনে আতংকগ্রস্ত হওয়া'টাই মূল সমস্যা। তাই জানা'টা খুব জরুরি।

সবাই যদি প্রস্তুত থাকি, তাহলে এই ভাইরাস আমাদের অপ্রস্তুত করতে পারবে না। ৮০ শতাংশ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষের কিছুই হবে না। সাবধান থাকতে হবে ফুসফুস সংক্রান্ত অসুখের রোগীদের আর বয়স্কদের। আমাদের দেশের জনসংখ্যার ওকটা বিশাল অংশই কিন্তু তরুণ। কারো যদি কোভিড পসিটিভ হয়েও যায়, তাদের চৌদ্দ দিনের জন্য আইসোলেশনে চলে যেতে হবে। সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসবে, যদিও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সেটা হবেই বা কেন?

তাই আস্তে আস্তে আমাদের আতংক কাটিয়ে সামনের বড় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতেই হবে, উপায় নেই। গরীব দেশ, সবে মধ্যম আয়ের দেশের সীমারেখায় পা রেখেছি মাত্র। সামনে অনেক কাজ। তাই ঈদের পরে ফিরেও আবারো বসে থাকবো একমাস, সেটা বোধহয় আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই প্রস্তুতি'টা খুব জরুরি। স্বাস্থ্যগত প্রস্তুতি তো বটেই, পাশাপাশি মানসিক প্রস্তুতি ভীষণ প্রয়োজন।

শুরুতে এতবার বলা হয়েছে 'ঘরে থাকুন' এখন আবার ভাইরাস পুরোপুরি যাবার আগেই আবার বের  হবার কথা হচ্ছে- এই দ্বিধা মানসিকভাবে আমাদের ইতস্তত করতেই পারে। কিন্তু মনে এবং মগজে এই বিষয়'টা ঢুকিয়ে নিতে হবে যে, পরিস্থিতির ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে এবং সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে আমাদেরও ব্যবহারিক এবং মানসিক পরিবর্তন প্রয়োজন।

কিন্তু আশার কথা হচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে এমন সব পরিবর্তন এসেছে, যেগুলো বহু বছরে হাজার চেষ্টা করেও করা যায়নি। ছেলেরা মেয়েদের সাথে কাজে হাত লাগাচ্ছে, অনেককেই দেখছি বেশ দায়িত্ব নিয়ে রান্না করছে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কেও এমন আশা জাগানো পরিবর্তন আসবে এমনটাই আশা করি।

এমন নানান মনোজাগতিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে মানুষ আরো বেশি মানুষ হয়ে উঠবে সেটাই বিশ্বাস করতে চাই। কারণ, শেষ পর্যন্ত মানুষ সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে।

লেখক: বিজ্ঞাপন-লেখক, চলচ্চিত্র কাহিনী রচয়িতা এবং চিত্রনাট্যকার

ঢাকাটাইমস/২০মে/এসকেএস