আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল

প্রকাশ | ২১ মে ২০২০, ১৯:৪২

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল। এরইমধ্যে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বাঁধগুলোর অর্ধশত পয়েন্ট ভেঙে গেছে। জনপদে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে।

এছাড়াও ঝড়ের কবলে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকায় এক নারী কবিরুন নেছা (৪৮) ও বাঁকালে শামছুর রহমান (৬৫) নামে এক ব্যক্তির গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। পুরো জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বহু জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ে আছে, উপড়ে গেছে অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি। বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়েছে গাছপালা। গাছপালা পড়ে বহু এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। জেলার আম বাগান পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। মৌসুমী আম ব্যবসায়ীরা ও বাগান মালিকরা বড় রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। বহু চিংড়ি ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, আশাশুনি উপজেলার উপকূলীয় প্রতানগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া ও খাজরা ইউনিয়নের অইশে পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে গেছে। ইতোমধ্যে চাকলা, দিঘলারাইট, কুড়িকাউনিয়া, হিজলা, কোলা, শ্রীউলা, হাজরাকালি, দয়ারগাট, বিছট, বাহাদুরপুর গ্রামসহ আরও অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা সম্ভব নয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বহুস্থানে টিনের ছাউনি ও কাঁচা ঘরবাড়ির অস্তিত্ব নেই।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী বলেন, বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, পদ্মপুকুর ও রমজাননগর ইউনিয়নের উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, ইতোমধ্যে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামই প্লাবিত হয়ে যাবে। বাঁধ ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ করছে।

কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা এলাকার খারহাটে ইছামতি নদীর বাঁধ এবং মথুরেশপুর চিংড়া বাঁধ ভেঙে অনেক কাঁচা ঘর, গাছপালা ভেঙে গেছে। প্লাবিত হয়েছে তিনটি গ্রাম।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় আম্পান সাতক্ষীরায় আঘাত আনে। সাতক্ষীরায় সর্বোচ্চ ১৪৮ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান।রাত ১২টার পর এর এটি ঘণ্টায় ৭২ কিলোমিটার গতিবেগে অতিক্রম করে। ধীরে ধীরে গতিবেগ কমে আসে।

এদিকে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকার বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।

(ঢাকাটাইমস/২১মে/এলএ)