আম্পানের তাণ্ডব: কলাপাড়ায় পানির নিচে ১৭ গ্রাম

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ মে ২০২০, ২৩:৪৪

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। এসময় সতর্কতামূলক প্রচারণা চালাতে গিয়ে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের ৭নং ইউনিটের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির ইউনিট টিম লিডার শাহআলম (৫৫)-এর মৃত্যু হয়। এছাড়া একই ইউনিয়নের পাঁচজুনিয়া গ্রামে গাছ চাপা পড়ে মাহবুবু (৩৫) নামে একজন আহত হয়েছে। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট বেশি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ৯ শতাধিক মাছের ঘের ও পুকুর থেকে কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতি হয়েছে বর্ষাকালে সবজির ক্ষেতসহ বোরো ধানের ক্ষেত। ঘূর্ণিঝড় আম্পান’র তাণ্ডবে উপজেলার ১২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে। দুই শতাধিক স্পটে গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে বলে জানা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁধ ভাঙা জনপদ লালুয়ার ইউনিয়নের ১৭ গ্রাম এখন পানিবন্দি হয়ে আছে। মানুষের বাড়িঘর এখন আর বসবাস করার উপযোগী নেই। আম্পানের তাণ্ডব থামলেও অমাবস্যার প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকালে রাবনাবদ নদীর জোয়ারে লোনা পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যায় ফসলি ক্ষেত। এমনকি রান্না করার চুলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে রাস্তাঘাট। এখন ওই গ্রামের অনেক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এছাড়া চম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের রাবনাবাদ পাড়ের প্রায় ২০০ মিটার রিং বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধঘেষা অন্তত ২০টি পরিবারের ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। বিলীন হয়ে গেছে শত শত গাছপালা।

দেবপুরের স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ মৃধা জানান মুহূর্তের মধ্যে বাঁধটি জলোচ্ছ্বাসে বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ধসে যাওয়া শুরু হয়। এর ফলে তার প্রায় চার লাখ টাকার মাছ পুকুর ডুবে ভেসে গেছে। পুকুরটিও রাবনাবাদ গিলে খেয়েছে। পাঁচটি পুকুরের মাছ, দেবপুর গ্রামের অর্ধশত কৃষকের ডাল জাতীয় শস্য লোনা পানির প্লাবনে নষ্ট হয়ে গেছে।

বঙ্গবন্ধু কলোনি এলাকার অধিবাসী মো. আলামিন জানান, তার ঘরে একটি গাছ পড়ে ঘরটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি মাত্র দু’মাস আগে কষ্ট ক্লেশ করে ঘরটি তুলেছিলেন।

পৌর শহরের চিংগড়িয়া এলাকার অধিবাসী বিমল হাওলাদার জানান, তার পাশাপাশি দু’টি ঘরজুড়ে একটি গাছ পড়ে ঘরটি ভেঙে যায়। তিনিসহ তার পরিবারের লোকজন রাত জেগে কাটিয়েছেন। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল অন্তত ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার।

বুধবার সন্ধ্যায় জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় বেড়ি বাঁধের বাইরে অন্তত দু’শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসময় হাজার মানুষ আশেপাশের সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। অনেক মানুষ পানি বৃদ্ধির আশংকায় বহুতল ভবন কিংবা স্কুল কলেজে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ জানান, আম্পান’র তাণ্ডবে একজন নিহত ও একজন আহতের খবর মিলেছে। এছাড়া ৩৭৮টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩২৪টি আংশিক এবং ৫৪টি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এটি প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য। পূর্ণাঙ্গ তথ্য তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান’র জন্য মোট ১৯৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। তবে এলাকায় বাতাসের পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাছপালা, ঘরবাড়িসহ হাঁস-মুরগি গবাদি পশু ও মাছের ঘের’র ক্ষতি হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২১মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :