প্রতিকূল পরিবেশে পিপিই ও সাংবাদিকের পিটিসি

আব্দুন নূর তুষার
 | প্রকাশিত : ২৪ মে ২০২০, ১৫:৩৪

উমফুনের সময় আমাদের গণমাধ্যমের কিছু সাংবাদিক নানা ধরনের প্রোটেকটিভ সামগ্রী পরিধান করে পিটিসি (piece to camera) দিয়েছেন। এই নিয়ে অনেকেই তাদের ট্রল করেছেন। অনেক ট্রলের মতো এটাও একটি অযৌক্তিক ও অমানবিক ট্রল হয়েছে।

১. সাংবাদিক সারাদিনে একটি খবর সংগ্রহ করেন না। তিনি বিভিন্ন জায়গায় যান। শুধু তাই নয়, তিনি বারবার এটা পরতেও পারবেন না। তাই যারা এটা পরেছেন তারা এটা পরেই বের হয়েছেন এবং এটা পরেই সেদিন সব পিটিসি দিয়েছেন।

২. মাস্ক তো সবারই পরতে হয়। তাই তারা মাস্ক পরবেনই। তবে পুরো কাভারল আসলে সবার সবজায়গায় পরার দরকার নাই। কিন্তু এটাও তো জানা দরকার যে, আমরা সাংবাদিকদের জন্য পিপিই সংক্রান্ত কোনো প্রশিক্ষণ কি দিয়েছি?

অধিকাংশ সাংবাদিক ভাই/বোন যে কাভারল পরছেন সেটা ধুয়ে পরছেন এবং সেটার বায়োসেফটি লেভেল কম। কাভারল ধুয়ে পরার কথা নয়। কাভারল পরে গাড়ীতে চলাচল বা বাড়ী ফেরারও কথা নয়। এটা তারা বাধ্য হয়ে করছেন। তাদেরকে কি প্রতিদিন নতুন কাভারল দেওয়া হচ্ছে? আমি জানি না।

তারা অনেক সময়ই বাইরে থাকেন, বাইরের মানহীণ টয়লেটে যান, বাইরে খাবার খান, বাইরে বসেন। অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা যেমন বাজারে, হাসপাতালে, শ্রমিক অসন্তোষের ভীড়ে যান।

উমফুনের সময় সমুদ্রের কাছে দাঁড়িয়েছেন কারণ মানুষ যাতে সমুদ্রের প্রবল উত্তাল বিষয়টা বুঝতে পারে। কাভারল ছাড়া সেখানে দাঁড়ানো যেতো কিন্ত তাহলেও ঢেউয়ের কারণে সেটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

এই ঝুঁকিটা তারা পেশার প্রতি মমতা, টেলিভিশনে একটা ভালো শটের জন্য চেষ্টা করতে গিয়ে নিয়েছেন। লবন পানি চোখে কানে ঢুকে যাওয়াটা মোটেও আনন্দের নয়।

এরকম সিএনএন বিবিসিতেও হয়। সেখানেও আমরা দেখেছি সাংবাদিককে বন্যার পানির মধ্যে দাড়িয়ে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হতে।

উমফুনের তান্ডবে তারা কেন পিপিই পরে সমুদ্রের পানিতে ডুবে যেতে যেতে পিটিসি দিয়েছেন সেটা নিয়ে ট্রল করা হয়তো নেটিজেনদের মধ্যে ট্রেন্ডিং। ট্রেন্ডিং হলেই বিষয়টা সঠিক নাও হতে পারে।

তারা কেউ সেখানে সখ করে ঘুরতে যান নাই। তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের নির্দেশে সেখানে পেশার কারণে গিয়েছিলেন।

আমি কেবল তাদের কষ্টটা উপলব্ধি করেছি। তাদের সংসার সন্তানের জন্য দুমুঠো আহার জোগাতে তাদের সংগ্রামটা উপলব্ধি করেছি।

যে কোনো পেশার মানুষকে দয়া করে ট্রল করার আগে তার জুতোটা একটু পায়ে দেবেন। হয়তো তাদের এই বাড়তি চেষ্টাটা আসলেই বোকামী। তারপরেও এই বোকামীটুকুর জন্য আমার পক্ষ থেকে তাদের জন্য সহমর্মিতা ও সহানুভুতিসহ সম্মান রইল। এই বোকামীটাই ভালোবাসা। কাজের মধ্যে নিজের কথা ভুলে যাওয়া। আমার সশ্রদ্ধ সালাম রইল এই মানুষগুলোর প্রতি। পারলে সিএনএন ফক্স এনবিসিকে ট্রল করেন।

লেখক: গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক

ঢাকাটাইমস/২৪মে/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :