এই শহর আমার না

জান্নাতুল বাকিয়া কেকা
| আপডেট : ২৪ মে ২০২০, ১৭:২৮ | প্রকাশিত : ২৪ মে ২০২০, ১৬:৪১

করোনায় আক্রান্ত প্রিয় এক সাংবাদিক ছোট ভাই সেদিন ছোট্ট কথায় বলেছিল, আপা ‘করোনাকালে মৃদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দুপিঠই দেখলাম। করোনায় ভুক্তভোগী আরেক বেসরকারী চাকরিজীবী বললেন, আপা, সাহায্য করুন। আমি এখন করেনায় আক্রান্ত কী না আবারো পরীক্ষায় নমুনা নিয়েছে। দ্রুত ফলাফল পেতে সহায়তা করুন। বাড়িওয়ালা শান্ত হবেন, স্বজনদের উৎকন্ঠার অবসান হবে।

এক নিঃশ্বাষে কথা গুলো বলে আক্ষেপ করে বললেন, আপারে ঢাকা আমার শহর নয়। কেন কেন ? আপা, “করোনা শনাক্ত হবার পর বাড়িওয়ালা যেভাবে দুর দুর করেছে ! বুক ফেটে কাঁদন আসে! ” আবার বাসাবাড়িতে কাজ করা পরিচিত সেই মেয়েটি ফোন করে সেদিন বললো, আপা আর দেখা হবে না। ভুল হলে মাফ কইরেন। কেন রে কি হলো ? না আপা এদেশেত থাকুম না। সবাই খালি সন্দেহ করে আর খেদায়। ক্যামনে কি করুম আপা। নিজ দেশত গিয়া গোবর কুড়ামু আর ধান টোকামু। ভিন্ন তিন শ্রেনী পেশার মানুষের জীবনের উপলব্ধি আজকাল।

প্রিয় চিকিৎসক বড় ভাই ডাঃ রেজাউল করিম কাজল সেইদিন তাই বলছিলেন, করোনাকালে বোঝা গেল শ্রমের শহর এই রাজধানী। ঢাকায় সবাই শ্রম দিতেই আসে। এই শহরে যখন তাদের কাজ নেই তখন তাদের কেউ পাত্তা দেয় না। করোনাকালে সবাই নিজেকে নিয়ে ইয়ানাফসি ইয়ানফসি করে। তাই যাদের দিন আনতে পান্তা ফুরানোর চিন্তা নেই তারা করোনাকালের লকডাইনে আবহাওয়ার ঠান্ডা গরম বুঝে খাবে-ঘুমাবে। আর পেটের দায়ে পথে নামা মানুষদের দিকে আঙ্গুল তুলে হেই হেই করে বলবে, ছোটলোকেরা করোনা ছড়াচ্ছে।

বাস্তবতা বলছে, শ্রমের ঘানি টানাদের এই শহরে আজকাল মুল্যযোগ নেই । পেটের দায়ে মরিয়া এই মানুষগুলো কিসের করোনা কিসের সামাজিক দুরুত্ব বাধ্য হয়েই পথে নেমেছে । তাঁরা শ্রম বিকাবে আর দিন শেষে একটা সময়ে ফিরে চলছে... নিজ এলাকায়। মাটি ও মায়ার টানে...ভালোবাসায়...অনন্ত নিজ গ্রাম ..শহর..বা এলাকায়.. গিয়ে পরিচিত কোন এক চায়ের দোকানে ঠ্যাংয়ের ওপর ঠ্যাং তুলে চা খাবে...ভাব জমাবে...সুখ-দুঃখের গল্প করবে...তাদের খেদানোর কেউ থাকবে না। এটাই ব্যক্তির অপার স্বাধীনতা। এটাই বাংলাদেশ ।।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :