ত্রাণ নিয়ে অভিযোগে যুবককে ইউপি চেয়ারম্যানের মারধর

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ মে ২০২০, ১১:১০ | প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২০, ০৯:৩৯

কুমিল্লার দেবিদ্বারে অসচ্ছলদের জন্য সরকারের দেয়া খাদ্য সহায়তা না পাওয়া এবং সরকার ঘোষিত বরাদ্দ অর্থের তালিকায় মসজিদের নাম না থাকার অভিযোগ করায় যুবককে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। রবিবার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের গুনাইঘর গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম তার অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ওই যুবককে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন।

হামলার শিকার ওই যুবক দেবিদ্বার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের ছেপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুস সরকারের ছেলে রাকিব বিন কুদ্দুস। হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিচার চাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

হামলা, মারধর ও লাঞ্ছিতের অভিযোগে রাকিব বিন কুদ্দুস জানান, চলমান করোনা দুর্যোগে গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের ছেপাড়া গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের কোন অসচ্ছল, গরিব, দিনমজুর এই পর্যন্ত সরকারি কোন খাদ্য সহায়তা পায়নি। যে খাদ্য সামগ্রী পেয়েছেন, সেগুলো স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত খাদ্য সহায়তা। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের কোন অসচ্ছল মানুষ সরকারি ত্রাণসামগ্রী পায়নি। রবিবার বিকালে দেবিদ্বার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এই ধরনের অভিযোগ করলে তিনি জানান উপজেলার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ১৩০ জনের বেশি মানুষকে সরকারি খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি অভিযোগগুলো শুনে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল জব্বর মেম্বারের কাছে পাঠান।

অভিযোগে রাকিব বিন কুদ্দুস আরও জানান, উপজেলা থেকে ছেপাড়া যাওয়ার পথে গুনাইঘর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের অস্থায়ী কার্যালয়ে খাদ্য সহায়তা ছাড়াও মসজিদে অর্থ বরাদ্দের তালিকায় না থাকার বিষয়ে কথা বলতে যাই। চেয়ারম্যানকে জানাই- উপজেলায় মসজিদের তালিকায় আমাদের গ্রামের মরজিদের নাম নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেছেন- আপনার মাধ্যমে একটি আবেদন করার জন্য। কীভাবে করব- আপনি আমাকে একটু বলেন। এরমধ্যে মেম্বার আবদুর জব্বর চেয়ারম্যানকে কল দেন। বলেন, কুদ্দুস ভাইয়ের ছেলে রাকিব উপজেলায় গিয়ে ইউএনও-এর কাছে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এরপর ইউএনও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ত্রাণের বিষয়ে কৈফিয়ত চেয়েছেন। তারপর কথা শেষ করেই চেয়ারম্যান আমাকে চোর বলে আমার উপর হামলা করেন। এক পর্যায়ে কিল, ঘুষি ও থাপ্পর মারার পর লাঠিসোটা দিয়ে হাতে, পিঠে, পায়ে আঘাত করে জখম ও লাঞ্ছিত করেন।

ত্রাণ সহায়তার অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার আবদুর জব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তায় কোন অসচ্ছল বাদ পড়েনি। নির্বাহী কর্মকর্তা আমার কাছে সরকারি ত্রাণ সহায়তা বিতরণের বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। আমি ইউএনও’কে বলেছি- আমার ছেপাড়া ২নং ওয়ার্ডে চার ধাপে অসচ্ছল ও গরিবদের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। হয়তো ভুলক্রমে দুই/তিন জন বাদ পড়তে পারে। তাদেরও দেয়ার ব্যবস্থা করব।

অসচ্ছদের খাদ্য সহায়তা এবং তালিকা থেকে মসজিদের নাম বাদ বিষয়ে অভিযোগ করলে যুবককে মারধরের বিষয়ে জানাতে চাইলে অভিযুক্ত গুনাইঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, আমার অফিসের সামনে এসে মিথ্যা অভিযোগ করায় মেম্বারের লোকজন ওই যুবককে মারধর করেছে শুনেছি। তখন আমি আমার অফিসের ভেতরে ছিলাম। আমার ছেলেরা ওই সময় কে কোথায় ছিল- সেটা আমি জানি না।

এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসানের মোবাইলে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :