গরিবের বন্ধু লিটন মৃধার নীরব জনসেবা

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২০, ১৬:৩৭

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের চতুল গ্রামের বাসিন্দা লিটন মৃধা একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। এরপর থেকেই দীর্ঘদিন জড়িত রাজনীতির সাথে। বর্তমানে ফরিদপুর জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া জেলা যুবলীগের সদস্য ও বোয়ালমারী উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ এ বিপর্যস্ত অসহায় মানুষের দুর্দশা লাঘবে তার গৃহিত পদক্ষেপ ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই তিনি সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তবে তার এই মহৎ সেবার ব্যতিক্রমী দিকটি হলো তিনি এসবই করছেন নীরবে-নিভৃতে।

এলাকার মানুষ বলছে, দিন কিংবা রাত যখনই সময় পাচ্ছেন লিটন মৃধা খোঁজ নিচ্ছেন গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের। এতে করে অসংখ্য অসহায় মানুষের মুখে কষ্ট লাঘব হচ্ছে। পরিবার নিয়ে খেয়েপুরে বেঁচে থাকতে পারছেন তারা।

বোয়ালমারী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সবুর মোল্যা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে তিনি যেভাবে দাঁড়িয়েছেন- তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি নিজে একা একা বাড়ি বাড়ি ঘুরে অসহায় মানুষের খোঁজ নিয়েছেন। জানতে চেয়েছেন তারা খেতে পারছেন কিনা? তাদের বাড়িতে খাবার রয়েছে কিনা।

তিনি বলেন, অনেকের বাড়িতে হয়তো সামান্য চাল ছিল; কিন্তু টাকার অভাবে আনুষঙ্গিক তেল-নুন কিনতে পারছিলেন না, লিটন মৃধা তাদের নগদ টাকা দিয়েও সহায়তা করেছেন।

পৌর কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, বোয়ালমারী উপজেলার অসহায় হতদরিদ্র অবহেলিত মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন লিটন মৃধা। কারো আর্থিক সমস্যা, কারো মেয়ের বিয়ে খরচ, কারো ছেলের পড়ার খরচ, কারো ঘরে খাবার নেই; যখনই জানতে পেরেছেন- সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে নীরবে করে যাচ্ছেন মানবসেবা।

তিনি বলেন, লিটন মৃধাকে পাশে পেয়ে এলাকার গরিব মানুষগুলো যেনো নিরাশার মাঝে আশার আলো খুঁজে পেয়েছে। বিশেষ করে আকস্মিকভাবে কর্মহীন হওয়া মানুষগুলোর যখন একটু ত্রাণের আশায় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে হতাশ হয়ে ফিরছিল- তখন তাদের ভরসারস্থল হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শেখ রাজিব বলেন, অসহায় পরিবারেই শুধু নয়, লিটন মৃধা এলাকার ছাত্র-যুবা সকলের কাছেই যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। জানতে চেয়েছেন তাদের খবরাখবর। তিনি নিয়মিতভাবে আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং সবসময় অসহায় মানুষের খোঁজখবর রাখার জন্য আমাদের উদ্বুদ্ধ করেন।

রাজিব শেখ বলেন, নীরব পরোপকারী আর প্রচারবিমুখ ব্যক্তি তিনি। একজন প্রশস্ত হৃদয়ের পুরুষ। তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী পুরোদস্তুর একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। অসহায় দরিদ্র মানুষের প্রতি দরদবোধ ও ত্যাগ তার জীবনের এক বড় দিক।

কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষিতে অসহায় মানুষের প্রতি তার এই কর্মকান্ডের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে লিটন মৃধা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা স্বচক্ষে দেখে নিজেকে অসহায় মানুসের জন্য নিবেদিন করে রেখেছি। দীর্ঘদিনই তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, এই মহামারিতে মানুষ সাময়িক সময়ের জন্য অভাব অনটনে পড়েছে। তাই বিনীত অনুরোধ করছি- জনপ্রতিনিধিদের কাছে তারা যেনো সরকারি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে নয়-ছয় না করেন। দয়া করে অসহায় মানুষকে ত্রাণ দেয়ার ছবি তুলে ফেসবুকে ছাড়বেন না। গরিব হলেও তাদের সম্মান রয়েছে। তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ফেসবুকে ছবি দিয়ে সম্মানহানি করবেন না।

জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস আর তারাই ভোটের মালিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ভোটে আজকে যারা জনপ্রতিনিধি তারা প্রকৃতপক্ষে জনগণের চাকরমাত্র আর এই ভোটাররাই মনিব। এই চাকরদের কোন অধিকার নেই নামে মাত্র ত্রাণসামগ্রী দিয়ে মনিবের ছবি তুলে সম্মানহানি করার।

তিনি বলেন, ধর্মের নির্দেশ হচ্ছে মানুষকে ডান হাত দিয়ে কিছু দিলে বাম হাত যেনো না জানে। আমি সেভাবেই তাদের সহযোগিতার চেষ্টা করেছি।

(ঢাকাটাইমস/২৬মে/এলএ)