মাদারীপুর সদর থানায় নিয়ম ভেঙে প্রীতিভোজ

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২০, ২২:৫৫ | আপডেট: ২৬ মে ২০২০, ২২:৫৬

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব দিন দিন বাড়তে থাকলেও নিয়ত-নীতি তোয়াক্কা না করে মাদারীপুর সদর থানায় হয়ে গেল প্রীতিভোজের আয়োজন। আয়োজনে অংশ নিয়েছেন খোদ জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। শুধু তাই নয়, প্রীতিভোজে অংশ নিয়েছেন জেলার রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীরাও। ঈদের দিন-দুপুর একটার দিকে সদর থানার সামনে লাল-নীল রঙের কাপড় মোড়ানো প্যান্ডেলে বসেছিল প্রীতিভোজের আসর। বিষয়টি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ বিভাগে এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, গত ১৫ মে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ঈদুল ফিতর উদযাপন সংক্রান্ত একটি সভা হয়। সভায় মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার শাজাহান খানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় করোনা প্রতিরোধকল্পে নানা পদক্ষেপের হাতে নেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ঈদে কোন ধরনের বেড়ানো ও অনুষ্ঠানদি আয়োজন করা যাবে না। অথচ সেই পদক্ষেপ যেন আমলেই নেয়নি মাদারীপুর সদর থানা পুলিশ। ঈদের দিন দুপুর ১টার দিকে সদর থানার সামনে প্যান্ডেল বসিয়ে শতাধিক লোকের অংশগ্রহণের হয়ে যায় প্রীতিভোজ। যেখানে গায়ে গায়ে লাগুয়া হয়ে প্রীতিভোজে অংশ নেন রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

প্রীতিভোজের সামনের সারিতে বসেছিলেন- পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নানসহ পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা। বিষয়টি মাদারীপুর জেলা পুলিশ-এর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। সচেতন ব্যক্তিরা মনে করছেন, পুলিশের হাই কমান্ড থেকে অনুষ্ঠান আয়োজন নিষেধ করলেও মাদারীপুর জেলা পুলিশ বিষয়টি আমলেই নেয়নি।

এ ব্যাপারে টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, ‘সরকারি পর্যায়ে করোনাভাইরাস রোধকল্পে যেসব নিয়ন-নীতি নির্ধারণ করেছেন, সেটা ব্যক্তি হোক বা প্রতিষ্ঠান হোক তাদের মান্য করা উচিত। যদি কেউ নিয়ম না মেনে অনুষ্ঠান করে সেটা অবশ্যই নিয়ন ভঙ্গের শামিল। তাদেরও আইনের আওতায় আসা উচিত।’

প্রীতিভোজ আয়োজনের বিষয় মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি কামরুল হাসান মিঞা বলেন, ‘ঈদের দিন আমাদের সকল সদস্যদের নিয়ে প্রীতিভোজের আয়োজন করি। সেখানে কয়েকজন ব্যক্তি আমাদের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিল, তাদেরও আমরা প্রীতিভোজের অংশগ্রহণ করিয়েছি। এটা নিয়ে আমি আর কোন কথা বলতে চাই না।’

তবে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি। তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসানকে হোয়্যাটআপে অনুষ্ঠানের বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘জি, এর দায়ভার জেলা পুলিশ সুপারের’।

(ঢাকাটাইমস/২৬মে/এলএ)