অবসর নিতে দেরি করার কারণ জানালেন মাশরাফি

প্রকাশ | ২৮ মে ২০২০, ১০:৫০

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মাশরাফি বিন মর্তুজার অধিনায়কত্বে অনেক বড় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। ২০০১ সালে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করা মাশরাফি ২০০৯ সালের জুলাইয়ের পর থেকে আর টেস্ট ফরম্যাটে মাঠে নামেননি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। গুঞ্জন উঠেছিল ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলে ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দেবেন মাশরাফি। মাশরাফিও তাই চেয়েছিলেন। কিন্তু যেকোনো কারণে হয়ে ‍ওঠেনি।

তখনকার সময়ের ঘটনাবলী মাশরাফি জানিয়েছেন বিখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সেশনে। বুধবার প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, সর্বমহল থেকেই আসা অদৃশ্য চাপের কারণে সৃষ্ট জেদ থেকে নিজের অবসর ভাবনা পিছিয়েছেন কি না মাশরাফি। জবাবে পুরো বিষয়টি খোলাসা করেছেন তিনি।

মাশরাফি উত্তর বলেন, ‘দেখেন আমার অবসরের ঘটনা আগেও একটা ঘটেছে, টি-টোয়েন্টিতে। আপনাদের (মিডিয়া) সামনে এসে আমি কারও কথা বলিনি। তখন তো সবকিছু আমার পক্ষেই ছিলো, তাও আমি কিছু বলিনি। এখন তো কিছুই আমার পক্ষে নেই, তাই এতকিছু বলার নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘তবে একটা কথা বলবো, বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে আমি অবসর নিতে চেয়েছিলাম। হ্যাঁ! চেয়েছিলাম। এটা যদি কেউ অস্বীকার করতে পারে, এমনকি ক্রিকেট বোর্ডের কেউও অস্বীকার করতে পারে, তাহলে আমার সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে হবে, আলাদা নয়। একসঙ্গে বসে কথা বলতে হবে।’

মাশরাফি বলেন, ‘আমি শেষ ম্যাচেই করতে চেয়েছিলাম। তখন এমন একটা কথা এসেছিল যে, এভাবে না হোক, সুন্দরভাবে হোক (অবসর)। দেশে আসার পর যেটা হয়েছে, জিম্বাবুয়েকে কত টাকা (২ কোটি) খরচ করে একটা ম্যাচ আয়োজন করা, তখন আমার মনে হয়েছে, মাশরাফি হয়তো মাঠ থেকে অবসর নেয়া ডিজার্ভ করে। কিন্তু একটা ম্যাচের জন্য ২ কোটি টাকা মাশরাফি ডিজার্ভ করে না। যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের এই অবস্থা, সেখানে একটা ম্যাচের জন্য এত টাকা তার প্রাপ্য নয়। তাই আমি তখন অবসর নেইনি। এরপর হয়তো আস্তে আস্তে চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি অবসর নিতে চাইনি বা নেব না…এমনটা যদি কেউ দাবি করে তাহলে সামনাসামনি বসতে হবে। আর ওই সময় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রস্তাব কেন নেইনি সেটাও বললাম। যেখানে আমার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের মনে কষ্ট আছে, সেখানে আমার একটা ম্যাচের জন্য ২ কোটি টাকা খরচ করাটা ভালো মনে হচ্ছিল না।’

মাশরাফি বলেন, ‘একইভাবে আমার কাছে মনে হচ্ছিল, এই ২ কোটি টাকা আমার ওপর ভারী হয়ে যাচ্ছে কি না। এতই ব্যস্ততা যে, দুই কোটি টাকা দিয়ে আমাকে অবসর নেয়াতে হবে। তো এসব জিনিসও আমার মাথায় এসেছে। আপনি যেটা বললেন, জেদ বিষয়টা ঠিক না। তবে এসব জিনিস মাথায় কাজ করেছে। আর আমাকে যে মাঠ থেকেই অবসর নিতে হবে, এমন কোন প্রয়োজনীয়তাও দেখছি না।’

ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে কখনও অসম্মান হয়নি জানিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘বোর্ডের সঙ্গে যেটা হয়েছে আসলে ভুল বোঝাবুঝি। আপনারা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, আবার বোর্ডেও জিজ্ঞেস করেছেন, মাঝে একটা গ্যাপ চলে এসেছিল। তবে পাপন ভাই (বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন) কিন্তু সবসময় আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, আমার চিন্তার কথা জানতে চেয়েছেন। তাই বলতে পারি বোর্ডের পক্ষ থেকে আমাকে যথেষ্ট সম্মান দেয়া হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/২৮ মে/এসইউএল)